“প্রশিক্ষণ দিয়েছে আত্মবিশ্বাস, পোশাক দিয়েছে মর্যাদা সড়ক হবে নিরাপদ যাত্রী পাবে সুরক্ষা” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গ্রীন এন্ড ক্লিন নারায়ণগঞ্জ কর্মসূচির আওতায় গ্রীন আমব্রেলা উদ্যোগ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পেশাদার গাড়িচালক ও হেলপারদের বিশেষ প্রশিক্ষণ পরবর্তী ইউনিফর্ম ও পরিচয় পত্র প্রদান করা হয়েছে। 

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) জেলা শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গণে প্রধান অতিথি বিআরটিএ চেয়ারম্যান জনাব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ এবং জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা এর সভাপতিত্বে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মদ্য দিয়ে এ ইউনিফর্ম ও পরিচয় পত্র প্রদান করা হয়। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সরকারি দপ্তর প্রধানগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিকেএমইএ সভাপতি, চেম্বার কমার্স প্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি ড্রাইভার ও হেলপার, বাস মালিক সমিতি ,শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধি, প্রেসক্লাব সভাপতি এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। 
অনুষ্ঠানে প্রস্তুতকৃত ডাটাবেজ অনুযায়ী সরকারি ও বেসরকারি ড্রাইভার ও হেলপারদের  বিশেষ প্রশিক্ষণ পরবর্তী ইউনিফর্ম ও পরিচয় পত্র প্রদান করা হয়।

এছাড়া দশজন লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভারকে লাইসেন্স প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলার গণপরিবহন ব্যবস্থাপনা আরো দক্ষ ও কার্যকর করবার জন্য vehicle management system (VMS) সফটওয়্যার তৈরির প্রক্রিয়া চলমান আছে।

অনুষ্ঠানে হেলপার, সরকারি ও বেসরকারি পেশাদার চালক,বাস মালিক সমিতি ,শ্রমিক ইউনিয়ন এর পক্ষ থেকে একজন করে প্রতিনিধি বক্তব্য প্রদান করেন।  বক্তব্যে তারা এই অনন্য উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয় এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং এ উদ্যোগ তাদের পেশাগত নিরাপত্তা ও মর্যাদা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে জেলা প্রশাসক তাঁর এধরনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ এর মাধ্যমে সড়ক ব্যবস্থাপনায় বিপ্লবের সূচনা করায় তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে সকলকে নাগরিকের দায়বদ্ধতা থেকে ভূমিকা রাখার আহবান জানান ।

জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে বলেন, পরিবহন সেক্টর এর মতো এত বড় একটি সেক্টর অবহেলিত রেখে উন্নত রাষ্ট্র গঠন সম্ভব নয় । এই উদ্যোগ একদিকে যেমন পরিবর্তনশীল ও উন্নত প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চালকদের দক্ষতা বৃদ্ধি করবে একইসাথে তাদের মধ্যে সচেতনতাবোধ সৃষ্টিতে সহায়ক হবে।
অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত চার পরিবারের প্রত্যেকের কাছে ৫ লাখ টাকার চেক হস্তানর করেন।

এছাড়া জেলা প্রশাসক মহোদয় চালক-হেলপারদের কল্যাণার্থে গ্রিন একাউন্ট নামে একটি কল্যাণ ফান্ড চালু করে প্রাথমিকভাবে দুই লাখ টাকা প্রদানের ঘোষণা দেন এবং সকল বিত্তবানকে শরীক হয়ে একটি নিরাপদ সড়ক গড়ার আহবান জানান ।

গ্রীন আমব্রেলা কর্মসূচি কেবল একটি প্রকল্প নয়, এটি একটি প্রতিশ্রুতি.

নিরাপদ, শৃঙ্খলাবদ্ধ ও মানবিক পরিবহনের অঙ্গীকার।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ চ লক অন ষ ঠ ন উদ য গ ন র পদ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা

মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।

জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।

দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।

সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।

অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতিআগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন টিআইবির
  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • ডাকসুর ব্যালট পেপারে ২ ভোট নিয়ে যা বলছে নির্বাচন কমিশন
  • নরসিংদীতে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি স্থগিত
  • দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা: দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • গাজায় পাগলের মতো বোমা ফেলছে ইসরায়েল
  • ফতুল্লা পুলিশের সহায়তায় আপন ঠিকানায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী
  • দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
  • ফতুল্লায় প্রতারণা করে ১৫ লাখ টাকার রড নিলো প্রতারক চক্র, কুমিল্লায় গ্রেপ্তার ৩