‘নেতারা তো আজকে কোট-স্যুট পরে আসছেন। সবাই স্যুট-বুট পরে আসছেন। এভাবে কি খাল পরিষ্কার করা যাবে? যাবে না। গামবুট পরেন বা হাফপ্যান্ট পরেন, সবাই উৎসাহ নিয়ে নামেন,’ খাল পরিষ্কার কর্মসূচিতে অংশ নিতে যাওয়া দলের নেতাদের উদ্দেশে এই কথাগুলো বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এ সময় উপস্থিত নারীনেত্রীদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নারীনেত্রীরা কেউ কেউ পারলার থেকেও আসছেন। এভাবে হবে না। জনগণের কাছে যেতে হবে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিএনপির কথা বলতে হবে। শুধু স্লোগান দিলে বা তালি বাজালে রাজনীতি হয় না। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নদী-খাল পুনঃখনন করেছিলেন, আমাদেরও কাজ করতে হবে।’

বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বরাবর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে আসছে দলটি। এবার সেখানে খাল পরিষ্কার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তার অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় ১৫ নম্বর সেক্টরে খাল পরিষ্কারের কর্মসূচির আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। সেই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে গিয়েছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এবার খাল পরিষ্কার কর্মসূচি নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকের দিনে শোভাযাত্রা করলে রাস্তায় ভিড় হতো, মানুষের কষ্ট হতো। তাই তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা খাল পরিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পাঁচ মিনিটের জন্য খালে নামলে হবে না, আমরা দেখতে চাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আসলেই হয়েছে।’

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি গঠন করেন। বিএনপি গঠনের পর দেশে নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘তখন সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হয়েছিল, পত্র–পত্রিকা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, মানুষের ন্যূনতম অধিকার শেখ মুজিব কেড়ে নিয়েছিলেন। সেই সময় শহীদ জিয়া মানুষের জন্য কাজ করেছেন। আজকেও আমাদের নেতা–কর্মীদের মাঠে নেমে তা প্রমাণ করতে হবে।’

খাল পরিষ্কারে বিএনপির নেতা–কর্মীরা। এই কর্মসূচিতে নেতা–নেত্রীদের সুসজ্জিত চেহারায় দেখে অসন্তোষ জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি

খুলনা মহানগরীর লবণচরার বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার ঘের ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বিদ্যুৎ (২৪) হত্যা মামলার বিচার কাজ এক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনো শেষ হয়নি। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে আসামিরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন নিহতের পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে বাদীর অপর ছেলেকে হত্যার ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে। 

এ অবস্থায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা এবং আসামিদের অপতৎপরতা থেকে রক্ষা করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন নিহত বিদ্যুতের মা জাহানারা বেগম। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

আরো পড়ুন:

কেএমপির ৮ থানার ওসি রদবদল

জলবায়ু পরিবর্তন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: ইইউ রাষ্ট্রদূত

লিখিত বক্তব্যে জাহানারা বেগম বলেন, ‍“২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা আমার ছোট ছেলে মো. আলমগীর হোসেন ওরফে বিদ্যুৎকে (২৪) নগরীর খানজাহান আলী (র.) সেতু এলাকায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর ৭ ডিসেম্বর আমি বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা করি (মামল নং- ০৩)। মামলাটি বর্তমানে খুলনা মহানগর দায়রা জজ (মামলা নং: ৪৪৯/১৫) বিচারাধীন আছে।” 

“মামলায় লবণচরা বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার নাজিম খলিফার দুই ছেলে আরমান খলিফা ও আরিফ খলিফা, লবণচরা মোহাম্মদীয়া পাড়া মসজিদ এলাকার আব্দুল জলিল হাওলাদারের ছেলে হারুন হাওলাদার, লবণচরা ইব্রাহীমিয়া মাদরাসা রোড এলাকার হামিদ মিস্ত্রীর ছেলে মো. সিরাজ এবং লবণচরা মোক্তার হোসেন রোড এলাকার হযরত আলী ফকিরের ছেলে বাদল ফকিরকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিরা বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও ছিলেন। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে জেল থেকে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এই সব আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় বিভিন্ন মামলাও রয়েছে”, যোগ করেন তিনি।

জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার কলিজার টুকরো সন্তানকে হত্যা করেও সন্ত্রাসীরা ক্ষ্যান্ত হয়নি। উপরন্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা এখন মামলা তুলে নিতে আমি ও আমার এক মাত্র সন্তান এবং মামলার স্বাক্ষীদের জীবননাশসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বারবার সাধারণ ডায়রি (জিডি) করার ফলে হত্যাকারী-সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় তারা আমি ও আমার বড় ছেলেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।”

তিনি আরো বলেন, “হত্যাকারী-আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি এখন পর্যন্ত খুলনা ও লবণচরা থানায় চারটি সাধারণ ডায়রি করেছি। সর্বশেষ গত ৩ মার্চও আমি লবণচরা থানায় জিডি করি। কারণ ২ মার্চ দুপুরে মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি আরমান তার ভাই আরিফ এবং অপর আসামি জুয়েল শেখ, হারুন হাওলাদার, সিরাজ ও বাদল ফকিরসহ আরো অনেকে আমার বাসার সামনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমাকে ও আমার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বিপ্লবকেও হত্যা করবেন বলেও হুমকি দেয়। এ ছাড়া, একই ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকির কারণে আমি ২০১৪ সালের ৪ মার্চ ও ২ মে খুলনা থানায় এবং একই বছরের ৪ মে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লবণচরা থানায় সাধারণ ডায়রি করি।”

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি