ইতিহাস গড়লেন ব্রিটজকে, ওয়ানডেতে রেকর্ডের পর রেকর্ড
Published: 4th, September 2025 GMT
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যান ম্যাথিউ ব্রিটজকে নিজের নাম লিখিয়েছেন ওডিআই ইতিহাসের সোনালি পাতায়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তিনি গড়েছেন অভূতপূর্ব রেকর্ড। তার প্রথম পাঁচ ইনিংসে টানা পাঁচটি হাফ-সেঞ্চুরি। এর মাধ্যমে তিনি ভেঙে দিলেন ভারতের নবজ্যোত সিং সিধুর দীর্ঘদিনের রেকর্ড।
২৬ বছর বয়সী ব্রিটজকে এখন পর্যন্ত খেলেছেন পাঁচটি ওয়ানডে ম্যাচ। আর প্রতিটিতেই করেছেন ফিফটি প্লাস স্কোর— ১৫০, ৮৩, ৫৭, ৮৮ এবং সর্বশেষ আজ খেলেছেন ৮৫ রানের ইনিংস। ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে এর আগে কোনো ব্যাটার অভিষেকের পর প্রথম পাঁচ ইনিংসে টানা এমন ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি। পাশাপাশি, তিনি এখন অভিষেকের পর পাঁচ ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের মালিকও।
আরো পড়ুন:
অভিষেকেই দুঃস্বপ্ন, লজ্জার রেকর্ড গড়লেন ইংলিশ পেসার সনি বেকার
বল হাতে রশিদ খানের বিশ্বরেকর্ড
লর্ডসে আজ বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ব্রিটজকে খেলেন ৭৭ বলে ৭টি চার ও ৩ ছক্কায় ৮৫ রানের ইনিংস। এরপর জোফরা আর্চারের শিকারে পরিণত হন। তবে আউট হওয়ার আগে তিনি গড়ে দেন ১৪৭ রানের জুটি ট্রিস্টান স্টাবসের সঙ্গে, যখন দক্ষিণ আফ্রিকা ৯৩ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ছিল চাপে।
ওপেনার আইডেন মার্করাম (৪৯) ও রায়ান রিকেলটন (৩৫) ভালো শুরু করলেও বড় ইনিংসে রূপ দিতে পারেননি। অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ব্যর্থ হয়েছেন মাত্র ৪ রানে। তবে ব্রিটজকের ব্যাট থেকে আসা ইনিংসের পর ট্রিস্টান স্টাবসের ৫৮, ডেওয়াল্ড ব্রেভিসের ৪২ ও করবিন বশের অপরাজিত ৩২ দক্ষিণ আফ্রিকাকে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে নেয়। তাতে ৮ উইকেট হারিয়ে তারা ৩৩০ রানের সংগ্রহ পায়।
ইংল্যান্ডের হয়ে জোফরা আর্চার নিয়েছেন ৪টি উইকেট। ২টি উইকেট নিয়েছেন আদিল রশিদ।
প্রথম ম্যাচ জিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা প্রোটিয়ারা আজ জিতলে নিশ্চিত হবে সিরিজ জয়।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ক ট র কর ড ব র টজক র কর ড উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
একাই মাসে শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তৈয়বুর
সুনামগঞ্জে জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে যাঁদের নাম প্রথমেই মনে আসে, তাঁদের একজন তৈয়বুর রহমান (২৬)। তিনি নিজে নিয়মিত রক্ত দেন, রক্ত সংগ্রহ করে দেন এবং মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে উৎসাহিত করেন। রক্তের টানে মানুষের পাশে দাঁড়ানোতেই তাঁর আনন্দ।
একটি বেসরকারি ব্যাংকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রক্তদানের এই মানবিক কাজকে নিজের করে নিয়েছেন তিনি। কয়েক বছর আগে একাই মানুষের জন্য রক্ত জোগাড় করতেন। এখন তিনি ব্লাড লিংক সুনামগঞ্জ নামের স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ফলে কাজের পরিধি বেড়েছে কয়েক গুণ। মাসে একাই শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। সংগঠনে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আড়াই হাজারের বেশি রোগীর জন্য রক্ত জোগাড় করে দিয়েছেন। তাঁর কাছে আছে প্রায় এক হাজার রক্তদাতার ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও যোগাযোগের তালিকা। সুনামগঞ্জে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী ও সংগঠকেরাও তাঁকে সহযোগিতা করেন।
তৈয়বুর রহমানের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে। তিনি ইসলামী ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। রক্তের প্রয়োজনে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ, পরিবহন বা দৌড়ঝাঁপ—সবকিছুর ব্যয়ই মেটান নিজের স্বল্প বেতন থেকে।
রক্তদানের শুরুর স্মৃতি বলতে গিয়ে তৈয়বুর রহমান জানান, ২০২০ সালে তিনি তখন নারায়ণগঞ্জে কর্মরত ছিলেন। এক সহকর্মীর অনুরোধে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর জন্য রক্ত দিতে ছুটে যান চাষাড়া এলাকায়। কিন্তু ওজন কম থাকায় রক্ত দিতে পারেননি। পরে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুর জন্য আবার হাসপাতালে যান এবং এবার রক্ত দিতে সক্ষম হন। প্রথমে কিছুটা ভয় ভয় ছিল তাঁর। পরে এটা কেটে যায়।
সুনামগঞ্জে বদলি হয়ে ফিরে এসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে মানুষের জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে থাকেন বলে জানান তৈয়বুর রহমান। নিজের এলাকায় রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার আয়োজন ও সচেতনতা ক্যাম্পেইনও করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন। অধিকাংশই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য। ঈদের দিনও রক্ত দিয়েছেন তিনি। জেলা সদর হাসপাতাল ও শহরের সব বেসরকারি ক্লিনিকেই তাঁর নম্বর আছে। কোনো রোগীর জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে সেখান থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় ভূমিকা হলো রোগীর জন্য উপযুক্ত রক্তদাতা খুঁজে বের করা।
তৈয়বুর রহমান বলেন, রক্তদানের পর কিছু পরিবার এখনো তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, খবর নেয়। আবার কেউ কেউ রক্ত সংগ্রহে একটু দেরি হলে মনঃক্ষুণ্ন হন। কেউ রক্ত পেয়ে ধন্যবাদ দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেন না। তবু মন খারাপ করেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে তাহিরপুর উপজেলার এক প্রসূতি বোনকে রক্ত দিয়েছিলাম। এখনো ওই পরিবার যোগাযোগ রাখে। সময়-অসময় খোঁজ নেয়। এটা ভালো লাগে, এটা অন্য রকম রক্তের সম্পর্ক। এই কাজ করে আনন্দ পাই, তৃপ্তি পাই। যত দিন পারি, এই কাজ করে যাব।’
এখন পর্যন্ত ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন তৈয়বুর রহমান