সাতক্ষীরার শ্যামনগরে আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে জামায়াতের মানববন্ধন
Published: 2nd, August 2025 GMT
জাতীয় সংসদের সাতক্ষীরা–৩ ও সাতক্ষীরা–৪ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রস্তাবের প্রতিবাদে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী।
আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে শ্যামনগর চৌরাস্তা মোড়ে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শ্যামনগর উপজেলা জামায়াতের আমির আবদুর রহমান।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সাবেক সংসদ সদস্য গাজী নজরুল ইসলাম। এ সময় আরও বক্তব্য দেন উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মইনুদ্দিন মাহমুদ, সেক্রেটারি গোলাম মোস্তফা, সহকারী সেক্রেটারি মাস্টার রেজাউল ইসলাম, প্রভাষক আবদুল হামিদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, আসন পুনর্বিন্যাসের নামে শ্যামনগরবাসীর সঙ্গে চরম অবিচার করা হয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনিকে একত্র করে একটি আসন করার মাধ্যমে উভয় উপজেলার মানুষের দুর্ভোগ বাড়ানো হয়েছে। এই দুই উপজেলা বহু বদ্বীপ ও দুর্যোগপ্রবণ এলাকা নিয়ে গঠিত। মানুষের প্রতিদিনের জীবনযাপন দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে কাটে। ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন এই দুই উপজেলাকে এক আসনে অন্তর্ভুক্ত করা অযৌক্তিক ও জনবিরোধী সিদ্ধান্ত।
মানববন্ধনে দাবি জানানো হয়, শ্যামনগরকে আগের মতো একটি একক আসন হিসেবে অথবা কালীগঞ্জ ও শ্যামনগরকে একত্র করে আলাদা একটি আসন গঠনের। বক্তারা বলেন, জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এই প্রস্তাব অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটি আসন পুনর্বিন্যাস করে গত ৩০ জুলাই প্রাথমিক খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। পুনর্বিন্যাস করার আগে সাতক্ষীরা–৪ আসনটি শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা ও পাশের কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশের আটটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিল। এবার পুনর্বিন্যাস করে শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা ও আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা–৪ আসন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের দাবি, শ্যামনগর ও আশাশুনির মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ নেই। শ্যামনগর থেকে আশাশুনি যেতে হয় কালীগঞ্জ উপজেলা হয়ে অথবা নৌপথে নদী পার হয়ে। অন্যদিকে সাতক্ষীরা–৩ আসনে আগে ছিল আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশ। নতুন প্রস্তাবে কালীগঞ্জের ১২টি ইউনিয়ন ও দেবহাটার পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা–৩ আসন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে আবদুর রহমান বলেন, শ্যামনগর বাংলাদেশের বৃহত্তম উপজেলা। অথচ একে পূর্ণাঙ্গ সংসদীয় আসন না দিয়ে বিভক্ত করা হয়েছে, যা জনগণের রাজনৈতিক অধিকার খর্বের শামিল। তিনি সরকারের এ সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং আগের মতো সাতক্ষীরার পাঁচটি আসন পুনর্বহালের দাবি জানান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল র ১১ট শ য মনগর প রস ত ব
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫