নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের ঘটনায় দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় পুলিশ, মেয়র এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের স্থানীয় অফিসে চিঠি দেওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সরকারি তথ্যবিবরণীতে এ কথা জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান দিবসের প্রথমবার্ষিকী উপলক্ষে গত ২৪ আগস্ট বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্কে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো.

মাহফুজ আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীসহ বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রায় দেড় শতাধিক অতিথি অনুষ্ঠানে অংশ নেন। সার্বিক প্রস্তুতি ও নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের অনুরোধের প্রেক্ষিতে অনুষ্ঠানের আগেই নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ কনস্যুলেটের আশেপাশে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে।

তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়, বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে আয়োজিত মতবিনিময় সভাটি পণ্ড করার উদ্দেশ্যে এবং অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিকে সরাসরি আক্রমণ করার হিংস্র মনোভাব নিয়ে বিকেল ৫টা থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের সামনে অবস্থান নেয়। তারা বাংলাদেশ সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেয় এবং অশ্লীল-অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে তারা আগত আমন্ত্রিত অতিথিদের ধাওয়া করে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে বাধা দেয়। সময়ের সাথে সাথে তারা আরো নানাবিধ অপকৌশল অবলম্বন করে, যার অংশ হিসেবে তারা অতিথিদের উদ্দেশ্যে ডিম নিক্ষেপ করে। অত্যন্ত ন্যাক্কারজনকভাবে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের প্রবেশপথের পার্শ্ববর্তী অন্য একটি অফিসের (একই ভবনের) কাঁচের দরজায় আঘাত করে, যার প্রেক্ষিতে ওই দরজায় ফাটল ধরে। পুলিশ দুষ্কৃতিকারীদের এই ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজে বাধা দেয় এবং কয়েকজনকে আটক করে। দুষ্কৃতিকারীদের ন্যাক্কারজনক এই ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের স্থিরচিত্র ও ভিডিও ফুটেজ প্রমাণ হিসেবে পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে এবং তারা এই ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশ্বস্ত করেছে।

তথ্য বিবরণীতে আরো বলা হয়, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা প্রধান অতিথিকে হেনস্তা করা ও জীবননাশের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকাসহ কনস্যুলেট জেনারেলের চতুর্দিকে মধ্যরাত অবধি অবস্থান করে। তবে পুরো সময় নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্যণীয় ছিল। 

প্রধান অতিথি যথাসময়ে নির্ধারিত পথে নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান। প্রাণবন্ত মতবিনিময়, আগত অতিথিবৃন্দের সাথে কুশল বিনিময় এবং রাতের খাবার শেষে প্রধান অতিথি কোন ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়াই নির্ধারিত গাড়িযোগে তাঁর গন্তব্যে পৌঁছান। প্রধান অতিথি চলে যাওয়ার পরে পুলিশ অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন বলে জানানো হয়। 
এতে বলা হয়, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আগমন কিংবা প্রস্থানের সময় দুষ্কৃতিকারীদের সঙ্গে উপদেষ্টার কোন ধরনের সাক্ষাৎ বা দূরতম কোন সংযোগ কিংবা সংশ্লেষও ঘটেনি। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা শত চেষ্টা সত্ত্বেও তাদের অসাধু উদ্দেশ্য সাধন করতে পারেনি। উদ্দেশ্য সাধনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তারা নানাবিধ অপতথ্য এবং প্রোপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছে। এই ধরনের মিথ্যা তথ্য এবং প্রোপাগাণ্ডায় বিভ্রান্ত না হতে মিশনের পক্ষ থেকে সকলকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

তথ্যসূত্র: বাসস

ঢাকা/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল দ শ কনস য ল ট জ ন র ল কনস য ল ট জ ন র ল র ন উইয়র ক অন ষ ঠ ন উদ দ শ য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সোনার টয়লেট ‘আমেরিকা’ নিলামে উঠছে, সর্বনিম্ন দর কত জানেন

নিলামঘর সদবিস গতকাল শুক্রবার ইতালীয় শিল্পী মরিজিও ক্যাটেলানের তৈরি সম্পূর্ণ সোনার টয়লেটটি নিলামে তোলার কথা ঘোষণা করেছে। এ ভাস্কর্যটির নাম ‘আমেরিকা’।

সদবিস জানিয়েছে, এ শিল্পকর্ম এটাই দেখাতে চায়, কখনো কখনো শিল্পের ‘মূল্য’ আর তার বাজারে বিক্রির ‘মূল্য’ এক নয়। এটি শুধু শিল্পকর্মই নয়, একটি পুরোপুরি ব্যবহারযোগ্য টয়লেটও। এ টয়লেটেরই অনুরূপ একটি সংস্করণ ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ব্লেনহাইম প্রাসাদ থেকে চুরি হয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে।

১৮ নভেম্বর নিউইয়র্কে এ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। টয়লেটটির সর্বনিম্ন দর ধরা হয়েছে এর সোনার বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী। এতে ব্যবহৃত হয়েছে প্রায় ১০১ দশমিক ২ কিলোগ্রাম (২২৩ পাউন্ড) খাঁটি সোনা, যার দাম এখন প্রায় ১০ মিলিয়ন (১ কোটি) মার্কিন ডলার (প্রায় ১২২ কোটি টাকা)।

সদবিসের নিউইয়র্ক শাখার সমসাময়িক শিল্প বিভাগের প্রধান ডেভিড গ্যালপারিন বলেন, ক্যাটেলান হচ্ছেন এমন একজন শিল্পী, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সবাইকে ভাবাতে ও চমক দিতে পছন্দ করেন।

ক্যাটেলান শুধু বিতর্ক সৃষ্টিকারীই নন; বরং অত্যন্ত সফল শিল্পী। তাঁর আরেকটি কাজ, ‘কমেডিয়ান’। অর্থাৎ দেয়ালে টেপ দিয়ে আটকানো একটি কলা। গত বছর নিউইয়র্কের এক নিলামে ৬২ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল শিল্পকর্মটি।

‘আমেরিকা’র দুটি সংস্করণ ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। যেটি এবার নিলামে উঠছে, সেটি ২০১৭ সাল থেকে এক অজ্ঞাত সংগ্রাহকের কাছে রয়েছে। অন্য সংস্করণটি ২০১৬ সালে নিউইয়র্কের গুগেনহাইম জাদুঘরের একটি বাথরুমে প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করা হয়। সেখানে ১ লাখের বেশি দর্শক সার বেঁধে এসেছিলেন।

এর আগে ২০১৬ সালে ক্রিস্টিস নিলামে ক্যাটেলানের আরেকটি ভাস্কর্য ‘হিম’ ১ কোটি ৭২ লাখ ডলারে বিক্রি হয়। ভাস্কর্যটিতে নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারকে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনার ভঙ্গিতে দেখা যায়।

ক্যাটেলান নিজেই বলেছেন, তাঁর ‘আমেরিকা’ ভাস্কর্যটি অতিরিক্ত সম্পদ ও বিলাসিতাকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘তুমি ২০০ ডলারের দুপুরের খাবার খাও বা ২ ডলারের হটডগ, শেষ ফলাফল টয়লেটে গিয়ে একই হয়।’

‘আমেরিকা’র দুটি সংস্করণ ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। যেটি এবার নিলামে উঠছে, সেটি ২০১৭ সাল থেকে এক অজ্ঞাত সংগ্রাহকের কাছে রয়েছে। অন্য সংস্করণটি ২০১৬ সালে নিউইয়র্কের গুগেনহাইম জাদুঘরের একটি বাথরুমে প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করা হয়। সেখানে ১ লাখের বেশি দর্শক সার বেঁধে এসেছিলেন।

মরিজিও ক্যাটেলান হচ্ছেন এমন একজন শিল্পী, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সবাইকে ভাবাতে ও চমক দিতে পছন্দ করেন।ডেভিড গ্যালপারিন, সদবিস-এর নিউইয়র্ক শাখার সমসাময়িক শিল্প বিভাগের প্রধান

ওই সময় গুগেনহাইম ভাস্কর্যটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাঁর প্রথম দফায় ক্ষমতায় থাকাকালে ধার দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কারণ তিনি জাদুঘর থেকে একটি ভ্যান গঘ চিত্রকর্ম ধার নিতে চেয়েছিলেন।

২০১৯ সালে ‘আমেরিকা’ প্রদর্শিত হয় উইনস্টন চার্চিলের জন্মস্থান হিসেবে বিখ্যাত ব্লেনহাইম প্রাসাদে। কিন্তু প্রদর্শনীর কয়েক দিনের মধ্যেই একদল চোর ভবনে ঢুকে সেটি পাইপলাইন থেকে খুলে নিয়ে পালিয়ে যায়।

চলতি বছরের শুরুতে দুই ব্যক্তিকে ওই চুরির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে সোনার টয়লেটটি আজও উদ্ধার করা যায়নি। তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, এটি সম্ভবত ভেঙে গলিয়ে ফেলা হয়েছে।

গ্যালপারিন বলেন, তিনি অনুমান করতে চান না ‘আমেরিকা’ শেষ পর্যন্ত কত দামে বিক্রি হতে পারে। তবে তাঁর ভাষায়, ক্যাটেলানের ‘ডাকটেপে আটকানো কলা’ শিল্পকর্মটি যেমন ‘অমূল্য ধারণা থেকে মূল্য তৈরি করা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, ‘আমেরিকা’ ঠিক তার উল্টো। এখানে মূল উপকরণটিই (সোনা) অত্যন্ত মূল্যবান, যা বেশির ভাগ শিল্পকর্মে থাকে না।

ক্যাটেলান বলেছেন, তাঁর ‘আমেরিকা’ ভাস্কর্যটি অতিরিক্ত সম্পদ ও বিলাসিতাকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘তুমি ২০০ ডলারের দুপুরের খাবার খাও বা ২ ডলারের হটডগ, শেষ ফলাফল টয়লেটে গিয়ে একই হয়।’

‘আমেরিকা’ প্রদর্শিত হবে সদবিসের নতুন নিউইয়র্ক কার্যালয় ব্রয়্যার বিল্ডিংয়ে, ৮ নভেম্বর নিলাম শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত। এটি একটি বাথরুমে স্থাপন করা হবে, যা দর্শকেরা কাছ থেকে দেখতে পাবেন।

তবে গুগেনহাইম ও ব্লেনহাইম প্রাসাদের মতো এবার দর্শকদের টয়লেটটি ব্যবহার করার সুযোগ থাকবে না। তাঁরা শুধু দেখতে পারবেন, কিন্তু ফ্লাশ করতে পারবেন না।

আরও পড়ুনসোনার আস্ত একটি কমোড চুরি করেছিলেন তিনি০৩ এপ্রিল ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মামদানিকে বারাক ওবামার ফোন, করলেন নির্বাচনী প্রচারের প্রশংসা
  • নিউইয়র্কের এত ইহুদি কেন জোহরান মামদানির পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন
  • সোনার টয়লেট ‘আমেরিকা’ নিলামে উঠছে, সর্বনিম্ন দর কত জানেন
  • ভোটের আগে মামদানি-কুমোর এগিয়ে থাকার লড়াই