ডাকসু নির্বাচনে ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেলে লড়বেন বামপন্থী ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা
Published: 19th, August 2025 GMT
আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থীদের ঐক্যের ভিত্তিতে এই প্যানেল গঠিত হয়েছে। বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর বাইরেও অনেক শিক্ষার্থী এই প্যানেলে প্রার্থী হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল প্রকাশ করা হয়। বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো.
সংবাদ সম্মেলনে ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেলে শেখ তাসনিম আফরোজকে (ইমি) সহসভাপতি (ভিপি), মেঘমল্লার বসুকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও জাবির আহমেদ জুবেলকে সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
প্যানেলে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে মোজাম্মেল হক, কমনরুম রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে নূজিয়া হাসিন, মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে আকাশ আলী, ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে লিটন ত্রিপুরা, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে নিনাদ খান, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে নাঈম উদ্দীন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ফারিয়া মতিন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে মালিহা তাবাসসুম, সমাজসেবা সম্পাদক পদে আবু মুজাহিদ আকাশ, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে শেখ তাসনিভা সৃষ্টি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ফাতিন ইশরাক, গবেষণা ও প্রকাশনা পদে আলমগীর হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া মো. তাফসিরুল্লাহ, রাজেকুজ্জামান জুয়েল, ওয়াকার রহমান সৌরভ, মোহাম্মদ মুস্তাকিম, মিশকাতুল মাশিয়াত, আতিকা আনজুম, পৃথিং মারমা, ইসরাত জাহান ইমু, আনিয়া ফাহমিন, রাহনুমা আহমেদ, সাজিদ উল ইসলাম ও হেমা চাকমাকে সদস্যপদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলে ১২ জন নারী, তিনজন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ভিপিপ্রার্থী শেখ তাসনিম আফরোজ বলেন, ডাকসু নির্বাচনের শুরুতেই পক্ষপাতমূলক আচরণের নিন্দা জানাচ্ছেন তিনি। ছাত্রদলের সঙ্গে ‘মব’ সৃষ্টি করে যে আচরণ করা হয়েছে, সেটিরও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসে প্রতিরোধের পরিচিত মুখের ব্যক্তিরাই তাঁদের প্যানেলে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি আশা করছেন, শিক্ষার্থীরা তাঁদের পাশে থাকবেন।
জিএস প্রার্থী মেঘমল্লার বসু বলেন, ‘নারী, পুরুষ, আদিবাসী, বাঙালি মিলিয়ে আমাদের প্যানেল করেছি। যাঁরা সবাই বৈচিত্র্যময় বৈশিষ্ট্যের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ধারণ করেন। পাশাপাশি তাঁরা সবাই নিজ নিজ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ। আশা করি, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনে প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেল ব্যাপকভাবে জয়লাভ করবে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’