২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আসামিদের খালাসের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের ওপর শুনানি অব্যাহত রয়েছে। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ আগামীকাল বুধবার শুনানির পরবর্তী দিন রেখেছেন।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের রায় বাতিল ও বিচারিক আদালতের দণ্ডাদেশের রায় বহালের আরজি জানিয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য উপস্থাপনের পর আসামিপক্ষের আইনজীবী শুনানি শুরু করেন। এর আগে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) থেকে রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে গত ১৭ জুলাই আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়।

দুই দশক আগে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা পৃথক মামলায় (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজার রায় বাতিল করে গত বছরের ১ ডিসেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। ফলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিরা খালাস পান। পৃথক দুটি মামলার (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। শুনানি নিয়ে গত ১ জুন লিভ টু আপিল (বিস্ফোরক মামলায়) মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। এর ধারাবাহিকতায় আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এই আপিলের ওপর আজ তৃতীয় দিনের মতো শুনানি হয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্যাহ আল মাহমুদ শুনানি করেন, তাঁর সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবু সাদাত মো.

সায়েম ভূঞা ও সাদিয়া আফরিন। আজ শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের রায় বাতিল ও বিচারিক আদালতের দণ্ডাদেশের রায় বহালের আরজি জানায়। রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য উপস্থাপনের পর আসামিপক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান শুনানি শুরু করেন। আদালতে আসামিপক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও মোহিনুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সকাল ১০টা থেকে মাঝে বিরতি দিয়ে বেলা সোয়া ১টা পর্যন্ত শুনানি চলে।

পরে আসামিপক্ষের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, একটি মামলায় সাক্ষী নিয়ে ওই সাক্ষীটা আরেকটা মামলাতে হুবহু (কার্বন কপি করে) তুলে দিয়েছে, যা আজকে আদালতে দেখিয়েছেন। এটা বিচারের নামে প্রহসন, যা হতে পারে না। আগামীকাল আবার শুনানি হবে।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। এতে ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলটির শতাধিক নেতা-কর্মী।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ষ ট রপক ষ র আইনজ ব আপ ল র উপস থ রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সেই মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন মিনহাজ মান্নান

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বর্তমান পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমনের আপিল মঞ্জুর করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।

এ রায়ের ফলে ওই মামলা থেকে মিনহাজ মান্নান অব্যাহতি পেলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী মঈন ফিরোজী।

আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ওই মামলায় ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মিনহাজ মান্নান ইমনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। পলাতক অপর চার আসামি হলেন সুইডেনপ্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিল, হাঙ্গেরিপ্রবাসী সামিউল ইসলাম খান ওরফে স্যাম ওরফে জুলকার নাইন, আশিক ইমরান ও ওয়াহিদুন নবী।

দিদারুল ইসলাম ও মিনহাজ মান্নান নারাজি আবেদন দিলে তা নামঞ্জুর হয়। এই আদেশের বিরুদ্ধে মিনহাজ মান্নান একই বছর হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে মিনহাজ মান্নানের ক্ষেত্রে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করেন। শুনানি শেষে আপিল মঞ্জুর করে আজ রায় দেওয়া হয়।

আদালতে মিনহাজ মান্নানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মঈন ফিরোজী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগ তুলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর রমনা থানায় ১১ জনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৫ মে মামলাটি করা হয়। ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। এতে কার্টুনিস্ট কিশোর, লেখক মুশতাক আহমেদ ও রাষ্ট্রচিন্তার দিদারুল ইসলামকে আসামি করা হয় এবং আটজনকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়।

আরও পড়ুন১০ মাস পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন কার্টুনিস্ট কিশোর০৪ মার্চ ২০২১

এ মামলায় কারাবন্দী মুশতাক আহমেদ ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মারা যান। এ কারণে তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ মামলা অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, অভিযোগ গঠনের সময় ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির ছিলেন দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান। তাঁরা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান। সেদিন কার্টুনিস্ট কিশোর আদালতে হাজির না থাকায় তাঁর জামিন বাতিল করা হয়।

আরও পড়ুনআজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত লেখক মুশতাক২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এখন দেখছি নতুন প্রতারকের জন্ম হয়েছে: কায়সার কামাল
  • ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি ডলার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ
  • ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন, এখনো কেন গুলি করছেন’
  • ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা তিন সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশ
  • ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সেই মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন মিনহাজ মান্নান
  • জামিন পেলেন বিএনপি নেতা সাখাওয়াতসহ ৬ জন
  • জামিন পেলেন বিএনপি নেতা সাখাওয়াতসহ ৬ আসামি