পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে নাব্য সংকটে ফেরি চলাচল ব্যাহত
Published: 5th, September 2025 GMT
রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ রুটে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যানবাহন ও যাত্রীর চাপ কিছুটা কমলেও এখনো প্রতিদিন গড়ে তিন হাজারের বেশি গাড়ি এই নৌ পথ ব্যবহার করে চলাচল করছে। রাজধানীর কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল, মিরপুর, উত্তরা, গাজীপুরের চন্দ্রা, টঙ্গী, সাভার, আশুলিয়া, জিরাবো ও হেমায়েতপুর শিল্প এলাকার হাজারো কর্মজীবী মানুষ এই রুটেই যাতায়াত করেন।
স্বাভাবিক সময়ে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট পারাপারে চাপ তেমন না থাকলেও, ছুটির দিনগুলোতে যাত্রী ও যানবাহনের ভিড় কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ১৫টি ফেরি চলাচল করায় যাত্রী ও যানবাহনের ভিড় সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছিল না কর্তৃপক্ষকে। তবে, সম্প্রতি ঘাট এলাকায় ভাঙন ও নদীর নাব্য সংকটের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে পদ্মার ভাঙনে পাটুরিয়া ঘাট বারবার হুমকির মুখে পড়ছে। ঘাটের পন্টুনগুলো বারবার সরাতে হচ্ছে। মেরামত ও সংস্কারকাজ চলাকালে লোড-আনলোড বন্ধ থাকায় ফেরি পেতে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনকে। ফলে ঘাট এলাকায় ভোগান্তি বাড়ছে।
আরো পড়ুন:
বান্দরবানে ভাঙা সেতুতে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো
বেহাল সড়কে চরম ভোগান্তি
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে নাব্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত ২১ আগস্ট থেকে নাব্য কমে যাওয়ায় দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাট পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। বর্তমানে বিকল্প দুইটি ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। ঘাট কমে যাওয়ায় সেখানে ফেরি লোড-আনলোডে সময় বেশি লাগছে। পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ফেরি পার হতে ১০ থেকে ২০ মিনিট বেশি সময় লাগছে।
গোল্ডেন লাইন পরিবহনের চালক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, “নদীতে স্রোত তীব্র থাকায় পারাপারে সময় বেশি লাগে। দৌলতদিয়ার একটি ঘাট বন্ধ থাকায় ফেরি লোড-আনলোডে দেরি হয়। গত সপ্তাহে ভাঙনের কারণে পাটুরিয়াতেও ঘাট সংকট তৈরি হয়েছিল। এখন কিছুটা ঠিক হলেও ভাঙন থামেনি।”
সাভারের হেমায়েতপুরে একটি শিল্পকারখানায় কর্মরত উত্তম সরকার বলেন, “প্রতি সপ্তাহের ছুটিতে রাজবাড়ীতে যাই। গত মাস থেকে উভয় ঘাটে সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তি চরমে উঠেছে। আগে নিয়মিত যেতাম, এখন ভোগান্তির ভয়ে বাড়ি যাওয়া কমিয়ে দিয়েছি।”
ট্রাকচালক রুস্তম ব্যাপারি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এক ঘাটের সমস্যা ঠিক হইলে আরেক ঘাটে সমস্যা শুরু হয়। বর্ষায় এ ভোগান্তি বেশি বাড়ে। ঘাটে বেশি দেরি হলে আমাগো খাওন-দাওনের খরচও বাড়ে।”
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মুহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, “নাব্য সংকটের কারণে ৭ নম্বর ঘাট বন্ধ রয়েছে। এখন দুইটি ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। স্রোতের কারণে ফেরি পার হতে সময় কিছুটা বেশি লাগলেও ঘাট এলাকায় বড় ধরনের ভোগান্তি নেই।”
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটের দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের এজিএম (বাণিজ্য) সালাম হোসেন বলেন, “গত মাসে ভাঙনের কারণে একাধিকবার পন্টুন সরাতে হয়েছে। তখন একেক সময় একেক ঘাট বন্ধ ছিল। তবে বর্তমানে তিনটি ঘাট সচল রয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকি থাকলেও ঘাট সচল রাখতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যথেষ্ট সংখ্যক ফেরি চলাচল করায় বড় কোনো ভোগান্তি নেই।”
ঢাকা/চন্দন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ট র য় দ লতদ য় ফ র ঘ ট দ লতদ য়
এছাড়াও পড়ুন:
বাহরাইনের প্রতি বাংলাদেশিদের জন্যে ভিসা চালুর অনুরোধ
ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, দক্ষ ও আধা দক্ষ শ্রমিকসহ বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা সুবিধা পুনরায় চালু করতে বাহরাইনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
উপদেষ্টা দু’দেশের জনগণের সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে ভিসা পুনরায় চালুর এ অনুরোধ জানান।
বাহরাইনে ২১তম আইআইএসএস মানামা সংলাপের ফাঁকে শনিবার (১ নভেম্বর) দেশটির উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল বিন খালিফা আল ফাদেলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন তিনি। এ সময়ে ভিসা পুনরায় চালুর অনুরোধটি জানান উপদেষ্টা।
রবিবার (২ নভেম্বর) ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে তৌহিদ হোসেন কমিউনিটির কল্যাণ নিশ্চিত এবং সামাজিক সম্পর্ক মজবুতের লক্ষ্যে বাহরাইনে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ‘ফ্যামিলি ভিসা’ প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করারও অনুরোধ জানান।
বাহরাইনের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটির অর্থনীতিতে বাংলাদেশের নাগরিকদের অবদানের প্রশংসা করেন। তিনি জানান, তার দেশের সরকার ধাপে ধাপে ভিসা সুবিধা পুনরায় চালুর জন্য কাজ করছে।
বৈঠকে উভয়ে দু’দেশের দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হস্তান্তরে একটি চুক্তি সম্পাদনের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেন।
তৌহিদ হোসেন ২১তম মানামা সংলাপের অধিবেশনের পাশপাশি আরো কিছু অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। এসব আয়োজনে বিশ্ব নেতা, বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও নীতি নির্ধারকরা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করবেন।
তথ্যসূত্র: বাসস
ঢাকা/ইভা