শহীদ মিনারে ‘জুলাই’-এর গান, সঙ্গে মিউজিক্যাল ড্রোন শো
Published: 13th, July 2025 GMT
আসছে ১৪ জুলাই জাতীয় শহীদ মিনার চত্বর পরিণত হতে যাচ্ছে স্মৃতি, সংগীত আর আকাশজোড়া আলোর এক বিস্ময়কর মিছিলে। জুলাই মাসজুড়ে চলা গণঅভ্যুত্থানের স্মরণে আয়োজিত নানা আয়োজনের মধ্যে সবচেয়ে ব্যতিক্রমী সন্ধ্যাটি হতে যাচ্ছে এই দিনেই।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশেষ এই অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হতে যাওয়া এ আয়োজনের নাম– ‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম’।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে আয়োজনটি; যা পরিবেশন করবে শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সায়ান। এরপর তিনি গাইবেন ‘আমিই বাংলাদেশ’, ‘জয় বাংলার’, ‘হুশিয়ারি’, ‘তাজ্জব বনে যাই’, ‘আমার নাম প্যালেস্টাইন’সহ আন্দোলনের উন্মাদনায় দোলা দেওয়া একাধিক গান।
পরবর্তী পর্বে দেখানো হবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্মিত তথ্যচিত্র। পরপর প্রদর্শিত হবে ‘দীপক কুমার গোস্বামী স্পিকিং’ এবং ‘জুলাই বিষাদ সিন্ধু’ নামে দুটি চলচ্চিত্র। রাত সাড়ে ৭টায় মঞ্চে আসবেন জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী পাঁচজন ব্যক্তি ও শহীদ পরিবারের তিনজন সদস্য। তারা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও স্মৃতিচারণ করবেন।
এরপর শুরু হবে ব্যান্ড পারফরম্যান্সের অংশ। প্রথমে ইলা লা লা পরিবেশন করবে–‘সংগতি’, ‘অচিরজীবীর প্রার্থনা’, ‘বাঘের গান’ এবং ‘নীল নির্বাসন’। তারপর স্লোগান গার্লদের মঞ্চ মাতানোর পর এফ মাইনর গাইবে ‘আলো আসবেই’, ‘মুক্তি’, ‘ডাহুক’ এবং ‘মেয়ে’। তারপর মঞ্চে আসবেন পারসা মাহজাবীন। তাঁর কণ্ঠে শোনা যাবে ‘চলো ভুলে যাই’, ‘মুক্তির মন্দির’ এবং ‘মোরা ঝঞ্ঝার মত উদ্দাম’।
সবশেষে এলিটা করিম মঞ্চে উঠে পরিবেশন করবেন– ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা’, ‘পলাশীর প্রান্তর’, ‘ঘুরে দাঁড়াও’ ও ‘বাংলাদেশ’।
তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ আয়োজন অপেক্ষা করছে রাত ১০টায়। হবে বিশেষ মিউজিক্যাল ড্রোন শো। বাংলাদেশ সরকার ও চীন সরকারের যৌথ অংশগ্রহণে ২ হাজার ড্রোন একযোগে আকাশে তুলে ধরবে জুলাই আন্দোলনের কাহিনি। ড্রোন শো’র প্রথম ধাপে উঠে আসবে কীভাবে বাংলাদেশ এই জুলাই আন্দোলনের ধারায় প্রবেশ করল, আর দ্বিতীয় ধাপে ফুটে উঠবে ১৪ জুলাইয়ের সেই প্রাণবন্ত গণঅভ্যুত্থানের মুহূর্ত– যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলের মেয়েরা স্রোতের মতো নেমে এসেছিল রাজপথে।
শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত। বলা যায় শুধু এক সন্ধ্যা নয়– একটি ইতিহাসের শরীর স্পর্শ করার এক বিরল উপলক্ষ হতে চলেছে এই আয়োজন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শহ দ ম ন র
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলন কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সিলেট কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ২২ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে নগরের আম্বরখানাস্থ বাসদ কার্যালয় থেকে তাদের আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
বাসদ নেতারা অভিযোগ করেছেন, সকালে নিয়মিত পাঠচক্র চলাকালে হঠাৎ পুলিশ কার্যালয় ঘেরাও করে নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা দিল শিবির
বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে এগিয়ে নিতে সিকৃবি উপাচার্যের অঙ্গীকার
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আজ (শনিবার) ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা নগরে কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করেছিল। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে অভিযোগের সত্যতা মিললে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। গ্রেপ্তারদের নাম পরবর্তীতে জানানো হবে।’’
বাসদের সিলেট জেলা সভাপতি আবু জাফর বলেন, ‘‘ব্যাটারিচালিত রিকশার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ (শনিবার) চৌহাট্টা থেকে আমাদের পূর্বঘোষিত ‘ভুখা মিছিল’ কর্মসূচি ছিল। কিন্তু শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতে পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর আমরা কর্মসূচি স্থগিত করি। তবে সব শ্রমিককে তা জানানো সম্ভব হয়নি। সকালে শহীদ মিনার এলাকায় কয়েকজন শ্রমিক জড়ো হন। কিন্তু কার্যালয়ে শুধু পাঠচক্র চলছিল। সেখানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২২ নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে গেছে।’’
এর আগে একই ইস্যুতে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মধ্যরাতে নগরের আখালিয়া কালীবাড়ী এলাকার বাসা থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমনকেও আটক করে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকরা। ওই সময় আনোয়ার হোসেন সুমনসহ কয়েকজন বামঘরানার রাজনীতিকও আন্দোলনে অংশ নেন। আন্দোলনকারীরা ব্যাটারি রিকশা চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরে তা মেনে নিতে রবিবার (২ নভেম্বর) পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। সেই আলটিমেটাম শেষ হওয়ার একদিন আগে সিপিবির সুমন ও বাসদের ২২ নেতাকর্মীকে আটক করা হলো।
শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী বলেন, ‘‘ব্যাটারি রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে সংঘাতের আশঙ্কায় রবিবারের কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’
গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সিলেট মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে শতাধিক রিকশা জব্দ ও একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর থেকে নগরে ব্যাটারি রিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঢাকা/নুর/বকুল