থাইল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে এগিয়ে ধনকুবের ব্যবসায়ী
Published: 5th, September 2025 GMT
থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টে আজ শুক্রবার এক ডানপন্থী ধনকুবের ব্যবসায়ীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভোট দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এর ফলে দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা এক শীর্ষ রাজনৈতিক পরিবারকে গদি হারাতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে পরিবারটির নেতা আদালতের নির্দেশে পদচ্যুত হয়েছেন।
২০২৩ সালের নির্বাচনের পর থেকে শক্তিশালী সিনাওয়াত্রা পরিবারের ফিউ থাই পার্টি থাইল্যান্ডের শীর্ষ পদ দখল করে রেখেছিল; কিন্তু গত সপ্তাহে আদালতের রায়ে এ পরিবারের উত্তরসূরি পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে পদচ্যুত করা হয়।
ক্ষমতার শূন্যস্থান পূরণে তৎপর হয়ে নির্মাণ খাতের সফল ব্যবসায়ী অনুতিন চার্নভিরাকুল বিরোধী দলের যথেষ্ট সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হয়েছেন। এ সমর্থন তাঁকে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে সুবিধাজনক সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী পদে এ ভোট শুরু হওয়ার কথা স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (জিএমটি ০৩:০০)। পার্লামেন্ট ভবনটি অনুতিনের পারিবারিক নির্মাণপ্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে।
পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী পদে ভোট শুরু হওয়ার কথা স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (জিএমটি ০৩:০০)। পার্লামেন্ট ভবনটি অনুতিনের পারিবারিক নির্মাণ প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে।অনুতিন গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে একমাত্র সাধারণ শত্রু হলো যিনি দেশের শত্রু। আমাদের একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে।’
৫৮ বছর বয়সী অনুতিন আগে উপপ্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে তিনি সম্ভবত সবচেয়ে বেশি পরিচিত ২০২২ সালে গাঁজা আইনসিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য।
পর্যটননির্ভর দেশ থাইল্যান্ডে কোভিড-১৯ মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অনুতিন পশ্চিমা দেশগুলোকে ভাইরাস ছড়ানোর জন্য দোষারোপ করেছিলেন এবং পরে সমালোচনার মুখে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন।
অনুতিন একসময় পেতংতার্নের জোটকে সমর্থন করেছিলেন; কিন্তু এ গ্রীষ্মে প্রতিবেশী কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্তসংক্রান্ত বিরোধের সময় তাঁর আচরণে আপত্তি প্রকাশ করে ওই সমর্থন ত্যাগ করেন তিনি।
থাইল্যান্ডের সংবিধানিক আদালত গত ২৯ আগস্ট এক সিদ্ধান্তে জানিয়েছিলেন, পেতংতার্নের আচরণ মন্ত্রিপরিষদ নীতির লঙ্ঘন। আদালতের আদেশে মাত্র এক বছরের শাসনের পর তাঁকে বরখাস্ত করা হয়।
এ অবস্থায় একাই এগিয়ে গিয়ে অনুতিন সর্ববৃহৎ বিরোধী দল পিপলস পার্টির ১৪৩ আসনের সমর্থন পেতে সক্ষম হয়েছেন। তবে তাঁকে শর্ত দেওয়া হয়েছে, পার্লামেন্টকে চার মাসের মধ্যে ভেঙে নতুন নির্বাচন করতে হবে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে একমাত্র সাধারণ শত্রু হলো, যিনি দেশের শত্রু। আমাদের একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে।অনুতিন চার্নভিরাকুল, প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থীতবু, অনুতিনের নিজের দল ভুমজয়থাই পার্টির নির্ভরযোগ্য সমর্থন ও অন্যান্য ছোট অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে তিনি সরকার গঠনের জন্য প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে। ভুমজয়থাই পার্লামেন্টের তৃতীয় বৃহত্তম দল।
সিনাওয়াত্রার ফিউ থাই দল এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হিসেবে কাজ করছে এবং আজকের ভোটের আগে পার্লামেন্ট ভাঙার জন্য রাজার কাছে চূড়ান্ত আবেদন করেছিল।
তবে অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই জানিয়েছেন, রাজকীয় কর্মকর্তারা এ আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁদের মতে, অন্তর্বর্তী প্রশাসন হিসেবে ফিউ থাই দলের এ পদক্ষেপ গ্রহণের বৈধতা নিয়ে ‘বিবাদমূলক আইনি সমস্যা’ রয়েছে।
আজকের ভোটের আগে ফিউ থাই দল ঘোষণা করেছে, তারা চাইকাসেম নিতিসিরিকে তাদের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে রাখবে। সিনাওয়াত্রা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বিচারমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
ভোট জিতি বা হারি-এটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়।সোরাওয়ং থিয়েনথং, ফিউ থাই পার্টির সেক্রেটারি জেনারেলগতকাল ফিউ থাই পার্টির সেক্রেটারি জেনারেল সোরাওয়ং থিয়েনথং হতাশার সুরে এএফপিকে বলেন, ‘ভোট জিতি বা হারি—এটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়।’
প্রসঙ্গত, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে বরখাস্ত হওয়া পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা গত জুনে কম্বোডিয়ার সাবেক নেতা হুন সেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন। আদালতের রায়ে বলা হয়, ওই ফোনকলে নৈতিকতা লঙ্ঘন করেছেন পেতংতার্ন।
ফোনকলে পেতংতার্নকে আপসমূলক মনোভাব প্রকাশ করতে দেখা যায়। থাইল্যান্ডের সামরিক কমান্ডারদের সমালোচনাও করেছিলেন তিনি। পরে যদিও আত্মপক্ষ সমর্থন করে পেতংতার্ন বলেছিলেন, ওই ফোনকলের মাধ্যমে কূটনৈতিক সাফল্য পেতে চাইছিলেন তিনি।
আরও পড়ুনএকটি ফোনকল ফাঁস কীভাবে থাই প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক জীবনে সর্বনাশ ডেকে আনল৩০ আগস্ট ২০২৫পেতংতার্নের বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রার পুরোনো বন্ধু হুন সেন। পেতংতার্ন বলেন, ওই ফোনের কথাবার্তা গোপন থাকা উচিত ছিল। ফোনের আলাপ–আলোচনা ফাঁস ছিল তিনি ও তাঁর দল ফিউ থাই পার্টির জন্য খুবই অস্বস্তিকর। এর জেরে পেতংতার্নের পদত্যাগের দাবি ওঠে। ক্ষমতাসীন জোটে তাঁর সবচেয়ে বড় অংশীদার দলও সরকার ছেড়ে যায়। এতে পার্লামেন্টে খুব সীমিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টিকে ছিলেন তিনি।
ফোনের আলোচনা ফাঁসের ঘটনার পর গত জুলাইয়ে সাংবিধানিক আদালতের নয় বিচারকের সাতজনই পেতংতার্নের প্রধানমন্ত্রিত্ব স্থগিত রাখার পক্ষে ভোট দেন। বিচারকদের প্রায় সবাই একই সিদ্ধান্ত দেওয়ায় এটা বোঝাই যাচ্ছিল যে চার উত্তরসূরির মতো একই ভাগ্য বরণ করতে যাচ্ছেন পেতংতার্ন। তাই তাঁকে বরখাস্ত করে দেওয়া আদালতে রায় অবাক করে দেওয়ার মতো কিছু ছিল না।
আরও পড়ুনপেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করলেন থাইল্যান্ডের আদালত২৯ আগস্ট ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক বরখ স ত স ত কর মন ত র ন র জন অন ত ন র জন য পর ব র কর ছ ল ন কর ছ ফ নকল
এছাড়াও পড়ুন:
কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব
বায়ার্ন মিউনিখ ৩–১ চেলসি
২০১২ সালে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ইতিহাস গড়েছিল চেলসি। ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে টাইব্রেকারে হারিয়ে প্রথমবারের মতো পরেছিল ইউরোপসেরার মুকুট।
তবে এরপর থেকে বায়ার্নের সঙ্গে মুখোমুখি সব ম্যাচেই হেরেছে চেলসি। লন্ডনের ক্লাবটি পারল না আজও। হ্যারি কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে ৩–১ ব্যবধানে হারিয়েছে বায়ার্ন।
আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ম্যাচের ২০ মিনিটে বায়ার্ন প্রথম গোলটা পেয়েছে উপহারসূচক। চেলসির সেন্টার–ব্যাক ট্রেভোহ চালোবাহ নিজেদের জালে বল জড়ালে এগিয়ে যায় বাভারিয়ানরা।
কিছুক্ষণ পরেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কেইন। এবার ভুল করে বসেন চেলসির মইসেস কাইসেদো। নিজেদের বক্সে কেইনকে কাইসেদো অযথা ট্যাকল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
নতুন মৌসুমে গোলের পর গোল করেই চলেছেন হ্যারি কেইন