২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানের সময় সরকারি বাহিনী ও সরকারি দলের হামলায় বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে; অনেকে গুরুতর আহত হন। এরপরও কেন তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ থেকে তৃণমূল পর্যন্ত কারও মধ্যে তেমন কোনো অনুশোচনা নেই—এটা বেশ অনেক দিন ধরেই রাজনৈতিক আলোচনায় সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত প্রশ্নগুলোর একটি। তাদের অবস্থান পরিবর্তন না করাতে পারার ক্ষেত্রে অন্যদের ভূমিকা কী, এমন প্রশ্নও এখন সামনে আসছে। আরও প্রশ্ন উঠছে, অনেক আওয়ামী লীগ সমর্থক, যাঁরা অভ্যুত্থানের সময় নিজ দলের বিপক্ষে চলে গিয়েছিলেন, তাঁরা কেন আবার ‘চরম’ অবস্থানে ফিরে গেলেন?

অনেকেই দাবি করেন, আওয়ামী লীগ সমর্থকেরা তাঁদের রাজনৈতিক মতাদর্শকে ধর্মের মতো দেখেন এবং নেতাকে সব ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে মনে করেন; তাই তাঁদের মধ্যে আত্ম-অনুশোচনার বোধ তৈরির চেষ্টা করে লাভ নেই। কিন্তু এই যুক্তি দিয়েই কি সব দায় এড়ানো যাবে? ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, যুদ্ধ, বিপ্লব বা অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে প্রতিপক্ষের মনোভাব বদলাতে কেবল রাজনৈতিক বক্তব্য যথেষ্ট নয়; দরকার হয় মানুষের বিবেক নাড়া দেওয়ার মতো পদক্ষেপ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিজয়ী মিত্রশক্তি পরাজিত জার্মানির সেনাসদস্য ও সাধারণ নাগরিকদের সামনে নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে নির্যাতনের ভয়াবহ ভিডিও চিত্র দেখিয়েছিল। ‘ডেথ মিলস’ বা ‘জার্মান কনসেনট্রেশন ক্যাম্প ফ্যাকটুয়াল সার্ভে’ নামের এসব ফুটেজ মানুষকে তাদের অতীত কর্মকাণ্ডের মুখোমুখি দাঁড় করায়। ভিডিও চলাকালে অনেককে দেখা গেছে মাথা নিচু করে, চোখে পানি নিয়ে বসে থাকতে।

অনেকেই হয়তো এমনটা বলবেন, জার্মানির এই উদাহরণ দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ার ফল, যা বাংলাদেশের গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটের সঙ্গে পুরোপুরি মেলে না। এটা হয়তো ঠিক। কিন্তু একটা বিষয় স্পষ্ট, প্রতিপক্ষের মানসিকতা বদলাতে হলে শুধু রাজনৈতিক বিজয় যথেষ্ট নয়; দরকার হয় নতুন সাংস্কৃতিক ভিত্তি গড়ে তোলা।

আমাদের ক্ষেত্রে সেটি প্রথম থেকেই হওয়া উচিত ছিল; গণ-অভ্যুত্থানের ওপর ভিত্তি করে সৃজনশীল উদ্যোগের মাধ্যমে এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে তোলা, যা প্রতিপক্ষকে ধীরে ধীরে মানবিক উপলব্ধির দিকে নিয়ে আসবে। কিন্তু আমরা সেই পথ নিতে পারিনি, বরং শহীদ ও আহতদের প্রত্যাশা ভঙ্গ করে ক্ষমতার ভাগ-বাঁটোয়ারার হিসাব-নিকাশেই ব্যস্ত থেকেছি।

জুলাই অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের উপর অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছিল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক

এছাড়াও পড়ুন:

রাজকীয় ভোজে ট্রাম্প–মেলানিয়াকে কী কী খাওয়ালেন রাজা চার্লস

জমকালো সাজে সেজেছে যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল। উপলক্ষটাও অনন্য, রাজকীয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সস্ত্রীক যুক্তরাজ্য সফর উপলক্ষে এখানে রাজকীয় নৈশ্যভোজ আয়োজন করেন রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা।

বুধবার রাতের রাজকীয় এ আয়োজনে কূটনীতি, খাবার, ঐতিহ্য, সংগীত আর আভিজাত্য একসুতোয় বাঁধা পড়েছিল। ট্রাম্প–মেলানিয়াসহ রাজার অতিথি হয়েছিলেন বিশ্বের ১৬০ জন গণমান্য ব্যক্তি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্মানে রাজা তৃতীয় চার্লসের আয়োজন করা রাজকীয় ভোজের টেবিল। যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ