মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় বাচ্চাদের হাতে রঙিন আইসক্রিম প্রায়ই দেখা যায়। বাবা-মায়েরা সন্তানদের আবদার রাখতে স্বপ্ল দামের এই আইসক্রিম কিনে দেন। কিন্তু এই আইসক্রিমে ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে। কিডনির ক্ষতি কিংবা শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কাও আছে।

বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মানিকগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ফারহানা ইসলাম অজন্তার নেতৃত্বে কর্মকর্তারা সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম বাজার এলাকায় সৌরভ আইসক্রিম কারখানায় অভিযান চালায়। সেখানে অবৈধভাবে আইসক্রিম তৈরি করা হচ্ছিল। এই আইসক্রিমে নিষিদ্ধ কৃত্রিম রঙ ব্যবহার করা হচ্ছিল। এই রঙ শিশুর জন্য এই মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।  

আরো পড়ুন:

গুদামে ভেজাল পণ্য মজুত, দুই লাখ টাকা জরিমানা

শরীয়তপুরে ৩ হাজার কেজি অবৈধ পলিথিন জব্দ

অভিযানে ওই কারখানাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযানে জেলা ক্যাবের প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম ও পুলিশের সদস্যরা অংশ নেয়।

সহকারী পরিচালক ফারহানা ইসলাম অজন্তা অভিযানে জরিমানার তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘‘জনস্বার্থে অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে শুধু সরকারি অভিযানে সমস্যার সমাধান হবে না। অভিভাবকরা সচেতন হলে ভেজাল পণ্যের বাজার কমে আসবে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে। শিশুদের জন্য নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা সামাজিক আন্দোলনে রূপ নিতে হবে।’’ 

মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা.

খুরশীদ আলম বলেন, ‘‘আইসক্রিমে কৃত্রিম রঙ শিশুর লিভার ও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। বড়দের দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। এ সব কেমিক্যাল শিশুদের শেখার ক্ষমতা ও মস্তিষ্কের বিকাশে বাধা দেয়।’’

অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। ইমতিয়াজ মাহবুব নামে এক অভিভাবক বলেন, “বাজার থেকে বাচ্চাদের আইসক্রিম কিনে দেই। এতে যদি ক্ষতিকর রঙ মেশানো থাকে, তবে তো আমরা নিজের হাতেই সন্তানদের অসুস্থ করছি।”

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ( ক্যাব) মানিকগঞ্জের প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘দরগ্রামের আইসক্রিম ফ্যাক্টরি হয়ত ভেজালের ক্ষুদ্র উদাহরণ। তবে অভিযানে অভিভাবকরা উপলব্ধি করছেন, শিশুর হাসি রক্ষা করতে হলে ভেজালের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।’’

ঢাকা/চন্দন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য ন ম ন কগঞ জ আইসক র ম ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে অমোচনীয় কালি সরবরাহ না করলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতারা। এ ছাড়া এমফিল কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ছাত্রদলকে ভোট প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর আচরণবিধিবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় ছাত্রদলের নেতারা এমন মন্তব্য করেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা একচুল ছাড় দেব না। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয়— কোনো ছাড় হবে না। নির্বাচনের সময় অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে হবে। যদি নির্বাচন কমিশন অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে।’

ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ‘ম্যানুয়ালি’ ভোট গণনার দাবি জানিয়ে শামসুল আরেফিন বলেন, ‘কত ব্যালট ছাপানো হলো, কত ভোট গণনা হলো, কত ব্যালট নষ্ট হলো—এসব তথ্য স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশ করতে হবে। কারণ, আমরা ডাকসুতে ব্যালট কেলেঙ্কারির অভিযোগ সম্পর্কে জানি।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ বিধিমালায় এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ছাত্রদলকে ‘মাইনাস’ করার একটি মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জকসু গঠন ও পরিচালনা বিধিমালায় বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর নিয়মিত শিক্ষার্থী ভোটার কিংবা প্রার্থী ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। অন্যদিকে এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থীর যোগ্যতা না দিয়ে আমাদের মাইনাস করা ছিল মাস্টারপ্ল্যান—আর সেই মাস্টারপ্ল্যান সফল হয়েছে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, প্রক্টর, সিন্ডিকেটের সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর নির্বাচন কমিশনার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ