সৃজিতের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়: বাঁধন
Published: 1st, September 2025 GMT
অভিনয় জীবনের প্রতিটি ধাপেই চমক দেখিয়েছেন আজমেরী হক বাঁধন। নাটক, মডেলিং থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র—সবখানেই নিজেকে ভিন্নভাবে প্রমাণ করেছেন। শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তার প্রতিভার ঝলক পৌঁছেছে। কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসা পাওয়া কিংবা বলিউডে অভিষেক—সব মিলিয়ে বাঁধন আলোচনার শীর্ষে।
তবে তার ক্যারিয়ারের যাত্রা পথে সব অভিজ্ঞতাই সুখকর নয়, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তা প্রকাশ করেছেন এই অভিনেত্রী। কলকাতার নির্মাতা সৃজিত মুখার্জির সঙ্গে তার কাজের অভিজ্ঞতা ‘তিক্ত’ বলে দাবি তার। এ বিষয়ে বাঁধন বলেন, “আমার সৃজিতের সঙ্গে কলকাতায় শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা প্রচণ্ড খারাপ। ওই ইউনিটের সঙ্গে অভিজ্ঞতাও খুব খারাপ ছিল। তবে যারা আমাকে সাপোর্ট করেছেন, তারা হলেন চিত্রগ্রাহক, কেশবিন্যাসশিল্পী এবং রাহুল বোস। তাদের সাপোর্ট আমি সারা জীবন মনে রাখব।”
আরো পড়ুন:
বাঁধনের জীবনের পুরুষেরা
শেখ হাসিনার সঙ্গে তোলা ছবি পোস্ট করে যা বললেন বাঁধন
তবে বাঁধনের সঙ্গে সৃজিত বা তার ইউনিটের অন্য সদস্যরা কেমন ব্যবহার করেছেন, সে বিষয় বিস্তারিত জানাননি এই অভিনেত্রী।
২০২১ সালে মুক্তি পাওয়া সৃজিতের ওয়েব সিরিজ ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’-তেই প্রথম ওপার বাংলার পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেন বাঁধন। সিরিজটি বাণিজ্যিক সাফল্য না পেলেও ‘মুসকান জুবেরি’ চরিত্রে তার অভিনয় দারুণ প্রশংসিত হয়। দর্শক-সমালোচক উভয়ের কাছেই প্রশংসা কুড়ালেও, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ছিল তার কাছে তিক্ত। এতদিন সেই অভিজ্ঞতা আড়ালে থাকলেও, বহুদিন পর খোলাখুলি জানালেন এই অভিনেত্রী।
অন্যদিকে, সৃজিত মুখার্জি বরাবরই পরিচিত তার ধারালো গল্প বলার কৌশল ও ব্যতিক্রমী চরিত্র নির্মাণের জন্য। তাই বাঁধন-সৃজিত সহযোগিতাকে অনেকেই ভেবেছিলেন সৃজনশীল মেলবন্ধন। কিন্তু পর্দার সাফল্যের আড়ালে যে তিক্ততা লুকানো ছিল, তা এবার সামনে এলো।
এরপর বাঁধনের ক্যারিয়ারে নানা পালক যুক্ত হয়েছে। ২০২৩ সালে তিনি বলিউডে পা রাখেন বিশাল ভরদ্বাজ পরিচালিত ‘খুফিয়া’ সিনেমার মাধ্যমে। টাবু ও আলি ফজলের মতো নামি অভিনেতাদের সঙ্গে অভিনয় করে নিজের জায়গা আরো দৃঢ় করেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অ্যাপে পরিচয়-প্রেম, বিয়ে করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলেন চীনের যুবক
ভাষা, সংস্কৃতি ও হাজার মাইলের দূরত্বকে হার মানিয়েছে ভালোবাসা। ভালোবাসার টানে এক তরুণীকে বিয়ে করতে বাংলাদেশে এসেছেন চীনের এক যুবক। গত শুক্রবার রাতে চীন থেকে ঢাকায় পৌঁছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক তরুণীর বাসায় আসেন তিনি। আজ রোববার আদালতের মাধ্যমে তাঁরা বিয়ে সম্পন্ন করবেন।
চীনের যুবকের নাম ওয়াং তাও (৩৬)। চীনের হোয়ানান প্রদেশের ওয়াং ইচাং চাওয়ের ছেলে তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের তাহের মিয়ার মেয়ে সুরমা আক্তারের (২২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে তাঁর। সুরমা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং ঢাকার লালবাগে থাকেন। আজ রোববার তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন বলে তরুণীর পরিবার জানিয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছান চীনের যুবক ওয়াং তাও। বিমানবন্দর থেকে চীনের যুবককে আতিথেয়তা দিয়ে নিজ বাড়ি নাসিরনগরের কুন্ডার কোনাপাড়ায় নিয়ে আসেন তরুণী সুরমাসহ তাঁর পরিবারের লোকজন।
স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও তরুণীর পরিবারের দাবি, দেড় থেকে দুই মাস আগে ডেটিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে সুরমার পরিচয় হয়। তাঁরা নিয়মিত চ্যাটে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। বিষয়টি চীনের যুবক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণী নিজ নিজ পরিবারকে জানান। উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা একে অপরকে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। পরে চীনের যুবক বাংলাদেশ ও চীনের দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে দুপুরের পর থেকে চীনের যুবককে দেখার জন্য সুরমার বাড়িতে ভিড় করেন স্থানীয় লোকজন।
সুরমা স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘ওয়ার্ল্ড টক’ অ্যাপের মাধ্যমে চীনের যুবক ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে চ্যাট করতেন। একপর্যায়ে তাঁরা পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের সিদ্ধান্তে পৌঁছান।
সুরমার মা নুরেনা বলেন, ‘আমার মেয়ের ভালোবাসা পেতে চীন থেকে যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে চলে এসেছে। ওই যুবক কোনো ধর্মই বিশ্বাস করে না। মেয়েকে বিয়ে করতে প্রয়োজনে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। আগামীকাল (আজ) রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মুসলিম রীতি মেনে সুরমাকে বিয়ে করবে চীনের যুবক। এতে দুই পরিবারের সম্মতি আছে। আমরা এই বিয়েতে আনন্দিত। মেয়ের খুশিই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
নাসিরনগর থানার কুন্ডা বিট উপপরিদর্শক (এসআই) জাহান-ই-আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে কুন্ডা গ্রামে যাই। পাসপোর্ট দেখে নিশ্চিত হলাম যে যুবক চীনের নাগরিক। ওই তরুণী ঢাকার লালবাগে থাকেন। ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপসের মাধ্যমে তাঁদের পরিচয়। একপর্যায়ে তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। চীনের যুবক ইংরেজি বোঝেন না। তাই কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে কথা বলতেন। তরুণী ও তাঁর পরিবার জানিয়েছে, রোববার হলফনামার মাধ্যমে চীনের যুবক মুসলিম হবেন। তারপর তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন।’ তরুণীর বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, চীনের যুবক এক থেকে দেড় মাস থাকবেন। যাওয়ার সময় হয় ওই তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন বা পরে নিয়ে যাবেন।