Samakal:
2025-11-02@11:46:18 GMT

নীলার দাফন শেষে এলো নীহার লাশ

Published: 13th, July 2025 GMT

নীলার দাফন শেষে এলো নীহার লাশ

‘আজ দুপুরে গ্রামের গোরস্তানে বড় মেয়েকে দাফন করলাম। ছোট মেয়েকে দাফন করলাম বিকেলে। এমন দুর্ভাগ্য যেন আর কারও না হয়, এই দোয়া করি।’ শনিবার সন্ধ্যায় কথাগুলো যখন বলছিলেন আবদুর রহমান, তাঁর শরীরে যেন কোনো শক্তিই আর অবশিষ্ট নেই। দুই মেয়ে হারানোর শোকে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছেন, তার চেয়েও বেশি যেন তাঁকে পোড়াচ্ছে অনুশোচনায়। 

শুক্রবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদি ইউনিয়নের দক্ষিণ চরটেকি এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের বেড়িবাঁধে সপরিবারে বেড়াতে গিয়েছিলেন আবদুর রহমান। একটি নৌকায় তারা মাঝনদীতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্রোতের টানে উল্টে যায় সেটি। আশপাশের কয়েকটি নৌকা তাঁকে ও তাঁর স্ত্রী নীপা আক্তারকে (৪০) উদ্ধার করে। সাঁতার না জানা দুই মেয়ে কাশ্মীরা রহমান নীলা (১৭) ও ফারিয়া রহমান নীহা (৯) মুহূর্তেই তলিয়ে যায়।

খোঁজাখুঁজির পর বড় মেয়ে নীলার লাশ উদ্ধার করা হয় সেদিন বিকেলেই। গতকাল শনিবার ১২টার দিকে নীহার মরদেহ পাওয়া যায় নদে ভাসমান অবস্থায়। শুক্রবার রাতেই কিশোরগঞ্জ সদরের চৌদ্দশত ইউনিয়নের জালুয়াপাড়া গ্রামের বাড়িতে আনা হয় নীলার লাশ। সে গুরুদয়াল সরকারি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষে পড়ত। শনিবার জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে দাফন হয় নীলার মরদেহ। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়িতে আনা হয় তার ছোট বোন নীহার মরদেহ।

এ সময় দুই সন্তান হারিয়ে রহমান-নীপা দম্পতিকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাননি স্বজন ও প্রতিবেশীরা। বিলাপ করতে করতে বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মা নীপা আক্তার। বাবা আবদুর রহমান কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘মেয়ে দুটি সারাক্ষণ আনন্দে সংসার ভরিয়ে রাখত। আশা ছিল, পড়ালেখা করে অনেক বড় হবে। আমরা সমাজে মর্যাদা নিয়ে বাঁচব। তা আর হলো না। আমাদের একেবারে খালি করে চলে গেল। এই শূন্যতা কীভাবে ভুলব?’

চৌদ্দশত ইউপি চেয়ারম্যান মো.

আতাহার আলী জানান, আবদুর রহমান পাশের পুলেরঘাট বাজারে ভাঙারির ব্যবসা করেন। তাঁর দুটি মেয়েই ছিল। এখন পুরো পরিবারটি ফাঁকা হয়ে গেল। এ ঘটনায় পুরো এলাকা যেন শোকে স্তব্ধ।

এদিকে গত ১ জুলাই সকালে নৌকায় করে মাদ্রাসা যাওয়ার পথে পাকুন্দিয়ার চরফরাদি ইউনিয়নের চরআলগি গ্রামের জুবায়ের (৭), শাপলা (১৪) ও শাপলার ভাতিজা আবির (৬) ব্রহ্মপুত্রে নৌকা ডুবে মারা যায়। একই নদীতে ১০ দিনের মাথায় আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটে। শুক্রবার রাতে ইউএনও মো. বিল্লাল হোসেন এক ভিডিও বার্তায় ব্রহ্মপুত্রের দক্ষিণ চরটেকি বেড়িবাঁধে ভ্রমণ বন্ধ ঘোষণা করেন। নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে ভ্রমণের অনুমতি দেবেন না। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ আবদ র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফিরিয়ে দাও’ থেকে ‘ধূসর সময়’: সিডনিতে একই মঞ্চে মাইলস ও আর্টসেল

সিডনির বসন্তের সন্ধ্যা। লিভারপুলের হুইটল্যাম লেজার সেন্টারের বাইরে তখন লম্বা লাইন—হাতে পতাকা, কাঁধে ব্যাগ, চোখে প্রত্যাশা। সাউন্ডচেকের শব্দ ভেসে আসছে বাইরে। ভেতরে যেন উন্মুখ এক ‘সাগর’, যেখানে মিশে আছে দুই প্রজন্মের মুখ, কণ্ঠ আর স্মৃতি। শনিবার রাতটি হয়ে উঠেছিল প্রবাসী বাঙালিদের জন্য এক ব্যতিক্রমী উৎসব—বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের দুই যুগের দুই প্রতীক, মাইলস ও আর্টসেল; প্রথমবারের মতো একই মঞ্চে গান করল সিডনিতে।
‘গ্রিনফিল্ড এন্টারটেইনমেন্ট’ আয়োজিত এই ‘মিউজিক ফেস্ট’ ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছিল, তা যেন উপচে পড়ল সেই রাতে। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পরপরই সব শেষ। অনুষ্ঠান শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিম উপশহর লিভারপুলের রাস্তাগুলো ভরে গেল গানের ভক্তে।

আয়োজনের আগে ভিডিও বার্তায় মাইলস জানায় তাদের উচ্ছ্বাস। ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য হামিন আহমেদ বলেন, ‘সিডনি বরাবরই আমাদের কাছে বিশেষ কিছু। সম্ভবত ১৯৯৬ সালে আমরাই প্রথম বাংলাদেশি ব্যান্ড হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় পারফর্ম করি। এরপর এ নিয়ে অন্তত পঞ্চমবারের মতো সিডনিতে এলাম। এখানকার দর্শকদের ভালোবাসা সব সময়ই অবিশ্বাস্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতাম এটি স্মরণীয় একটি আয়োজন হতে যাচ্ছে। আমরা চেয়েছি সবাই একসঙ্গে গাইবে, চিৎকার করবে—ভক্তরা সেটাই করেছেন।’ গিটারিস্ট তুজো যোগ করেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি শহরে ট্যুর করছি, কিন্তু সিডনির আবহ একেবারেই আলাদা। দর্শকেরা আমাদের রাতটিকে স্মরণীয় করে দিয়েছেন।’

মঞ্চে আর্টসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ