মোদির ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকার চোরের সর্দার-গাদ্দার: মমতা
Published: 26th, August 2025 GMT
“আপনাদের ডবল ইঞ্জিন সরকার সবচেয়ে বড় চোর। আপনি চোর সর্দারদের নিয়ে মিটিং করেন,” প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সফর এবং দুর্নীতি নিয়ে মন্তব্যের জবাবে এভাবেই পাল্টা তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নাম না করেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘দুকান কাটা’ বলে উপহাস করলেন মমতা। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও তীব্র প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘‘কমিশন যেন বিজেপির ললিপপ না হয়!”
আরো পড়ুন:
বিজেপি নেতাদের পিঁপড়ার মতো টিপে মেরে ফেলার হুমকি মমতার
বাংলায় কথা বললেই বিজেপি তাকে বলছে বাংলাদেশি: মমতা
শুক্রবার কলকাতায় মেট্রো উদ্বোধনে এসে প্রধানমন্ত্রী মোদি তার বক্তব্যে পশ্চিমবঙ্গের দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বর্ধমানের প্রশাসনিক সভামঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ্য করে বিস্ফোরক আক্রমণ করেন মমতা।
মমতা বলেন “প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আমি একথা আশা করিনি। আমি যেমন ওনার চেয়ারকে সম্মান করি, তারও উচিত আমাদের চেয়ারগুলোকে সম্মান করা। কেন বললেন বাংলায় সব চোর, যে কারণে টাকা বন্ধ করেছি। উত্তর প্রদেশে সব চোর, বিহারে সব চোর, তিনি কেন বলবেন, বাংলার সবাই চোর! সবচেয়ে বড় চোর তো উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, বিহার, যেখানে ডবল ইঞ্জিন সরকার আছে!”
বিজেপির রাজ্য রাজনীতিতে গুরুত্ব স্লোগান ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকার। রাজ্য ও কেন্দ্রে একই দল সরকারে থাকাকে তারা ডাবল ইঞ্জিন সরকার বলে থাকে। বিজেপির ভাষ্য- ডাবল ইঞ্জিন সরকার থাকলে উন্নয়ন হবে বেশি।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা এই ডাবল ইঞ্জিন সরকারকে চোর-গাদ্দার বলে তুলাধুনা করেছেন। মোদির দিকে আক্রমণ শানিয়ে তিনি বলেন, “লজ্জা, ঘৃণা, ভয়— এই তিন থাকতে নেই। একটা কান কাটা থাকলে আর একটা কান কাটার ভয় থাকে। ওদের দুটো কানই কাটা! তাই আর ভয় কীসের?”
মমতার অভিযোগ, “বাংলাকে অসম্মান করার জন্য ১৮৪টা টিম পাঠিয়েছে কেন্দ্র সরকার। বাংলার স্টুডেন্টরা পরীক্ষায় খাতায় সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পরও তাদের নম্বর কাটা হচ্ছে। আর বাংলাকে চোর বলা হচ্ছে। অথচ চোরদের, গদ্দারদের সঙ্গেই মিটিং চলছে। লজ্জা করে না!”
মোদির বারবার পশ্চিমবঙ্গ সফর নিয়েও কথা তোলেন মমতা, বলেন, “ইলেকশন এলেই আপনি রোজ পরিযায়ী শ্রমিকের মতো আসছেন। আমি চাই আপনি রোজ আসুন। বিমান ফ্রি, হেলিকপ্টার ফ্রি, রাস্তাও ফ্রি— সবই তো পাচ্ছেন ফ্রিতে! আমি তো সরকার থেকে এক পয়সাও নিই না।”
এরপরই নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভোট এলেই এনআরসি করতে হবে? নতুন করে নাম কাটতে হবে? ইলেকশন কমিশনকে প্রণাম জানাই, সালাম জানাই—কিন্তু প্লিজ বিজেপির ললিপপ হবেন না। তা হলে কিন্তু মানুষ ক্ষমা করবে না।”
বর্ধমানের সভা থেকে এদিন আরো একবার বাংলা ভাষা নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তুলে আনেন পাকিস্তান প্রসঙ্গও। কেন্দ্রকে খোঁচা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “এখানে নাকি সব বাংলাদেশ হয়ে গিয়েছে। পাঞ্জাবের পাশে পাকিস্তান, পাকিস্তানেরও একটা পাঞ্জাব রয়েছে, সেকথা তো বলো না। আমাদের পাশে বাংলাদেশ তো আমরা তৈরি করিনি। তোমাদের প্রপিতামহরা করেছে। আমাদের ভাষা যদি এক হয়, আমরা কী করতে পারি?”
ঢাকা/সুচরিতা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম খ যমন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।
এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী