রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের ভোটার তালিকা থেকে ছাত্রলীগের নাম বাতিলসহ পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি করেছে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের দলীয় ট্রেন্টের সামনে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা। কর্মসূচি শেষে তারা রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
আরো পড়ুন:
ফলাফল প্রকাশের দাবিতে রাবির আরবি বিভাগে তালা
রাবিতে শিক্ষক নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ
তাদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো- ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ও বিদেশী শিক্ষার্থীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেই রাকসু নির্বাচন করা; রাকসুর ভোটকেন্দ্র একাডেমিক ভবনে অন্তর্ভুক্ত করা; ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করতে হবে; আবাসিক হলে সকল ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের সহবস্থান নিশ্চিত করতে হবে; বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক ও অংশগ্রহণমূলক রাকসু নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় ‘রাকসু ফি দিয়েছি, ভোটার হতে চেয়েছি’, ‘ভোট আমার অধিকার, তুমি কে বাদ দেওয়ার’, ‘ছবি ছাড়া তালিকা, মানি না মানবো না’ ইত্যাদিক স্লোগান দেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
শাখা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিঠু বলেন, “ছাত্রদল জুলাই আন্দোলনের অন্যতম স্টেকহোল্ডার। আপনারা রাকসু নির্বাচন নিয়ে আল-কায়েদার মতো আচরণ করবেন না। যদি করেন, তাহলে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো। ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে হবে, কিন্তু তা এখনো হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আপনাদের বয়কট করবে। অনতিবিলম্বে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণসহ সবাইকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রকাশ করতে হবে।”
সিনিয়র সহ-সভাপতি শাকিলুর রহমান সোহাগ বলেন, “আজ আমরা একটাই দাবিতে দাঁড়িয়েছি—২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা যেন রাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। কারণ, তারা সম্প্রতি জুলাই অভ্যুত্থানে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে। তাই অনতিবিলম্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ভোটার তালিকা ছবিসহ প্রকাশ করতে হবে।”
তিনি বলেন, “যারা নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, তারা যেন কোনোভাবেই এই ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হয়। রাকসু নির্বাচন যেহেতু সবার, তাই এতে অবশ্যই সবার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।”
শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “রাকসু নির্বাচন কমিশনের কিছু শিক্ষক এবং বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি নির্দিষ্ট সংগঠনকে প্রাধান্য দিয়ে রাকসু নির্বাচনকে রুয়ার মতো দখল করার চেষ্টা করছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানপন্থিরা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে রাকসু নির্বাচনের ভোটার তালিকা করেছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ছাড়া রাবি ছাত্রদল রাকসু নির্বাচন যাবে না।”
তিনি আরো বলেন, “ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে প্রশাসন। কারণ ছাত্রদল যদি সিনেট ও রাকসুতে আসলে তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরাই কথা বলবো। আমাদের পাঁচ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাকসুতে যাব না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আগামী ১০দিনের মধ্যে রাকসু নির্বাচনের সঠিক রোডম্যাপ দিতে পারে, তাহলে ছাত্রদল অবশ্যই রাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।”
এসময় শাখা ছাত্রদল ও বিভিন্ন হল ইউনিটের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল বর ষ র শ ক ষ র থ ছ ত রদল র প রক শ
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ