আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে লড়ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৯ মেধাবী শিক্ষার্থী।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী তারা ইতোমধ্যে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েও যাছাই-বাছায়ে টিকেছেন। রাইজিংবিডিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর সভাপতি মাসুদ রানা।

আরো পড়ুন:

আইন উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ 

চবিতে বাগছাসের নেতৃত্বে মুনতাসির-মাশনুন

তিনি জানান, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, শিবগঞ্জ ও ভোলাহাট এই তিনটি উপজেলার নয়জন বাসিন্দা বিভিন্ন পদে নির্বাচনে অংশ নিতে প্রার্থী হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদে সদস্য প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন একজন। এছাড়া ডাকসুর হল সংসদ নির্বাচনে ভিপি পদপ্রার্থী রয়েছেন দুইজন, জিএস পদপ্রার্থী একজন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে একজন, ক্রীড়া সম্পাদক (অভ্যন্তরীণ) পদে একজন, কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী তিনজন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদে সদস্য পদপ্রার্থী হয়েছেন মো.

সামশুদ্দৌজা নবাব। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা ট্রিবিউনের ঢাবি প্রতিনিধি।

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের ভিপি পদপ্রার্থী চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা এলাকার আসিফ রায়হান, তিনি ২০১৮-১৯ সেশনের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী। শামসুন্নাহার হলের ভিপি পদপ্রার্থী চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার বাসিন্দা কুররাতুল আইন কানিজ, তিনি ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী। বিজয় একাত্তর হলের জিএস পদপ্রার্থী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা আসিক বিল্লাহ, তিনি ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী।

হাজী মুহম্মদ মুহসিন হলের সমাজসেবা সম্পাদক পদে লড়ছেন সারোয়ার জাহান, তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরএলাকার রাজারামপুরের বাসিন্দা ও ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী। মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ক্রীড়া সম্পাদক (অভ্যন্তরীণ) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা ও ২০২০-২১ সেশনের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী তাজকিরুল ইসলাম।

এছাড়া বিজয় একাত্তর হলের কার্যনির্বাহী পদে শিবগঞ্জের বাসিন্দা ও ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের সজিব খাঁন, কবি সুফিয়া কামাল হলের কার্যনির্বাহী সদস্য পদে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরএলাকার রাজারামপুরের বাসিন্দা ও ২০২৩-২৪ সেশনের মৎসবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাফিসা সামিহা মায়িশা ও শিবগঞ্জের বাসিন্দা মোসা. সুরাইয়া খাতুন শামসুন্নাহার হলের কার্যনির্বাহী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা দাবি, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান কিংবা নব্বইয়ের এরশাদবিরোধী আন্দোলন প্রতিটি ঐতিহাসিক সংগ্রামে ডাকসু গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দিয়েছে এবং ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতিকে প্রভাবিত করেছে। ডাকসুকে তার এসব ঐতিহাসিক ভূমিকার কারণে বাংলাদেশের ‘দ্বিতীয় সংসদ’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।

প্রায় ৬ বছর পর আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডাকসু নির্বাচন। এমন এক সময়ে এই নির্বাচন হতে যাচ্ছে, যখন শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে একটি রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করা হয়েছে।

হাজী মুহম্মদ মুহসিন হলের সমাজসেবা সম্পাদক পদপ্রার্থী সারোয়ার জাহান বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ডাকসু নির্বাচন পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। প্রার্থীদের উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনী প্রচারণা দেখে ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু গণতন্ত্র চর্চার যে ধারা চালু হয়েছে, সেটা সহজেই অনুমেয়। আমার একই পদে ছয়জন প্রতিদ্বন্দিতা করছি। জয়লাভের বিষয়ে সবটুকু আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা করছি। জয় যারই হোক, ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু রাজনীতির ধারা যেন অব্যহত থাকে।”

ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নয়জন শিক্ষার্থী প্রার্থী হওয়াটা আমাদের জেলার জন্য গর্ব ও আনন্দের বিষয়। দেশের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ এ নির্বাচনে আমাদের শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছে। এটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা, মেধা ও নেতৃত্বের প্রতি আস্থার প্রতিফলন। তাদের এ পদচারণা ভবিষ্যতের জাতীয় নেতৃত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। আমি প্রত্যাশা করি তারা জেলার সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।”

তিনি আরো বলেন, “২০১৯ সালের পর দীর্ঘ ৬ বছর পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এবারের ডাকসু নির্বাচনে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী প্রথমবারের মত ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। নতুন প্রজন্মের ভোটাররা আগ্রহের সঙ্গে অংশগ্রহণ করতে প্রস্তুত। আশা করি, এই নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক চেতনা জাগ্রত করবে এবং সুষ্ঠু ও প্রাণবন্ত নির্বাচন হবে।”

ঢাকা/মেহেদী/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ইনব বগঞ জ সদর প ইনব বগঞ জ র পদপ র র থ সদস য পদ হল র ক র সদস য প উপজ ল র শ বগঞ জ র হল র লড়ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদন

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে নতুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

আরো পড়ুন:

নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা

১৫ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের আগে একটা মানবাধিকার কমিশন ছিল, কিন্তু সেটি কার্যত দন্তহীন একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। নিয়োগ পদ্ধতিতে ত্রুটি, এখতিয়ারে ঘাটতি এবং নেতৃত্বের দুর্বলতায় প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। এবার সেটিকে সত্যিকারের এখতিয়ারসম্পন্ন, ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।”

তিনি জানান, নতুন অধ্যাদেশে মানবাধিকার কমিশনের কাঠামো, এখতিয়ার ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। কমিশন একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সার্বক্ষণিক সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও যোগ্যতা নিশ্চিত করতে আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদন আহ্বান করা হবে এবং প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বাছাই কমিটি সুপারিশ করবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমরা নিয়োগ পদ্ধতিটা এমনভাবে করেছি যাতে অভিজ্ঞ, যোগ্য ও মানবাধিকার রক্ষায় সক্রিয় মানুষরা কমিশনে জায়গা পান।”

তিনি আরো বলেন, “আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ কর্তৃক অনুসমর্থিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি এবং প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত মানবাধিকারগুলোকেও এই কমিশনের এখতিয়ারে আনা হয়েছে। এর ফলে কমিশন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী কাজ করতে পারবে।”

অধ্যাদেশে কমিশনের এখতিয়ার বহুলাংশে বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে শৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাতেও কমিশন তদন্ত করতে পারবে। আইন উপদেষ্টা বলেন, “আগের কমিশনের এখতিয়ারে গুরুতর সীমাবদ্ধতা ছিল, বিশেষ করে শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ক্ষেত্রে। এবার সেই সীমাবদ্ধতা দূর করা হয়েছে।”

এছাড়া, গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা আইনসহ মানবাধিকার সংরক্ষণমূলক যেকোনো আইনের বাস্তবায়নের দায়িত্ব মানবাধিকার কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। আলাদা করে ‘গুম কমিশন’ গঠনের প্রয়োজন হবে না বলে তিনি জানান।

অধ্যাদেশে কমিশনের আদেশ প্রতিপালনকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা বলেন, “এখন থেকে কমিশনের সুপারিশ বা নির্দেশ উপেক্ষা করা যাবে না। এর বাধ্যবাধকতা আইনি কাঠামোয় যুক্ত করা হয়েছে।”

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন। খবর বাসসের।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
  • আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স
  • নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের ৩১ বিভাগকে প্রস্তুতির নির্দেশ ইসির
  • কর্মদিবসের শেষ দিনে প্রধান শিক্ষকের মৃত্যু
  • প্রশিক্ষকদের দায়িত্বে উদাসীনতাসহ যেসব অসংগতি উঠে এল প্রাথমিক তদন্তে
  • চবি ছাত্রদলের ৪২০ জনের কমিটিতে নারী মাত্র ১১
  • চলন্ত গাড়ির নিচে পড়েও অক্ষত অবস্থায় ফিরল ৩ বছরের শিশুটি
  • মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদন