রংপুরে জাপার অফিস ভাঙতে এলে হাত ভেঙে দেওয়া হবে: মোস্তফা
Published: 30th, August 2025 GMT
ঢাকায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা এবং এর প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ-সমাবেশের প্রেক্ষাপটে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেছেন, ‘‘তারা যেন এটা মনে না করে, রংপুরে জাতীয় পার্টি দুর্বল। এখানে হামলা করতে আসলে সবগুলোর হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে।’’
শনিবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে রংপুরের সেন্ট্রাল রোডের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ সব কথা বলেন।
মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘‘জাতীয় পার্টিকে নিয়ে গভীর স্বড়যন্ত্র করা হচ্ছে। গতকাল (শুক্রবার) ঢাকায় ষড়যন্ত্রে মেতেছিলেন তারা। রংপুরে এখন পর্যন্ত এমন আশঙ্কা নেই। ওদের যদি তেমন শক্তি-সামর্থ্য থাকে তাহলে আসুক, দেখুক কী অবস্থা হয়।’’
রাজধানীর কাকরাইলে শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টি (জাপা) ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। জাপার কার্যালয়ের সামনে দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের মিছিল যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লাঠিপেটায় নুরসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
জাতীয় পার্টির ওপর হামলার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মোস্তফা সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘জাতীয় পার্টি নির্বাচনে গেলে ভালো ফলাফল করতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকে বারবার দলটিকে নিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতারা পলাতক কিংবা কারাগারে। তাদের সাধারণ কর্মী বা ভোটাররা জাতীয় পার্টিকে ভোট দিতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকে বারবার এমন ষড়যন্ত্রে মেতেছে তারা। যারা এ সব করছেন তারা নির্বাচনে জামানাত রক্ষা করতে পারবেন না।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘কিছু উসকানিদাতা জাতীয় পার্টিকে বার বার হেনস্তা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবি তুলেছেন। আমি মনে করি, এটা একটা লজ্জাকর ব্যাপার। সিদ্ধান্ত দেবে সাধারণ জনগণ।’’
মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘‘মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান মানে বাংলাদেশকে অপমান করা। মুক্তিযোদ্ধাদের লাঞ্ছিত করা মানে বাংলাদেশের পতাকা কলঙ্কিত করা। আমার মনে হয়, আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময় এসেছে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, একাত্তরের পক্ষের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। একাত্তরের চেতনায় যারা বিশ্বাসী তাদের কোণঠাসা করার অপচেষ্টা চলছে।’’
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইয়াসিরসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদ, জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধ করা এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। শনিবার (৩০ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে রংপুর নগরীর সেনপাড়া দলের স্থানীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
কার্যালয় থেকে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিল নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন গণধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির উচ্চতর পরিষদের সদস্য হানিফ খান সজীব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা কমিটির সাবেক আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ, গণঅধিকার পরিষদের রংপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তুষার আহমেদ প্রমুখ।
এ সময় গণঅধিকার পরিষদের নেতারা বলেন, ‘‘সরকারের স্পষ্ট মদতে নুরের উপর হামলা করা হয়েছে।’’ এ হামলার বিচার দাবি করেন তারা। পরে মিছিল নিয়ে রংপুর নগরীর মডার্ন মোড় ব্লকেট কর্মসূচি পালন করেন। সেখানে নুরের ওপর হামলার বিচার দাবি করেন।
ঢাকা/আমিরুল/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় গেলেন নুর
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি হাসপাতাল ছাড়েন।
আরো পড়ুন:
নুরের শর্ট টাইম মেমোরি লস হয়নি: ঢামেক পরিচালক
গণঅধিকারের সমাবেশে বিভিন্ন দলের নেতা: জাতীয় পার্টিকে দ্রুত নিষিদ্ধ করতে হবে
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি জানিয়ে বলেন, “নুরুল হক নুরকে হাসপাতালের ভিআইপি কেবিন-১ থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। পরে বিকেল পোনে ৫টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তিনি নিজ বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হন।”
এর আগে গত ২৯ আগস্ট রাতে বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতাকর্মীদের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাত সোয়া ৯টার দিকে সংঘর্ষ হয়, এতে গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন।
নুরুল হক নুরকে প্রথমে রাজধানীর ইসলামিয়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে রাত ১১টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি প্রায় ১৭ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ঢাকা/এসবি