লিগস কাপ ফাইনালে বিতর্কিত ঘটনার জেরে বড় শাস্তির মুখে পড়লেন ইন্টার মায়ামির তারকা লুইস সুয়ারেজ। সিয়াটল সাউন্ডার্সের স্টাফ সদস্যের ওপর থুতু নিক্ষেপ করায় তাকে ছয় ম্যাচ নিষিদ্ধ করেছে লিগস কাপ আয়োজক কমিটি।

গত রোববার অনুষ্ঠিত ফাইনালে মায়ামিকে ৩–০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জেতে সাউন্ডার্স। তবে ম্যাচ শেষে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে সতীর্থ ও কোচরা মিলে সুয়ারেজকে ধরে রাখতে বাধ্য হন। এ সময়ই প্রতিপক্ষ দলের এক স্টাফের দিকে থুতু ছুড়ে বসেন উরুগুইয়ান তারকা।

আরো পড়ুন:

এবার প্রতিপক্ষের কোচকে থুতু মেরে বড় শাস্তির মুখে সুয়ারেজ

মেসি-সুয়ারেজ জোড়ায় উড়ল ইন্টার মায়ামি

শুধু সুয়ারেজই নয়, মায়ামির আরও দুজন খেলোয়াড়ের শাস্তি হয়েছে। মিডফিল্ডার সার্জিও বুসকেটস সাউন্ডার্সের তরুণ খেলোয়াড় ওবেদ ভার্গাসকে ঘুষি মারায় তাকে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর ডিফেন্ডার তোমাস আভিলেসকে তিন ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড করেছে কমিটি।

অন্যদিকে, সাউন্ডার্স কোচিং স্টাফের সদস্য স্টিভেন লেনহার্টকেও পাঁচ ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছে লিগস কাপের নিয়ম ভঙ্গ করায়।

আয়োজক কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ হওয়া চারজনের প্রত্যেককেই জরিমানাও দিতে হবে এবং এসব নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী লিগস কাপ আসরগুলোতে কার্যকর হবে, যতদিন না সম্পূর্ণ মেয়াদ শেষ হয়। একইসঙ্গে এমএলএস চাইলে আরও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে।

তবে এ শাস্তি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হচ্ছে না। কারণ, লিগস কাপ প্রতি গ্রীষ্মে অনুষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ, ২০২৬ আসরে এসব নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। এদিকে সুয়ারেজ ও বুসকেটসের মায়ামির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ চলতি মৌসুম শেষেই শেষ হচ্ছে।

ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের ভুল স্বীকার করে দুঃখপ্রকাশ করেছেন সুয়ারেজ। তিনি লিখেছেন, “ম্যাচ শেষে অতিরিক্ত উত্তেজনা ও হতাশার মুহূর্তে কিছু ঘটেছে যা হওয়া উচিত ছিল না। তবে তাতেও আমার আচরণের সাফাই মেলে না। আমি ভুল করেছি এবং আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি। এটা সেই ছবি নয় যা আমি আমার পরিবার, ক্লাব বা সমর্থকদের সামনে তুলে ধরতে চাই।”

পরবর্তীতে ইন্টার মায়ামিও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা লিগস কাপ ফাইনালের পর ঘটে যাওয়া সব ধরনের অশোভন আচরণকে নিন্দা জানাচ্ছে।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল স উন ড র স

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা

মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।

জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।

দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।

সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।

অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতিআগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন টিআইবির
  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • ডাকসুর ব্যালট পেপারে ২ ভোট নিয়ে যা বলছে নির্বাচন কমিশন
  • নরসিংদীতে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি স্থগিত
  • দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা: দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • গাজায় পাগলের মতো বোমা ফেলছে ইসরায়েল
  • ফতুল্লা পুলিশের সহায়তায় আপন ঠিকানায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী
  • দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
  • ফতুল্লায় প্রতারণা করে ১৫ লাখ টাকার রড নিলো প্রতারক চক্র, কুমিল্লায় গ্রেপ্তার ৩