সংখ্যানুপাতের ভিত্তিতে নয়, জনগণ মার্কা দেখে ভোট দিতে চায়: এমরান সালেহ
Published: 3rd, July 2025 GMT
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ (প্রিন্স) বলেছেন, ভোটের সংখ্যানুপাতের ভিত্তিতে সংসদ নির্বাচনের দাবি করছে কোনো কোনো মহল। কিন্তু জনগণ সংখ্যানুপাতের ভিত্তিতে নয়; সরাসরি প্রার্থী, মার্কা ও দল দেখে ভোট দিতে চায়। অপ্রাসঙ্গিক ও অযৌক্তিক দাবি করে রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা তৈরি না করে জাতীয় ঐক্য বজায় রেখে গণতন্ত্রের লক্ষ্যে নির্বাচনের পথে হাঁটার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়মনসিংহ নগরের নতুন বাজারের হরি কিশোর রায় সড়কে বিএনপির কার্যালয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনকালে এমরান সালেহ এ কথাগুলো বলেন। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ৩৬ দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ দেশব্যাপী স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি চলছে। ময়মনসিংহ জেলা ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) আয়োজনে রক্তদানের আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন এমরান সালেহ।
এমরান সালেহ বলেন, ‘ঐক্যের নামে এমন কিছু বিএনপি করতে পরে না, যা এ দেশের গণমানুষের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও রীতিনীতির পরিপন্থী। আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী ১৫ বছরের গণতন্ত্রের লড়াই ও চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও পঙ্গুত্ববরণকারীরা আমাদের জাতীয় বীর। তাদের যথাযথ স্বীকৃতি ও সম্মান দেওয়া রাষ্ট্র ও জনগণের দায়িত্ব। জনগণের রায় নিয়ে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও পঙ্গুত্ববরণকারীসহ বিগত ১৫ বছরের গুম–খুনের শিকার ব্যক্তিরা প্রাপ্য মর্যাদা পাবেন।’
দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বুকে ধারণ করেন। নেতা-কর্মীদেরও সেই আকাঙ্ক্ষা বুকে ধারণ করে পরিবর্তনের মানসিকতা নিয়ে রাজনীতি করতে হবে। জনগণ কষ্ট পায় বা পছন্দ করে না—এমন কাজ থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে।’
জেলা ড্যাবের সভাপতি বদর উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সায়েম মনোয়ারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মুসা শাহিন বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিতে অংশ নেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এমর ন স ল হ ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
রাতে বাড়িতে পুলিশের অভিযান, ভোরে ধানখেতে পাওয়া গেল রক্তাক্ত মরদেহ
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে জমিজমার বিরোধে থানায় করা এক মামলার আসামিকে ধরতে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরে আজ শুক্রবার ভোরে বাড়ির পাশে একটি ধানখেত থেকে তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
মরদেহ উদ্ধার হওয়া ওই ব্যক্তির নাম আবু সাদাদ সায়েম (৫০)। তিনি উপজেলার কৈচাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মাইজপাড়া গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। এলাকায় শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে সংসার চালাতেন তিনি।
পুলিশ ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিহত সাদাদের বাবা মোসলেম উদ্দিনের সঙ্গে তাঁর ছোট ভাই মোজাম্মেল হোসেনের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর জেরে দুই পরিবারের মধ্যে গত শুক্রবার মারামারির ঘটনা ঘটলে প্রতিপক্ষের লোকজন হালুয়াঘাট থানায় আটজনের নামে একটি মামলা করেন। মামলার ১ নম্বর আসামি ছিলেন সাদাদ। গতকাল দিবাগত রাত দুইটার দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হালুয়াঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক মিয়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাঁর বাড়িতে অভিযান চালায়। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সাদাদ পালিয়ে যান। তাঁকে না পেয়ে ফিরে আসে পুলিশ।
এদিকে পুলিশ চলে যাওয়ার পর সাদাদ বাড়িতে ফিরে না আসায় স্বজনেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে আজ ভোরে বাড়ির পাশের একটি ধানখেতে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে পাওয়া যায়। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
সাদাদের বাবা মোসলেম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ছোট ভাই মোজাম্মেল হোসেনের সঙ্গে তাঁর জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। এর জেরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তাঁরা থানায় মামলা করেন। আগামী রোববার দুই ছেলের জামিন নেওয়ার কথা ছিল। তার আগেই তারা (প্রতিপক্ষ) তাঁর ছেলেকে হত্যা করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
সাদাদের ছোট ভাই জসিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘পুলিশের সহযোগিতায় বাদীপক্ষের লোকজন পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করে ধানখেতে ফেলে রেখে যায়। অথচ কোনো আসামি ধরবে না বলে পুলিশ আমাদের কাছ থেকে টাকাও নিয়েছিল। আমরা আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।’
এ ঘটনার পর দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। হালুয়াঘাট থানার এসআই মানিক মিয়া মুঠোফোনে বলেন, ‘গতকাল রাতে মামলার আসামিকে ধরতে গেলে আমরা পাইনি। ওই সময় হয়তো আমাদের উপস্থিতি দেখে পালিয়েছিল। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা কোনোভাবেই সত্য নয়।’
হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিহত সাদাদের শরীরে জখম, ছিলে যাওয়া ও কামড়ের মতো আঘাত আছে। তবে গুরুতর কোনো আঘাত তাঁরা দেখতে পাননি। মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তিনি বলেন, পুলিশ তাঁর বাবাকে সঙ্গে নিয়ে আসামি ধরতে যায়। ঘরে না পাওয়ায় পুলিশ চলে আসে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তাঁরা প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেবেন।