নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেল আনতে সরব ছিলেন ছাত্র প্রতিনিধিরা
Published: 31st, August 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেল আনতে সরব ছিলেন ছাত্র প্রতিনিধিরা
মেট্রোরেল নিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীর স্বপ্ন থাকলেও প্রায়শই সেটা নিয়ে দেখা যেতে ধোঁয়াশা এবং এ জনপদে আসছে না এ নিয়েও সংবাদ প্রকাশের পর সেই আক্ষেপ বাড়তে থাকে। তবে আশার আলো যে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির এমআরটি লাইন-২ প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জকে সম্পৃক্ত করার পরিকল্পনা চলছে। প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জ বাস ট্রামিনাল, জালকুড়ি, ভূঁইগড় ও সাইনবোর্ডে ৪ টি রেল স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে।
এর আগে এ রেল নিয়ে নারায়ণগঞ্জের ছাত্র প্রতিনিধিদের একটি অংশ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে করে আবেদন রাখেন।
গত ২৭ জানুয়ারি সিটি কর্পোরেশনের একটি আলোচনা সভায় বলা হয়েছিল নারায়ণগঞ্জে চাষাঢ়া পর্যন্ত মেট্রো রেল আসবে যার দৈর্ঘ্য হবে ৩৫ কিলোমিটার । কিন্তু গত ৭ আগষ্ট ‘দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড’ পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে লিখা হয় ৩৫ কিলোমিটার থেকে ১০ কিলোমিটার বাদ দিয়ে ২৫ কিলোমিটার হবে এবং মেট্রো সাইনবোর্ড পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে।
এমআরটি-২ লাইন হতে যে নারায়ণগঞ্জকে বাদ দেওয়া হয়েছে সেটা নারায়ণগঞ্জবাসী কেউ জানতো না। ছাত্র প্রতিনিধিরা জানতে পেরে তাৎক্ষণিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যগুলোতে মেট্রোরেল নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে থাকে এবং নানান রকম পদক্ষেপ ও সমস্যা সকলের সামনে তুলে ধরে গণসাক্ষর কর্মসূচী শুরু করে দিয়েছিলো। পরবর্তীতে ছাত্রদের একটি প্রতিনিধি টিম এমআরটি-২ প্রকল্প সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এর প্রধান প্রকৌশলি মো.
উক্ত আলোচনায় ২৫ কিলোমিটার না পুরো ৩৫ কিলোমিটার যেটা সরাসরি নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত আসবে সেটা বাস্তবায়নে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য ছাত্র প্রতিনিধিরা অনুরোধ জানায়।
এমআরটি-২ থেকে যে নারায়ণগঞ্জকে বাদ দেয়া হয়েছে সেটা সম্পর্কে তারা অবগত ছিলেন না। গত ৭ আগস্টের নিউজ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন এবং সাথে সাথে ছাত্রদের সামনেই ডিএমটিসিএ এ মেট্রো এর দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করে এবং বোঝাতে সক্ষম হয় যে নারায়ণগঞ্জের মতো এতো বিশাল নাগরিক ও ব্যবসা কেন্দ্রীক এরিয়াতে অবশ্যই মেট্রোরেল প্রয়োজন আছে। পরবর্তীতে সে এমআরটি-২ এর সাথে নারায়ণগঞ্জকে যুক্ত করার দাবি রেখে ছাত্রদের উপস্থিতিতে তাদের সাথে একটি মিটিং এর ব্যবস্থা করে এবং সেই মিটিং এ এমআরটি-২ এর সাথে নারায়ণগঞ্জকে যুক্ত করার আশ্বাস দেয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মোঃ মেহরাব হোসেন প্রভাত বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার ফলাফল নারায়ণগঞ্জবাসী খুব শীঘ্রই দেখতে চলেছে। শিক্ষা, ব্যবসা, চাকরি, চিকিৎসার জন্য প্রতিদিন প্রায় চার লক্ষ মানুষের যাতায়াত নারায়ণগঞ্জ টু গুলিস্তান। পরিবহন সিন্ডিকেট কে ভাঙতে হলে, যানজট কমাতে হলে এবং জনগনের ভোগান্তি কমাতে হলে নারায়নগঞ্জে মেট্রোরেল অবস্যই প্রয়োজন। শত বাধা পেরিয়ে অবশেষে নারায়ণগঞ্জে আসতে চলেছে মেট্রোরেল। ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো বাধা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাবে। মেট্রোরেল বাস্তবায়ন এর আগ পর্যন্ত সর্বস্তরের জনগণকে একত্রে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং সরকারকে সাহায্য করতে হবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে। অনেকেই বলেছিলো আমরা পারবোনা এই সিন্ডিকেট ভাঙতে কিন্তু আমরা ভেঙে দেখিয়েছি। এই পাওয়া আমাদের একার না, এই পাওয়া পুরো নারায়ণগঞ্জ বাসীর। দেশের কাজে রাষ্ট্র সংস্কারে আমরা সবাই এক হয়ে কাজ করলে কোনো অপশক্তি আমাদের থামাতে পারবে না।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদল এর মো. মোহাজ্জেম হোসেন সাগর বলেন, নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণের অন্যতম ভোগান্তির নাম ছিল নারায়ণগঞ্জ টু ঢাকা যাতায়াতের দীর্ঘ যানজটে বসে থাকা। নারায়ণগঞ্জের মেট্রো লাইন সংযুক্ত হওয়ার কারণে নারায়ণগঞ্জের সমস্ত জনগণ দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে এবং নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেল নিয়ে আসার জন্য কাজ করতে পেরে আমরা সবাই অনেক আনন্দিত এবং আমরা সবাই নারায়ণগঞ্জের জনগনের যেসকল ভোগান্তি গুলো রয়েছে সেগুলো নিরসনের জন্য কাজ করব ইনশাআল্লাহ।
জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য মো. আলিফ দেওয়ান বলেন, আমাদের দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা ছিল আমাদের নারায়ণগঞ্জের জনগণের ভোগান্তির সমাপ্তি হবে মেট্রোরেল (ঢাকা-নারায়নঞ্জ) সংযোজনের মাধ্যমে। আমরা যেসকল দাবি জানিয়েছিলাম সবার আগে আজ তা সকল নারায়ণগঞ্জবাসীর একমাত্র দাবিতে পরিনত হয়েছে। জনগণের সমর্থন আমাদের সৎ কাজে সবসময় ছিল ইন শা আল্লাহ আমরন থাকবে।
বৈছাআ মহানগরের সাবেক সহ মুখপাত্র মুনতাসির শুভ বলেন, আমি অত্যন্ত খুশি পুনরায় নারায়নগঞ্জকে মেট্রোরেলের আওতাভুক্ত করার জন্য। মেট্রোরেল পুরো নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রানের দাবি ছিল সেটি আজ আদায় হয়েছে।আমরা ছাএজনতা নারায়নগঞ্জবাসীর সকল দাবী বাস্তবায়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করে যাবে ইনশাআল্লাহ্ ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য ণগঞ জ র ন র য়ণগঞ জ ক ত কর র প রকল প আম দ র র জন য র একট
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব