কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টা মামলার অন্যতম আসামি ছাত্রলীগ নেতা ফরহাদ হোসেন পাপ্পুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরপর আদালতে তোলার সময় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন পাপ্পু ও দলের নেতাকর্মীরা। 

তবে স্লোগান দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ায় নেতাকর্মীদের কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। 

বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে কুষ্টিয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ভ্যান থেকে নামিয়ে আদালতে নেওয়ার সময় তারা এ স্লোগান দিতে দিতে আদালত ভবনে প্রবেশ করেন। এর আগে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাপ্পুকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জিয়াউর রহমান। 

তিনি জানান, গ্রেপ্তার ফরহাদ হোসেন পাপ্পু (২৬) কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার এলঙ্গি এলাকার মতি হোসেনের ছেলে। তিনি কুমারখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। জুলাই আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারভুক্ত তিন নম্বর আসামি। এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

বুধবার দুপুরে ছাত্রলীগ নেতা পাপ্পুকে গাড়িতে আদালতে আনে পুলিশ। গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন পাপ্পু। এসময় ছাত্রলীগের প্রায় ১০ জন নেতাকর্মী তার সঙ্গে স্লোগান দিয়ে তারা পালিয়ে যান। পরে আদালতের মাধ্যমে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

আদালতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের স্লোগান দেওয়ার কয়েকটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আসামি পাপ্পু প্রথমে উচ্চস্বরে স্লোগান দেন। এসময় উপস্থিত বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও তার সঙ্গে স্লোগান দিতে দিতে আদালত ভবনের নিচতলায় প্রবেশ করেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কুষ্টিয়া কোর্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলামকে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, “ডিএমপি পুলিশের সহযোগিতায় ডিবি পুলিশ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঢাকা থেকে পাপ্পুকে গ্রেপ্তার করে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। হামলা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় পাপ্পুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।”

প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে জুলাই আন্দোলনের সময় ৪ আগস্ট সকালের দিকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ২০২৪ সালের ১৫ অক্টোবর কুমারখালী থানার একটি মামলা করেন জিহাদ শাহরিয়ার সুমন। ওই মামলায় বাদী সুমন ৯২ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০/১৫ জনকে আসামি করেন। এ মামলার তিন নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি ছাত্রলীগ নেতা পাপ্পু।

ঢাকা/কাঞ্চন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ও হত য চ ষ ট ন ত কর ম র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা

বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। অভিনয় গুণে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে দোলা দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে যশ-খ্যাতি যেমন পেয়েছেন, তেমনি আয় করেছেন মোটা অঙ্কের অর্থও। রবিবার (২ নভেম্বর) ৬০ বছর পূর্ণ করে একষট্টিতে পা দেবেন এই তারকা।  

অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক নায়িকার সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন শাহরুখ খান। তাদের মধ্যে অন্যতম জুহি চাওলা। ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’, ‘রামজানে’, ‘ডর’, ‘ইয়েস বস’, ‘ডুপ্লিকেট’সহ আরো কিছু জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই জুটি। একসঙ্গে অভিনয় ছাড়াও, এই দুই তারকা বাস্তব জীবনে খুবই ভালো বন্ধু। কেবল তাই নয়, ব্যবসায়ীক অংশীদারও তারা। 

আরো পড়ুন:

শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?

পাকিস্তানের সন্ত্রাসী তালিকায় সালমান খান কেন?

বন্ধু শাহরুখের জন্মদিন উপলক্ষে হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন জুহি। এ আলাপচারিতায় স্মৃতিচারণ তো করেছেনই, পাশাপাশি শাহরুখের বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।  

শাহরুখের সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের বিষয়ে জুহি চাওলা বলেন, “আমি যখন প্রথম ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হই, তখন সহপ্রযোজক বিবেক ভাসওয়ানি আমাকে বলেছিলেন, ‘আমার নায়ক দেখতে আমির খানের মতো।’ আমি শাহরুখকে দেখে ভীষণ অবাক হয়েছিলাম। দেখি, শাহরুখের চুল চোখের ওপরে নেমে এসেছে। আর সে একেবারেই আমার কল্পনার সেই ‘চকলেট বয়’ নয়! যখন কাজ শুরু করি, তখন বুঝতে পারি, সে একদম নতুন অভিনেতাদের মতো নয়, সে পরিশ্রমী, দিনে তিন শিফটে কাজ করছে।” 

একটি ঘটনা বর্ণনা করে জুহি চাওলা বলেন, “আমার মনে আছে, ‘ইয়েস বস’ সিনেমার শুটিংয়ের সময়, কোনো দৃশ্য ঠিকমতো লেখা না থাকলে পরিচালক আজিজজি (আজিজ মির্জা) বলতেন, ‘শাহরুখ আসুক, সব ঠিক হয়ে যাবে।’ রোমান্স আর মজার মিশেলে থাকা দৃশ্যগুলো আমাদের সবচেয়ে ভালো ছিল। সেই সূত্রেই আমরা অনেকগুলো সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করেছি।” 

শাহরুখের পাশে অবস্থান করলে সাবধান থাকার কথার কথা বলেছেন জুহি। হাসতে হাসতে এ অভিনেত্রী বলেন, “শাহরুখের আশেপাশে থাকলে সাবধানে থাকবেন। কারণ সে কথা দিয়ে আপনাকে যেকোনো কিছু করাতে রাজি করিয়ে ফেলতে পারে। ওর কথাবলার ভঙ্গি এমন যে, আপনি ‘না’ বলতেই পারবে না। আমি ‘ডুপ্লিকেট’ সিনেমা করতে চাইছিলাম না, কারণ সেখানে আমার তেমন কিছু করার ছিল না। আমরা তখন আরেকটি সিনেমার শুটিং করছিলাম, আর শাহরুখ আমাকে সিঁড়িতে বসিয়ে দুই ঘণ্টা বোঝায় এবং আমি সিনেমাটিতে চুক্তিবদ্ধ হই। সে আপনাকে যেকোনো কিছু করতে রাজি করাতে পারে, তাই সাবধানে থাকবেন।” 

শাহরুখ খানের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়ে জুহি চাওলা বলেন, “অফস্ক্রিনে আমাদের সম্পর্কেও উত্থান-পতন রয়েছে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা কোনো না কোনোভাবে আমাদের যুক্ত রেখেছেন, এমনকি আইপিএলের মাধ্যমেও। আমাদের বন্ধন কোনো পরিকল্পনার ফল নয়, এটা একেবারেই ভাগ্যের ব্যাপার।” 

শাহরুখ খানের সঙ্গে আইপিএল দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) সহ-মালিক জুহি ও তার স্বামী জয় মেহতা। এই দলের পেছনে জুহি বিনিয়োগ করেছেন ৬২৯ কোটি রুপি। বর্তমানে এই দলটির মূল্য আছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি রুপি। শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘রেড চিলিস গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠা করেন জুহি। 

১৯৬৫ সালে ২ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শাহরুখ খান। তার শৈশবের প্রথম পাঁচ বছর কেটেছে ম্যাঙ্গালুরুতে। শাহরুখের দাদা ইফতিখার আহমেদ স্থানীয় পোর্টের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। যার কারণে সেখানে বসবাস করেন তারা। শাহরুখের বাবার নাম তাজ মোহাম্মদ খান, মা লতিফ ফাতিমা। 

দিল্লির হংসরাজ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন শাহরুখ খান। তারপর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়াতে গণযোগাযোগ বিষয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন। কিন্তু অভিনয় জীবন শুরু করার কারণে পড়াশোনা ছেড়ে দেন তিনি। তবে বলিউডে ক্যারিয়ার শুরুর দিকে দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-তে ভর্তি হন এই শিল্পী। 

১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন শাহরুখ খান। রোমান্টিক ঘরানার এ সিনেমায় অভিনয় করে নজর কাড়েন তিনি। সিনেমাটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ। 

একই বছর ‘চমৎকার’, ‘দিল আসনা হে’ ও ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় অভিনয় করেন শাহরুখ। তার পরের বছর ‘ডর’ ও ‘বাজিগর’ সিনেমায় অভিনয় করে নিজের জাত চেনান শাহরুখ। তার অভিনয়ের জাদুতে মুগ্ধ হন কোটি ভক্ত; পৌঁছে যান সাফল্যের চূড়ায়। তার অভিনয়ের খ্যাতি আরো বাড়তে থাকে যশরাজ ফিল্মসের সিনেমায় ধারাবাহিকভাবে অভিনয় করে। একের পর এক হিট সিনেমা দিয়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থান করেন শাহরুখ। যদিও তার এই সফলতার জার্নির গল্প মোটেও সহজ ছিল। আর সে গল্প সবারই জানা। 

অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন শাহরুখ খান। তার মধ্যে মোট পনেরোবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি। এর মধ্যে আটবার সেরা অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। হিন্দি সিনেমায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০০২ সালে তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে ভারত সরকার। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করেছেন মোট পাঁচবার। তবে শাহরুখ খানের ৩৩ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে অধরা ছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। চলতি বছর ‘জওয়ান’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ