নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেল আনতে সরব ছিলেন ছাত্র প্রতিনিধিরা

মেট্রোরেল নিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীর স্বপ্ন থাকলেও প্রায়শই সেটা নিয়ে দেখা যেতে ধোঁয়াশা এবং এ জনপদে আসছে না এ নিয়েও সংবাদ প্রকাশের পর সেই আক্ষেপ বাড়তে থাকে। তবে আশার আলো যে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির এমআরটি লাইন-২ প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জকে সম্পৃক্ত করার পরিকল্পনা চলছে। প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জ বাস ট্রামিনাল, জালকুড়ি, ভূঁইগড় ও সাইনবোর্ডে ৪ টি রেল স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে।

এর আগে এ রেল নিয়ে নারায়ণগঞ্জের ছাত্র প্রতিনিধিদের একটি অংশ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে করে আবেদন রাখেন।

গত ২৭ জানুয়ারি সিটি কর্পোরেশনের একটি আলোচনা সভায় বলা হয়েছিল নারায়ণগঞ্জে চাষাঢ়া পর্যন্ত মেট্রো রেল আসবে যার দৈর্ঘ্য হবে ৩৫ কিলোমিটার । কিন্তু গত ৭ আগষ্ট ‘দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড’ পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে লিখা হয় ৩৫ কিলোমিটার থেকে ১০ কিলোমিটার বাদ দিয়ে ২৫ কিলোমিটার হবে এবং মেট্রো সাইনবোর্ড পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে।

এমআরটি-২ লাইন হতে যে নারায়ণগঞ্জকে বাদ দেওয়া হয়েছে সেটা নারায়ণগঞ্জবাসী কেউ জানতো না। ছাত্র প্রতিনিধিরা জানতে পেরে তাৎক্ষণিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যগুলোতে মেট্রোরেল নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে থাকে এবং নানান রকম পদক্ষেপ ও সমস্যা সকলের সামনে তুলে ধরে গণসাক্ষর কর্মসূচী শুরু করে দিয়েছিলো। পরবর্তীতে ছাত্রদের একটি প্রতিনিধি টিম এমআরটি-২ প্রকল্প সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এর প্রধান প্রকৌশলি মো.

আব্দুল আজিজ এবং নগর পরিকল্পনাবীদ মোঃ মঈনুল ইসলাম এর সাথে আলোচনায় বসেন। প্রথমেই উনারা ছাত্র প্রতিনিধিদের ধন্যবাদ জানায় মেট্রোরেল এর জন্য কথা বলায় কারণ এর আগে কেউ মেট্রো নিয়ে কথা বলতে উনাদের কাছে যায়নি।

উক্ত আলোচনায় ২৫ কিলোমিটার না পুরো ৩৫ কিলোমিটার যেটা সরাসরি নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত আসবে সেটা বাস্তবায়নে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য ছাত্র প্রতিনিধিরা অনুরোধ জানায়।

এমআরটি-২ থেকে যে নারায়ণগঞ্জকে বাদ দেয়া হয়েছে সেটা সম্পর্কে তারা অবগত ছিলেন না।  গত ৭ আগস্টের নিউজ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন এবং সাথে সাথে ছাত্রদের সামনেই ডিএমটিসিএ এ মেট্রো এর দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করে এবং বোঝাতে সক্ষম হয় যে নারায়ণগঞ্জের মতো এতো বিশাল নাগরিক ও ব্যবসা কেন্দ্রীক এরিয়াতে অবশ্যই মেট্রোরেল প্রয়োজন আছে। পরবর্তীতে সে এমআরটি-২ এর সাথে নারায়ণগঞ্জকে যুক্ত করার দাবি রেখে ছাত্রদের উপস্থিতিতে তাদের সাথে একটি মিটিং এর ব্যবস্থা করে এবং সেই মিটিং এ এমআরটি-২ এর সাথে নারায়ণগঞ্জকে যুক্ত করার আশ্বাস দেয়া হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মোঃ মেহরাব হোসেন প্রভাত বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার ফলাফল নারায়ণগঞ্জবাসী খুব শীঘ্রই দেখতে চলেছে। শিক্ষা, ব্যবসা, চাকরি, চিকিৎসার জন্য প্রতিদিন প্রায় চার লক্ষ মানুষের যাতায়াত নারায়ণগঞ্জ টু গুলিস্তান। পরিবহন সিন্ডিকেট কে ভাঙতে হলে, যানজট কমাতে হলে এবং জনগনের ভোগান্তি কমাতে হলে নারায়নগঞ্জে মেট্রোরেল অবস্যই প্রয়োজন। শত বাধা পেরিয়ে অবশেষে নারায়ণগঞ্জে আসতে চলেছে মেট্রোরেল। ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো বাধা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাবে। মেট্রোরেল বাস্তবায়ন এর আগ পর্যন্ত সর্বস্তরের জনগণকে একত্রে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং সরকারকে সাহায্য করতে হবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে। অনেকেই বলেছিলো আমরা পারবোনা এই সিন্ডিকেট ভাঙতে কিন্তু আমরা ভেঙে দেখিয়েছি।  এই পাওয়া আমাদের একার না, এই পাওয়া পুরো নারায়ণগঞ্জ বাসীর। দেশের কাজে রাষ্ট্র সংস্কারে আমরা সবাই এক হয়ে কাজ করলে কোনো অপশক্তি আমাদের থামাতে পারবে না।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদল এর মো. মোহাজ্জেম হোসেন সাগর বলেন, নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণের অন্যতম ভোগান্তির নাম ছিল নারায়ণগঞ্জ টু ঢাকা যাতায়াতের দীর্ঘ যানজটে বসে থাকা। নারায়ণগঞ্জের মেট্রো  লাইন সংযুক্ত হওয়ার কারণে নারায়ণগঞ্জের সমস্ত জনগণ দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে এবং নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেল নিয়ে আসার জন্য কাজ করতে পেরে আমরা সবাই অনেক আনন্দিত এবং আমরা সবাই নারায়ণগঞ্জের জনগনের যেসকল ভোগান্তি গুলো রয়েছে সেগুলো  নিরসনের জন্য কাজ করব ইনশাআল্লাহ।

জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য মো. আলিফ দেওয়ান বলেন, আমাদের দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা ছিল আমাদের নারায়ণগঞ্জের জনগণের ভোগান্তির সমাপ্তি হবে মেট্রোরেল (ঢাকা-নারায়নঞ্জ) সংযোজনের মাধ্যমে। আমরা যেসকল দাবি জানিয়েছিলাম সবার আগে আজ তা সকল নারায়ণগঞ্জবাসীর একমাত্র দাবিতে পরিনত হয়েছে। জনগণের সমর্থন আমাদের সৎ কাজে সবসময় ছিল ইন শা আল্লাহ আমরন থাকবে।

বৈছাআ মহানগরের সাবেক সহ মুখপাত্র মুনতাসির শুভ বলেন, আমি অত্যন্ত খুশি পুনরায় নারায়নগঞ্জকে মেট্রোরেলের আওতাভুক্ত করার জন্য। মেট্রোরেল পুরো নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রানের দাবি ছিল সেটি আজ আদায় হয়েছে।আমরা ছাএজনতা নারায়নগঞ্জবাসীর সকল দাবী বাস্তবায়নের  জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করে যাবে ইনশাআল্লাহ্ ।

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য ণগঞ জ র ন র য়ণগঞ জ ক ত কর র প রকল প আম দ র র জন য র একট

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ জনগণের নয়, কিছু উপদেষ্টার প্রয়োজন: হাফিজ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ নিয়ে অনেক কথাবার্তা হচ্ছে। আমি মনে করি—জুলাই সনদ দেশের জনগণের প্রয়োজন নেই। কিছু ব্যক্তি যারা উপদেষ্টা হয়েছেন, যারা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বসবাস করতে গেলে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে পড়বেন; তাদের জন্য হয়তো প্রয়োজন আছে।’’

শনিবার (১ নভেম্বর) ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে তিনি এই কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মামুন, সম্পাদক রিটন

একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াত নিষিদ্ধ চান আলাল

হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘এই ধরনের সনদের আমাদের প্রয়োজন নেই। আমাদের প্রয়োজন–একটা পার্লামেন্ট। যেখানে আগামী দিনের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। যেই পার্লামেন্ট এই সনদকে বাস্তবায়িত করবে এবং আগামী গণতন্ত্রকে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত করতে সক্ষম হবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে প্রয়োজন একটি নির্বাচন। যেখানে জনগণ প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করতে পারবে। আমরা আশা করব, আগামীতে একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হবে। এই নির্বাচনে যারা বিজয়ী হবেন, জনগণের প্রতিনিধি হবেন; তারাই জুলাই সনদকে সমর্থন করবেন।’’

‘‘আমার দল বিএনপি জুলাই সনদকে সমর্থন করে, আমরাও এটি সমর্থন করতে বাধ্য। কিন্তু, এটার মধ্যে এমন জিনিস ঢোকাবেন না, যেটি নিয়ে আগে ঐকমত্য কমিশনের মিটিংয়ে আলোচনা হয়নি।’’- যোগ করেন তিনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘পিআর নিয়ে কথা হচ্ছে। দেশের জনগণকে জিজ্ঞেস করেন, কেউ পিআর চিনেও না। পিআর কেউ চায়ও না। আমরা শত বছর ধরে একজন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করে আসছি। তারা (পিআর দাবি করা দলগুলো) ব্যক্তির কাছ থেকে, ভোটারের কাছ থেকে ক্ষমতা তুলে নিয়ে একটা রাজনৈতিক দলের কাছে সমর্পণ করতে চায়। আমরা চাই, বর্তমান যে ব্যবস্থায় নির্বাচন হচ্ছে, সেই ব্যবস্থার মাধ্যমে যাতে নির্বাচন হয়।’’

হাফিজ উদ্দিন আরো বলেন, ‘‘আমাদের একটা প্রতিবেশী রাষ্ট্র আছে, যারা চায় না বাংলাদেশ স্বনির্ভর হোক। নিজের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অক্ষত থাকুক, এটা তারা চায় না। তারা আশ্রয় দিয়েছে মাফিয়া শেখ হাসিনাকে। শেখ হাসিনা সেখানে বসে কীভাবে বাংলাদেশে নাশকতা করা যায়, সে বিষয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন। কলকাতায় তারা অফিস খুলেছেন। আমি তাদেরকে একটা পরামর্শ দেব। শুধু কলকাতা নয়, ভারতের প্রত্যেকটা প্রদেশে আপনারা একটা করে অফিস খুলেন। ভারতের কাছ থেকে সনদ নেন। তারপরে ভারতের রাজনীতিতে আপনারা মিশে যান। বাংলাদেশে আপনাদের কোনো প্রয়োজন নেই।’’

ঢাকা/রায়হান/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ জনগণের নয়, কিছু উপদেষ্টার প্রয়োজন: হাফিজ
  • জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
  • নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনে প্রার্থী হবেন কেন্দ্রীয়  কৃষকদল নেতা শরিফ মোল্লা 
  • বন্দরে বিএনপি নেতা তাওলাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
  • বিএনপি ও জামায়াত কে কোন ফ্যাক্টরে এগিয়ে
  • অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল
  • সরকার নিরপেক্ষতা হারালে জনগণ মাঠে নামবে: তাহের
  • সংস্কার ইস্যুতে সব দল ঐক্যবদ্ধ থাকলেও বিএনপি অবস্থান পরিবর্তন করে
  • বিএনপি-জামায়াত দেশকে অন্য এক সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
  • জনগণের সঙ্গে এটা প্রতারণা: মির্জা ফখরুল