চবিতে সংঘর্ষের ৬ ঘণ্টা পর আসে যৌথবাহিনী
Published: 31st, August 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সাথে রবিবার স্থানীয়দের পুনরায় সংঘর্ষ শুরু হওয়ার ৬ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে এসেছিল যৌথবাহিনী। এতে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ দীর্ঘ সময়ে স্থানীয় কিছু বাসিন্দা রামদা, চাপাতিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর মুহুর্মুহু হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত আহত হয়েছেন প্রায় পাঁচশত শিক্ষার্থী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৩১ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নং গেট সংলগ্ন এলাকায় ফের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার সাথে সাথে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে আসার জন্য ফোন করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, প্রক্টরিয়াল বডি এবং শিক্ষার্থীরা। তবে বারবার জানানোর পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ করেছেন তারা। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। এরপর পরিস্থিতি ধীরেধীরে নিয়ন্ত্রণে আসে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো.
আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম বলেন, “গতকাল রাতে সেনাবাহিনী আসছে হামলার অনেক পরে। তারপর একটা চক্কর দিয়ে শেষ। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রদের ফেলে দিয়ে আবার চলে যায়। তাদের উচিত ছিল আজকে পুরো দিন এখানে অবস্থান করা এবং সন্ত্রাসীদের পর্যবেক্ষণ করা। কিন্তু তারা চলে গেল।”
তিনি বলেন, “এরপর হামলা আবার হলো সকাল ১০ টার দিকে। আর সেনাবাহিনী আসলো ৪টার পরে, তাও তারা একটা হামলাকারীকে ধরতে পারলো না।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন বলেন, “ঘটনা শুরু হওয়ার পর থেকেই আমরা ধাপে ধাপে পুলিশ-আর্মি প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও যোগাযোগ করা হয়। প্রতিবারই তারা আমাদের বলেছে, তারা অন দ্য ওয়ে। কিন্তু তাদেরআসতে আসতে প্রায় ছয় ঘণ্টা লেগে গেছে। এতে পরিস্থিতি ভয়াবহ ও ভীষণ উত্তপ্ত হয়ে উঠে।”
তিনি বলেন, “এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ বোর্ড থেকে প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তরে এ বিষয়ে যোগাযোগ করে সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। শুধু আজ আমাদের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। কয়েকজনের অবস্থা খুব আশঙ্কাজনক।”
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আমরা জিওসি স্যার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে বারবার কথা বলেছি। এছাড়া স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথেও দফায় দফায় কথা হয়েছে। কিন্তু আমাদের পাশে কেউ ছিল না।”
তিনি বলেন, “আজ স্থানীয় সন্ত্রাসীরা এবং ছাত্রলীগের ক্যাডাররা আমাদের শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের প্রায় ৪০০-৫০০ জন আহত হয়েছে। চবির ইতিহাসে এমন ভয়াবহ দিন কখনো দেখা যায়নি। এ ভয়াবহ হামলার বিচার হতেই হবে।”
এদিকে শনিবার রাত ১২ থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় পাচঁশত শিক্ষার্থী-শিক্ষক আহত হয়েছেন বলে রাইজিংবিডি ডটকমকে অবহিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মো. শামীম উদ্দিন খান।
এম. মিজানুর রহমান/শাহেদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহত হয় ছ পর স থ ত উপদ ষ ট স ঘর ষ আম দ র য গ কর
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।
কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।
নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।
জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’