রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে এসে  প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনাকে ‌`অপ্রীতিকর' বলে বর্ণনা করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। 

শিক্ষার্থীদের মধ্যে দাঁড়িয়ে সাজ্জাত আলী বলেন, ‍“হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে যে অপ্রীতিকর ঘটানো হয়েছে, সেই জন্য আমি ডিএমপির পুলিশ কমিশনার হিসেবে অত্যন্ত দুঃখিত এবং দুঃখ প্রকাশ করছি।”

বুধবার (২৭ আগস্ট) রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহবাগ মোড়ে আসেন ডিএমপি কমিশনার। সেখানে তিনি আরো বলেন, “এই ঘটনার জন্য আমি একটি তদন্ত কমিটি আগামীকাল গঠন করে দেব।”

সাজ্জাত আলী বলেন, “রংপুরের ঘটনায় রংপুরের মেট্রোপলিটান পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আমি এখানে আসার আগে কথা বলেছি। সেখানে একটা জিডি হয়েছে। এই জিডির আসামিকে ধরার জন্য উনার সঙ্গে কথা বলছি। উনি আমাকে কথা দিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব সেই আসামিকে উনি ধরে দেবেন।”

ঢাকার সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে চাকরিতে বৈষম্য দূর করার তিন দাবি নিয়ে দুদিন ধরে আন্দোলন করছেন। এই ধারায় প্রথম দিনের পর দ্বিতীয় দিন বুধবার তারা শাহবাগ অবরোধ করে সেখান থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে রওনা হলে পুলিশ তাদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে এবং লাঠিচার্জ করে। এ নিয়ে উত্তেজনা আরো ছড়িয়ে পড়ে।  

সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল। তবে তাতে কোনো সমাধান আসেনি। বৃহস্পতিবার আবার সব পক্ষকে নিয়ে বসে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস পান শিক্ষার্থীরা। 

তবে শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল, স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা উপদেষ্টাকে তাদের সামনে এসে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে। উপদেষ্টারা আসেননি। অবশ্য তাদের বদলে আসেন ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত আলী। তিনি এসে দুঃখ প্রকাশ করেন।

বুধবার (২৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের পক্ষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে কথা বলেন প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের সভাপতি ওয়ালী উল্লাহ। তিনি জানান, পরবর্তী কর্মসূচি বৃহস্পতিবার বিকালে ঘোষণা করা হবে। তার ঘোষণার পর সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। 

প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি ঘিরে সারা দিন শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়; ভোগান্তির শিকার হন পথচলতি মানুষ।

প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তিন দাবি হলো:

১.

সরকারি চাকরিতে নবম গ্রেডে ৩৩ শতাংশ কোটা রয়েছে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য। সেই কোটা বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে।

২. দশম গ্রেডে ১০০ শতাংশ কোটা রয়েছে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য। এটি বাতিল করে সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।

৩. বিএসসি ডিগ্রি ছাড়া ইঞ্জিনিয়ার পদবি ব্যবহার করা যাবে না। যদি এই পদবি ব্যবহার করে, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

ঢাকা/রায়হান/রাসেল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স জ জ ত আল উপদ ষ ট র জন য ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ