শিক্ষার্থীকে রাজাকারের বাচ্চা বললে ওই শিক্ষকের চাকরিচ্যুতি করা হবে: আব্দুল ওয়াহেদ
Published: 6th, September 2025 GMT
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর সর্বপ্রথম গঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ। খোমেনী-ইহসান নেতৃত্বাধীন দলটি মুসলিম জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। দলটির ছাত্র সংগঠন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ।
নতুন সংগঠন হলেও বিভিন্ন ধরনের ব্যতিক্রমী ও বিপ্লবী কর্মসূচি দিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনায় উঠে এসেছে সংগঠনটির নাম। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহেদ এবারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে লড়ছেন।
আরো পড়ুন:
ডাকসু নির্বাচন: ভোটের দিন বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি
ডাকসু নির্বাচন: ছাত্র অধিকার পরিষদের ১৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা
সম্প্রতি তিনি বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কর্মযজ্ঞ, ছাত্রদের জন্য নিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, জাতির প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে কথা বলেছেন রাইজিংবিডি ডটকমের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাইজিংবিডি ডটকমের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি ই এম সৌরভ।
রাইজিংবিডি: আপনার দৃষ্টিতে ঢাবির প্রধান সংকটগুলো কী কী?
আব্দুল ওয়াহেদ: ঢাবির সংকটগুলোর মধ্যে প্রধান আবাসন সমস্যা। এর পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যার মধ্যে রয়েছে শিক্ষার্থীদের জীবনমানের দুরাবস্থা, পরিবহন সমস্যা, গবেষণায় বাজেট বরাদ্দ কম, নারীদের অনলাইনে ও অফলাইনে নিরাপত্তা ঘাটতি ইত্যাদি।
রাইজিংবিডি: আপনারা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। ইশতেহারে অন্যান্য সংগঠনের থেকে ভিন্ন ধর্মী প্রতিশ্রুতিগুলো আসলে কী কী এবং কেন দিয়েছেন?
আব্দুল ওয়াহেদ: আমাদের ভিন্নধর্মী অনেকগুলো ইশতেহার রয়েছে। বাংলাদেশের আন্দোলন সংগ্রাম, বাংলার সালতানাতের যে ঐতিহাসিক পয়েন্টগুলো রয়েছে, সবগুলো সংরক্ষণ করার জন্য আমরা একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এর মাধ্যমে সব আন্দোলন সংগ্রামের বিবরণ সবাই জানবে। এছাড়া আমাদের অন্যতম দফা রয়েছে কুরআনের আয়াত ‘রব্বি যিদনি ইলমা’ সংবলিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো পুনর্বহাল করতে হবে। এছাড়া রয়েছে হল রাজনীতি নিষিদ্ধ।
পাশাপাশি নারী স্বাধীনতা নিশ্চিতে আমাদের অনেকগুলো মতামত রয়েছে। ছাত্রীদের পিরিয়ড চলাকালীন সময় অনলাইনে ক্লাসে অংশগ্রহণ এবং পরীক্ষার বদলে অনলাইনে এসাইনমেন্ট জমাদানের নিয়ম করা এবং গর্ভবতী ছাত্রীদের জন্য ২ বছর পর্যন্ত মাতৃত্বকালীন ছুটি। এছাড়া ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে আমরা শক্ত অবস্থানের কথা বলেছি। কোনো শিক্ষার্থীকে কোনো শিক্ষক রাজাকারের বাচ্চা বললে ওই শিক্ষকের চাকরিচ্যূতিসহ জরিমানা করা হবে।
আমরা আবাসিক হল সংস্কার, স্টার্ট আপ হাব প্রতিষ্ঠা সেটার উপরে আমরা জোর দিয়েছি। ক্যারিয়ার গঠনে আমরা বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছি। এসব বিষয়ে আমি মনে করি অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোর চেয়ে আমরা ভিন্নধর্মী প্রস্তাবনা দিয়েছি।
রাইজিংবিডি: নির্বাচনে জিতলে আপনারা এই ইশতেহার বাস্তবায়ন যে করতে পারবেন, তার গ্যারান্টি কী?
আব্দুল ওয়াহেদ: আমরা এ পর্যন্ত যা বলেছি, তাই ঘটেছে। সেক্ষেত্রে এটাকে আমরা মনে করি একটা রূপরেখা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বিপ্লবী পরিবর্তনে আমরা যে রূপরেখা দিয়েছি, তা আজ হোক কাল না হোক বাস্তবায়ন হবেই। এসব ইশতেহার আমি নির্বাচিত হলে বাস্তবায়িত করব। আর আমি যদি নির্বাচিত নাও হই, তাহলে যারা নির্বাচিত হবে তাদের এগুলো করতে বাধ্য করব।
রাইজিংবিডি: শিক্ষার্থীরা আপনাদের কেন ভোট দেবে?
আব্দুল ওয়াহেদ: আমরা ইতোপূর্বে অনেকগুলো কাজ করেছি। এর মধ্যে আমরা হিজাবকে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে ঘোষণা করে আমরা ৫০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে হিজাব বিতরণ করেছি। যাতে হিজাবোফোবিয়ার বিরুদ্ধে মেসেজ দেওয়া যায়। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে যখন ছাত্র রাজনীতি ফিরে আসছিল, আমরা আন্দোলন করেছি, হল রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে বাধ্য করেছি। সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে আমি এবং আমার সংগঠন থেকেছে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ৩৬ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজুতে অনশনসহ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। পাসপোর্ট থেকে এক্সেপ্ট ইসরাইল বাদ দেওয়ায় সেটা পুনর্বহালের জন্য আমরা আন্দোলন করেছি। আমাদের এ ধারা অব্যহত থাকবে।
রাইজিংবিডি: আপনারা মুসলিম জাতীয়তাবাদ ভিত্তিক সংগঠন। দেশে এতগুলো ইসলামপন্থি দল থাকা সত্ত্বেও আপনারা কেন নতুন করে ইলামপন্থি সংগঠনের প্রয়োজন মনে করলেন?
আব্দুল ওয়াহেদ: আমরা মুসলিম জাতীয়তাবাদী ছাত্র সংগঠন। মুসলিম জাতীয়তাবাদী বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ কোনো ইসলামী ছাত্র সংগঠন না। আমাদের ডানপন্থি সংগঠন বলতে পারেন।
আমাদের সঙ্গে ইসলামী আদর্শের দলগুলোর সঙ্গে ব্যাপক ভিন্নতা রয়েছে। তারা যে আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করে, আমরা মোটামুটি তাদের বিপক্ষে। এ ক্ষেত্রে আমাদের ইসলামী সংগঠন বলার কোনো সুযোগ নেই। আমরা নারী নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়েই এবং সহাবস্থানের ভিত্তিতেই দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে চাই। সেক্ষেত্রে আমরা মুসলিম জাতীয়তাবাদকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেছি।
আমরা নেতা মনে করি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, খাজা নাজিমুদ্দিন, হোসেন সোহরাওয়ার্দীকে। আমরা মূলত মুসলিম জাতীয়তাবাদী নেতাদেরই আদর্শ মনে করি। ইসলামপন্থি অনেকেই ছিল যারা পাকিস্তানকে চায় নায়, তাদের দর্শন আর আমাদের দর্শন ব্যাপক ভিন্ন। ইসলাম এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানকে একসঙ্গে ধারণ করে আমরা পথ চলি এবং সামনে চলব।
রাইজিংবিডি: আপনাকে ধন্যবাদ।
আব্দুল ওয়াহেদ: রাইজিংবিডিকেও ধন্যবাদ।
ঢাকা/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত র স গঠন ইশত হ র আম দ র র জন য র জন ত আপন র ইসল ম আদর শ
এছাড়াও পড়ুন:
রাজকীয় ভোজে ট্রাম্প–মেলানিয়াকে কী কী খাওয়ালেন রাজা চার্লস
জমকালো সাজে সেজেছে যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল। উপলক্ষটাও অনন্য, রাজকীয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সস্ত্রীক যুক্তরাজ্য সফর উপলক্ষে এখানে রাজকীয় নৈশ্যভোজ আয়োজন করেন রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা।
বুধবার রাতের রাজকীয় এ আয়োজনে কূটনীতি, খাবার, ঐতিহ্য, সংগীত আর আভিজাত্য একসুতোয় বাঁধা পড়েছিল। ট্রাম্প–মেলানিয়াসহ রাজার অতিথি হয়েছিলেন বিশ্বের ১৬০ জন গণমান্য ব্যক্তি।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্মানে রাজা তৃতীয় চার্লসের আয়োজন করা রাজকীয় ভোজের টেবিল। যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫