‘রপ্তানিকারকদের প্রাপ্য অর্থ পরিশোধে উদ্যোগ নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক’
Published: 26th, August 2025 GMT
রপ্তানি আয় (প্রত্যাবসিত রপ্তানি মূল্য) আসলেও সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারকদেরকে সেই অর্থ সময় মতো পরিশোধ করছে সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো। ব্যাংকগুলোকে থেকে রপ্তানিকারকদের প্রাপ্য অর্থ পরিশোধের উদ্যোগ নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) নেতাদের সঙ্গে বৈঠককালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড.
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের নেতৃত্বে তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশ ব্যাংকে গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে গভর্নর ব্যবসায়িদের নানা সমস্যার কথা শুনে রপ্তানিকারকদের প্রাপ্য অর্থ পরিশোধের উদ্যোগের কথা জানান। এ সময় বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম, পরিচালক ফাহিমা আক্তার, পরিচালক এ.বি.এম. সামছুদ্দিন, রিও ডিজাইনের চেয়ারম্যান মো. হারুক আহমেদ, ও’ডেল অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মোহাম্মদ মোহিত, ডে অ্যাপারেলসে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনওয়ার হোসেন পাটওয়ারি এবং একেএইচ ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামসুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য আবেদন শুরু ১ সেপ্টেম্বর
ইউনিয়ন ক্যাপিটালে প্রশাসক নিয়োগ দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক
গভর্নর বলেন, “সাময়িকভাবে ব্যাংকগুলো থেকে রপ্তানিকারকদের প্রাপ্য টাকা পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হবে। যাতে রপ্তানিকারকদের জরুরি আর্থিক চাহিদা মেটানো যায়। পরবর্তীতে, সমস্যাটির একটি স্থায়ী ও চূড়ান্ত সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি গভর্নরের কাছে পাঁচটি সংকটাপন্ন ব্যাংকের কারণে পোশাক রপ্তানিকারকরা বর্তমানে যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “বর্তমানে সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোতে তীব্র তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো রপ্তানি আয় (প্রত্যাবসিত রপ্তানি মূল্য) আসলেও সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারকদেরকে সেই অর্থ সময়মতো পরিশোধ করছে না। এমনকি ব্যাংকগুলো নতুন লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খুলতেও ব্যর্থ হচ্ছে। এতে করে সংশ্লিষ্ট পোশাক কারখানাগুলো আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়ে নিয়মিত কার্যক্রম ও রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। বিশেষ করে কারখানাগুলো সময় মতো শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে না পারার কারণে শ্রমিক অসন্তোষ ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। যা আইনশৃঙ্খলার পরিপন্থি।”
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি মারাত্মভাবে ক্ষুণ্ন করছে, সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের বাংলাদেশের প্রতি আস্থাও কমছে। যা শিল্পের জন্য মোটেও শুভ নয়।”
বৈঠকে বিজিএমইএ নেতারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে অনেক প্রতিষ্ঠান সহসাই রুগ্ন শিল্পে পরিণত হবে। ফলশ্রুতিতে অনেক শ্রমিক কর্মসংস্থান হারাবে এবং সর্বোপরি, দেশের প্রধান রপ্তানি খাত আরো ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। যা মোটেও কাম্য নয়। এমন পরিস্থিতিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান বিজিএমইএ সভাপতি।
বিজিএমইএ সভাপতি আশা করেন, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে। পোশাক শিল্পে বিরাজমান আর্থিক অনিশ্চয়তা দূর হবে এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরে আসবে।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র উদ য পর শ ধ সমস য ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
উৎপাদনশীলতা বাড়াতে বিজিএমইএ-এনপিও সমঝোতা স্মারক
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে উৎপাদনশীলতা, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা বাড়াতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশনের (এনপিও) সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিজিএমইএ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
শুল্ক হ্রাসে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই, আরো কমাতে আলোচনার পরামর্শ
বিজিএমইএ নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৮৭.৫০ শতাংশ
বিজিএমইএ জানায়, সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, পোশাক শিল্পকে ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ যুগের উপযোগী করে তুলতে যৌথভাবে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, সেমিনার ও পরামর্শ সেবা পরিচালনা করবে বিজিএমইএ ও এনপিও। পাশাপাশি, উৎপাদনশীলতা ও অপারেশনাল উৎকর্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৫ এস, কাইজেন, লিন ম্যানুফেকচারিংরের মতো আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
চুক্তির অংশ হিসেবে প্রতি বছর তিনটি তৈরি পোশাক কারখানাকে ‘মডেল এন্টারপ্রাইজ’ হিসেবে বাছাই করা হবে এবং এনপিওর কারিগরি সহায়তায় এসব কারখানায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া, উভয় সংস্থা এশিয়ান প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশনের সহায়তায় গবেষণা ও সক্ষমতা উন্নয়নমূলক উদ্যোগেও একসাথে কাজ করবে।
এনপিও কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বিজিএমইএ পরিচালক জোয়ারদার মোহাম্মদ হোসনে কমার আলম এবং এনপিও সভাপতি মো. নুরুল আলম।
বিজিএমইএ প্রতিনিধি বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যের পরিবর্তন, প্রযুক্তিগত রূপান্তর এবং সাপ্লাই চেইনের নতুন বাস্তবতায় ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। শুধুমাত্র কম খরচের ওপর নির্ভর না করে, এখন প্রয়োজন গুণগত মান, দক্ষতা, গতি ও উদ্ভাবনের সমন্বয়।
বিজিএমইএ পরিচালক জোয়ারদার মোহাম্মদ হোসনে কমার আলম বলেন, “বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের পথে এগিয়ে নিতে আমাদের উৎপাদন ব্যবস্থায় ডিজিটাল প্রযুক্তি, আইওটি ও ইনোভেশন সংযুক্ত করা জরুরি। বিজিএমইএ ও এনপিওর এই অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের টেকসই, আধুনিক ও প্রতিযোগিতামূলক শিল্পে রূপান্তরের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।”
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ