আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থীদের ঐক্যের ভিত্তিতে এই প্যানেল গঠিত হয়েছে। বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর বাইরেও অনেক শিক্ষার্থী এই প্যানেলে প্রার্থী হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল প্রকাশ করা হয়। বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো.

জাবির আহমেদ জুবেল প্যানেল ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেলে শেখ তাসনিম আফরোজকে (ইমি) সহসভাপতি (ভিপি), মেঘমল্লার বসুকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও জাবির আহমেদ জুবেলকে সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

প্যানেলে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে মোজাম্মেল হক, কমনরুম রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে নূজিয়া হাসিন, মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে আকাশ আলী, ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে লিটন ত্রিপুরা, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে নিনাদ খান, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে নাঈম উদ্দীন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ফারিয়া মতিন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে মালিহা তাবাসসুম, সমাজসেবা সম্পাদক পদে আবু মুজাহিদ আকাশ, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে শেখ তাসনিভা সৃষ্টি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ফাতিন ইশরাক, গবেষণা ও প্রকাশনা পদে আলমগীর হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া মো. তাফসিরুল্লাহ, রাজেকুজ্জামান জুয়েল, ওয়াকার রহমান সৌরভ, মোহাম্মদ মুস্তাকিম, মিশকাতুল মাশিয়াত, আতিকা আনজুম, পৃথিং মারমা, ইসরাত জাহান ইমু, আনিয়া ফাহমিন, রাহনুমা আহমেদ, সাজিদ উল ইসলাম ও হেমা চাকমাকে সদস্যপদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলে ১২ জন নারী, তিনজন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ভিপিপ্রার্থী শেখ তাসনিম আফরোজ বলেন, ডাকসু নির্বাচনের শুরুতেই পক্ষপাতমূলক আচরণের নিন্দা জানাচ্ছেন তিনি। ছাত্রদলের সঙ্গে ‘মব’ সৃষ্টি করে যে আচরণ করা হয়েছে, সেটিরও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসে প্রতিরোধের পরিচিত মুখের ব্যক্তিরাই তাঁদের প্যানেলে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি আশা করছেন, শিক্ষার্থীরা তাঁদের পাশে থাকবেন।

জিএস প্রার্থী মেঘমল্লার বসু বলেন, ‘নারী, পুরুষ, আদিবাসী, বাঙালি মিলিয়ে আমাদের প্যানেল করেছি। যাঁরা সবাই বৈচিত্র্যময় বৈশিষ্ট্যের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ধারণ করেন। পাশাপাশি তাঁরা সবাই নিজ নিজ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ। আশা করি, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনে প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেল ব্যাপকভাবে জয়লাভ করবে।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।

ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র‍্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র‍্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।

যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।

আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র‍্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেউ কটুক্তি করলে কী করবেন?
  • বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ‌্যে ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান পছন্দ হয়নি স‌্যামির
  • মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার