মাইকে ঘোষণা দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৬০ জন আহত হয়েছেন।  এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। 

রবিবার (৩১ আগস্ট) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “চবি শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলার ঘটনায় বহু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকের পরীক্ষাও ছিল। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আজকের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। তবে ক্লাস চলবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের মাধ্যম শাটল ট্রেন নিয়মিত সূচিতে চলবে।”

আরো পড়ুন:

নুরের খোঁজ নিলেন খালেদা জিয়া

খুলনায় জাপা কার্যালয়ে হামলা, লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ

এর আগে শনিবার (৩০ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার পর এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা ও মারধররের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটসংলগ্ন এলাকায় দফায় দফায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ৬০ জন আহত হন। এর মধ্যে প্রায় ২১ জন শিক্ষার্থীকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি আহতদের চবি মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা চলছে।

চমেকে পাঠানো আহত শিক্ষার্থীরা হলেন, ফুয়াদ হাসান  আরবি বিভাগ), শাওন (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক), তাহসান হাবিব (ইতিহাস), আশ্রাফ রাতুল (লোক প্রশাসন), লাবিব (গণিত), হাসান জুবায়ের হিমেল (ইংরেজি), নাহিন মুস্তফা (অর্থনীতি), আশিকুর রহমান ( ইসলামিক স্টাডিজ), মাহিন (দর্শন), হুমায়ুন কবির (সমাজতত্ব), তামিম (দর্শন), রিদুয়ান (ব্যাংকিং), রিফাত (একাউন্টিং), রিপন (একাউন্টিং), সাইদুল ইসলাম (বাংলা),  মো.

ইয়েন (রাজনীতি বিজ্ঞান), আবির (জিওগ্রাফি), তওসিফ (জিওগ্রাফি), শাহরিয়ার ইসলাম শিহাব (ইসলামিক স্টাডিজ),  শ্রাবন আহমেদ সাব্বির (কেমিস্ট্রি) ও সাকিব মাহমুদ রুমি (আরবি)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, রাত সাড়ে ১১টায় ভাড়া বাসায় ফিরতে দেরি হওয়ায় এক নারী শিক্ষার্থীকে ওই বাড়ির দারোয়ান হেনস্তা ও মারধর করেন। খবর পেয়ে সহপাঠীরা গিয়ে দারোয়ানকে ধরার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা মাইকিং করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। বাচামিয়ার দোকানসংলগ্ন এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর চারদিক থেকে হামলা হয়, পরে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে পুরো ২নং গেট এলাকা থেকে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক পর্যন্ত। পরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও মাইকে বিষয়টি জানানো হয়।

হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির গাড়িবহর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়িতেও ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিন প্লাটুন সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা দর্শন বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের জোবায়ের হোসেন নাইম বলেন, “আমাদের এক নারী শিক্ষার্থী বাসায় ঢুকতে একটু দেরি হওয়ায় দারোয়ান তাকে প্রচণ্ড মারধর করে, সে রক্তাক্ত হয়। এ অবস্থায় সে এক সিনিয়র ভাইকে বললে তাকেও স্থানীয় ছেলেরা ঘটনাস্থলে আহত করে। পরে উভয় পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এরপর প্রক্টর ও পুলিশের গাড়ি গেলে স্থানীয়রা এসব গাড়িতে ভাঙচুর করেছে।”

তিনি বলেন, “আমাদের অনেক ভাইকে কুপিয়েছে। তারা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দা, রামদা, কাঁচি নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছে। তারা ফায়ারিংও করেছে।”

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আয়েশা আবেদীন নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেন, “ঘটনাটা আমার বিল্ডিংয়ে হয়েছে। ঘটনার রুট, মুল কালপিট আমাদের দারোয়ান। তার ব্যবহার বরাবরই বাড়িওয়ালার ৩০ ডিগ্রি উপরে। কাহিনি হলো, এক আপু ৩ তলায় থাকেন। উনি বাসায় ঢুকতে ১১টা ক্রস করে, তবে ১১টা ৩০ এর আগেই আসে। আমাদের গেট ১১টায় অফ হয়ে যায়।”

তিনি আরো বলেন, “আপুর লেট হবে এটা সে আগেও জানিয়ে দেয়, তবে আপু যখন বাসায় আসে তখন দারোয়ান গেট বন্ধ করে ঘুমিয়ে যায়। আপু বারবার দরজা ধাক্কায়, একপর্যায়ে দারোয়ান দরজা খুলে এবং দুজনের তর্ক হয়। এমন সময় দারোয়ান মেয়ের গায়ে হাত তুলে, থাপ্পড় দেয়, অনেক বার মারে। পাশের বিল্ডিংয়ের কিছু লোক বের হয়ে দারোয়ানের কলার চেপে ধরে।”

তিনি বলেন, “এরপর আমাদের ও পাশের বিল্ডিংয়ের সবাই ঘটনা স্থলে যায়। আপুর থেকে সব শুনি। তবে এর পরেও দারোয়ানের চাপাবাজি কমে না। এরপর আপু তার পরিচিত সিনিয়রদের ডাকে। তারা দারোয়ানকে ধরতে গেলে দারোয়ান এলাকাবাসীর সহায়তায় পালিয়ে যায়। প্রথমিক ঘটনা এটুকু। এরপর স্থানীয়রা শিক্ষার্থীদের ওপর প্রচণ্ডভাবে হামলা চালায়।”

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ওপর পর ক ষ স ঘর ষ আম দ র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা

রাজধানীতে হাত ও পা বেঁধে রড দিয়ে পিটিয়ে আনোয়ার হোসেন (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ীর কাউন্সিল শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির একটি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন আনোয়ার হোসেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল পুরান ঢাকার সদরঘাটে। পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে রাজধানীর মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকতেন।

আনোয়ারের ভাই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ভোরে আনোয়ার বাসা থেকে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পরে খবর পান, তাঁর ভাইকে কাউন্সিল উত্তর শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির গ্যারেজে নিয়ে হাত–পা বেঁধে রাখা হয়েছে। এরপর সেখানে গিয়ে আনোয়ারের হাত–পা বাঁধা ও রক্তাক্ত মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান তাঁর মা।

লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে মৃত্যুর আগের তাঁর মাকে জানিয়েছিলেন আনোয়ার। তাঁর ভাই এ কথা জানিয়ে বলেন, এর কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলেই আনোয়ারের মৃত্যু হয়। এরপর যাত্রাবাড়ীর থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।

গতকাল সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরে সঙ্গী সুমনকে নিয়ে আনোয়ার বাসের কাঠামো তৈরির কারখানায় চুরি করতে যান। এ সময় সেখানে থাকা লোকজন তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাঁর সঙ্গী সুমন পালিয়ে যান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নড়াইলে ৩ দিন ধরে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ
  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
  • সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
  • সিলেটে পাথরবাহী ট্রাক্টরচাপায় পর্যটক নিহত, আহত ৫
  • যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা
  • ক্রিকেট ম্যাচের দায়িত্ব পালন করতে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনা, আহত ২৭ নারী পুলিশ সদস্য
  • ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫
  • জুলাই শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থ্যতা কামনায় দোয়া