সিলেটে পাথরকাণ্ডে ইউএনও পদে আবারও রদবদল
Published: 19th, August 2025 GMT
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদে আবারও রদবদল হয়েছে। এ উপজেলার ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মোহাম্মদ রবিন মিয়া। তিনি হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের ইউএনও পদে ছিলেন। আজ মঙ্গলবার এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহারকে বদলি করে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় এবং ফেঞ্চুগঞ্জের ইউএনও মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামকে কোম্পানীগঞ্জে নিয়োগ দেওয়ার তথ্য জানা যায়। সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো.
এদিকে গতকাল বিকেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সিলেটের জেলা প্রশাসককে বদলি করা হয়। নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো. সারওয়ার আলম। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (সংযুক্ত) সারওয়ার আলম এই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের একান্ত সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন।
আরও পড়ুনসিলেটে পাথরকাণ্ডে ডিসির পর এবার ইউএনওকে বদলি১৯ ঘণ্টা আগেমোহাম্মদ রবিন মিয়া ৩৬তম বিসিএসের কর্মকর্তা; বর্তমানে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার ইউএনও হিসেবে কর্মরত আছেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের বর্তমান ইউএনও মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। অন্যদিকে কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও ফেঞ্চুগঞ্জের ইউএনওর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
প্রজ্ঞাপনে বদলির কারণ উল্লেখ করা হয়নি। তবে স্থানীয় প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর, সংরক্ষিত বাংকার এলাকা ও ভোলাগঞ্জ কোয়ারি এবং শাহ আরেফিন টিলা এলাকায় পাথর লুটপাট ঠেকাতে না পারায় ইউএনও সমালোচিত হন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি
ঠিকমতো চোখে দেখে না আট বছরের শিশু মরিয়ম। মাদ্রাসা থেকে ঘরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। নানা ঘটনাচক্রে একসময় পৌঁছায় কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর সহায়তায় ঘরে ফিরেছে শিশুটি। ঘরে ফেরার আগে তার ‘লাল পরি’ সাজার ইচ্ছাপূরণও হয়েছে।
শিশু মরিয়মের বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পূর্ব পোকখালী চরপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। গত বুধবার মাদ্রাসা ছুটির পর মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল সে। তবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার সদরে।
ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চোখেমুখে ভয় আর আতঙ্কের ছাপ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল। কৌতূহলী এক পথচারী কথা বলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ওই পথচারী মরিয়মকে নিয়ে যান তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে। সেখান থেকে এক আনসার সদস্য মরিয়মকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী এ সময় শিশু মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে তার বিস্তারিত ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুটি কেবল তার বাড়ি ঈদগাঁওয়ের পোকখালী এতটুকুই বলতে পারছিল। পরে ঈদগাঁওয়ের ইউএনওর মাধ্যমে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়।
কাপড় কিনে দেওয়ার সময় মরিয়ম বলল, সে লাল পরি সেজে বাড়ি ফিরবে। তাকে লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল ওড়না দিয়ে লাল পরি সাজানো হয়। নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, ইউএনও, কক্সবাজার সদর উপজেলাশিশুটি প্রথমে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিনের। তিনি বলেন, আলাপে শিশুটি জানায়, সে তার তিন-চার বছর বয়স পর্যন্ত ভালোভাবেই চোখে দেখত। এরপর থেকে ক্রমে তাঁর চোখের আলো ঝাপসা হতে শুরু করে। এখন সে তেমন দেখতে পায় না। তার বাবা মারা গেছেন। মা ও বড় ভাই অন্ধ। পরিবারে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া একটি বোন আছে, সে–ই কেবল চোখে দেখতে পায়। ঘরের কাজ সব বোনই সামলায়। তাদের পরিবার থাকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।
শিশুটির কাছ থেকে চোখের বিষয়টি জেনে তাকে কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকার কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তার চোখের সমস্যা এত জটিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিমল চৌধুরী তার চোখের পরীক্ষা করেন। এরপর বিনা মূল্যে শিশু মরিয়মকে চশমা ও এক মাসের ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। চশমা চোখে দিয়ে সে জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে।’
শিশুটিকে মায়ের হাতে তুলে দেন কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী