গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফেরেশতার মতো একদল তরুণ জাতিকে মুক্তির পথ দেখিয়েছিল। সারা দেশের মানুষ তাদের পিছনে এসে দাঁড়িয়েছিল। ৩৬ জুলাই বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। এখনো সমস্ত আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হয়নি। 

শনিবার সকালে নাটোরে জুলাই শহীদদের স্মরণে নির্মিত জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘‘বিচার ও সংস্কারের কাজ এখনো বাকী আছে। বিচারকে দৃশ্যমান করার চেষ্টা চলছে, বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমান হয়েও উঠছে। সংস্কারের কাজও চলছে। সাথে জাতীয় নির্বাচনেরও সকল প্রস্তুতি চলছে। আশা করছি গণঅভ্যুত্থানের এই সরকার বিচার ও সংস্কার এই দুটি এগিয়ে নিয়ে নির্দিষ্ট সময়েই জাতীয় নির্বাচন করবে। নির্বাচিত সরকারের হাতে দায়িত্ব তুলে দিবে।’’ 

‘‘ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে মানে তারা বসে থাকবে তা কিন্তু নয়। তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকবে। তাই দেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক ছাত্র জনতাকে সবসময় সচেতন থাকতে হবে। জুলাই সনদ নিয়ে আমরা কাজ করছি। রাজনৈতিক কিছু মত পার্থক্য থাকলেও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একমত হয়ে তা বাস্তবায় করা হবে,’’ বলেন উপদেষ্টা।  

নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.

নজরুল ইসলাম, নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম, নাটোরের জুলাই শহীদ কলেজ ছাত্র মিকদাদ হোসেন খান আকিবের পিতা অধ্যক্ষ মোঃ দেলোয়ার হোসেন খান ও শহীদ হৃদয়ের পিতা রাজু আহম্মেদ। 

এর আগে নাটোরের আট শহীদ পরিবারের সঙ্গে সার্কিট হাউজে আয়োজিত আলোচনা সভায় আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘‘আজকে যারা উপস্থিত হয়েছেন এই দেশের জন্য তাদের কারো সন্তান, কারো ভাই আবার কারো স্বামী জীবন দিয়েছে। ফ্যাসিবাদ মুক্ত এই দেশ আপনাদের সন্তানের, ভাইয়ের বা স্বামীর রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি। আবার কখনো যেন ফ্যাসিবাদ দেশে ফিরে আসতে না পারে সেদিকে সবাই নজর রাখবেন। দেশটা  যেন আপনাদের নজরের বাইরে চলে না যায়।’’

শনিবার সকালে উপদেষ্টা নাটোর শহরের পাঁচ জুলাই শহীদের কবর জিয়ারত করেন।

ঢাকা/আরিফুল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে নোয়াখালীতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব