নোয়াখালী শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)। আবাসন সংকটের কারণে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে অন্তত সাড়ে ৭ হাজার জনকে থাকতে হয় জেলা শহর মাইজদীতে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৈনিক পরিবহন সেবা থাকলেও সোনাপুর জিরো পয়েন্টের যানজট শিক্ষার্থীদের নিত্যদিনের দূর্ভোগে পরিণত হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের দৈনিক সময় অপচয় হচ্ছে প্রায় ২৫০০ ঘণ্টা।

আরো পড়ুন:

মাইক্রোবাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

সাতটি স্থানে পরীক্ষামূলক ট্রাফিক সিগন্যাল চালু ৩০ আগস্ট 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসে যাওয়া-আসার পথে সোনাপুর জিরো পয়েন্টে প্রায় প্রতিদিনই ২০ মিনিট পর্যন্ত আটকে থাকতে হয়। হিসাব অনুযায়ী, শিক্ষার্থীপ্রতি দৈনিক ২০ মিনিট সময় নষ্ট হলে মোট ৭ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীর জন্য অপচয় দাঁড়ায় প্রায় ২ হাজার ৫০০ ঘণ্টা। এর ফলে শুধু সময় নষ্টই নয়, ক্লাস ও পরীক্ষায় নির্ধারিত সময়ে পৌঁছানোও কঠিন হয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতি শিক্ষা জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

সরজমিনে দেখা যায়, সোনাপুর জিরো পয়েন্টে মাইজদী–বিশ্ববিদ্যালয় এবং বসুরহাট–লক্ষ্মীপুর সড়কের সংযোগস্থলে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকে। রাস্তার দুই পাশে সারি সারি সিএনজি, অটোরিকশা ও ভ্রাম্যমাণ দোকান থাকায় সড়ক সরু হয়ে যায়। পাশাপাশি বাসগুলো রাস্তার মাঝেই দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়। ফলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ট্রাফিক পুলিশ চেষ্টা করলেও কার্যকর নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না।

শিক্ষার্থীদের দাবি, যানজট নিরসনে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য সিএনজি ও অন্যান্য গাড়ির জন্য নির্দিষ্ট পার্কিং স্থল তৈরি, অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ, নিয়মিত বর্জ্য অপসারণ এবং প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে হবে।

চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, “প্রতিদিনই সোনাপুর জিরো পয়েন্ট এলাকায় তীব্র যানজটের শিকার হতে হয়। সিএনজি চালকেরা রাস্তার পাশে গাড়ি রাখে। আবার একপাশে দোকান বসিয়ে বিকিকিনির ফলে রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। এর কারণে আমরা প্রায়ই সময়মতো ক্লাস বা পরীক্ষায় পৌঁছাতে পারি না।”

তিনি আরো বলেন, “শুধু যানজটই নয়, এখানে ময়লার স্তূপ পড়ে থাকে। সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় দুর্গন্ধ বের হয়, যা আমাদের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।”

তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, সাধারণত মাইজদী থেকে ক্যাম্পাস যেতে সময় লাগে ১৫-২০ মিনিট। কিন্তু সোনাপুর জিরো পয়েন্টে যানজটের কারণে আরো ১০-১৫ মিনিট অতিরিক্ত সময় লাগে। বিশেষ করে পরীক্ষা বা ল্যাব ক্লাসের সময় শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসচালক সিরাজ উদ্দিন বলেন, “সকালে আমাদের ফেনী-লক্ষ্মীপুর-বসুরহাট রুটে যেতে হয়। তখন রাস্তার ওপর মাছের গাড়ি দাঁড় করিয়ে মাছ নামানো হয়, ফলে প্রচণ্ড যানজট তৈরি হয়। অথচ মাছ নামানোর জন্য নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। আবার সারাদিন সড়কের দুই পাশে সিএনজি দাঁড়িয়ে থাকে। অথচ আগে দক্ষিণ সোনাপুরে তাদের জন্য আলাদা স্ট্যান্ড ছিল।”

তিনি বলেন, “রাস্তার পাশে ডাস্টবিন থাকার কারণে দুর্গন্ধে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে খুব কষ্ট হয়। এসব প্রতিদিনের চিত্র। সবমিলিয়ে সোনাপুরের যানজট শিক্ষার্থীদের সময় নষ্ট, স্বাস্থ্যের ক্ষতি, অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ এমনকি গাড়ির ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি, আবারো জানাচ্ছি—এলাকার সবচেয়ে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নোবিপ্রবির রাস্তা অন্তত পরিচ্ছন্ন ও নির্বিঘ্ন হওয়া উচিত।”

যানজটের বিষয়ে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, “এখানে বেশিরভাগ গাড়িই লোকাল। তাদের জন্য নির্দিষ্ট কোনো পার্কিং ব্যবস্থা নেই। ফলে তারা রাস্তার জায়গা দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি।”

এ বিষয়ে নোবিপ্রবি উপ-উপচার্য  অধ্যাপক ড.

মো. রেজুয়ানুল হক বলেন, “আমরা ভর্তি পরীক্ষার সময় ট্রাফিক বিভাগকে বলছিলাম যাতে এখানে জ্যাম না হয়। এটা আমরা আবার বলবো যেন সবসময় শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে যাতায়ত করতে পারে। আর এই রোডে চার লেনের কাজ শুরু হবে। চার লেন হলে আশাকরি জ্যাম থাকবে না।”

ঢাকা/শফিউল্লাহ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন ন ব প রব র য নজট র জন য পর ক ষ স এনজ

এছাড়াও পড়ুন:

কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব

বায়ার্ন মিউনিখ ৩–১ চেলসি

২০১২ সালে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ইতিহাস গড়েছিল চেলসি। ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে টাইব্রেকারে হারিয়ে প্রথমবারের মতো পরেছিল ইউরোপসেরার মুকুট।

 তবে এরপর থেকে বায়ার্নের সঙ্গে মুখোমুখি সব ম্যাচেই হেরেছে চেলসি। লন্ডনের ক্লাবটি পারল না আজও। হ্যারি কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে ৩–১ ব্যবধানে হারিয়েছে বায়ার্ন।

আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ম্যাচের ২০ মিনিটে বায়ার্ন প্রথম গোলটা পেয়েছে উপহারসূচক। চেলসির সেন্টার–ব্যাক ট্রেভোহ চালোবাহ নিজেদের জালে বল জড়ালে এগিয়ে যায় বাভারিয়ানরা।

কিছুক্ষণ পরেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কেইন। এবার ভুল করে বসেন চেলসির মইসেস কাইসেদো। নিজেদের বক্সে কেইনকে কাইসেদো অযথা ট্যাকল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।

নতুন মৌসুমে গোলের পর গোল করেই চলেছেন হ্যারি কেইন

সম্পর্কিত নিবন্ধ