ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একাধিকবার আচরণবিধি ভঙ্গ করে প্রচার চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভিপি পদপ্রার্থী উমামা ফাতেমা নেতৃত্বাধীন ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে তার প্রতিষ্ঠিত ‘বিজ্ঞান আড্ডা’ নামের একটি প্লাটফর্মের অর্থায়নে একাধিক প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া প্রচারের সময়সীমা অতিক্রান্তের পরও হলে এটি চলমান রাখার অভিযোগ উঠেছে উমামা ফাতেমার বিরুদ্ধে।

আরো পড়ুন:

ডাকসু: ঢাবি শিক্ষার্থীর নানির বাড়িতে বেরোবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক

কুবিতে সমাবর্তন ৭ ডিসেম্বর

গত ৩০ আগস্ট ফলিত রচনা কেমিকৌশল বিভাগে ম্যাটেরিয়ালস রিসার্চ সোসাইটির (এমআরএস) প্রোগ্রামে অর্থায়ন করে বিজ্ঞান আড্ডা। এছাড়া গত ১ সেপ্টেম্বর প্রাণিবিদ্যা বিভাগে ‘আর’ প্রোগ্রামিং কোর্সের আয়োজন করে প্লাটফর্মটি।

বিজ্ঞান আড্ডার প্রতিষ্ঠাতা ও সংগঠক ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা। সংগঠনটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা মমিনুল ইসলাম বিধান ও সিয়াম ফেরদৌস ইমন প্যানেলটি থেকে যথাক্রমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে এবং গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এর আগে, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন প্রার্থী/পক্ষের বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যেকোনো ধরনের সেবামূলক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেয় প্রশাসন। কেউ এ ধরনের কাজ করলে সেটি সুস্পষ্ট আচরণবিধি লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হবে বলে জানায় প্রশাসন। 

গত ২১ আগস্ট ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড.

মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কোনো প্রার্থী/পক্ষ আজ থেকে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্বপ্রণোদিত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক কোনো ধরনের সেবামূলক কাজে অংশ নিতে পারবেন না, কোনো ধরনের উপঢৌকন বিলি-বণ্টন করতে পারবেন না। এমনকি আপ্যায়ন করানো, অর্থ সহযোগিতা করা কিংবা অনুরূপ কোনো কার্যক্রমে যুক্ত হতে পারবেন না। এ ধরনের কার্যক্রম সুস্পষ্টভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হবে।

এ বিষয়ে উমামা ফাতেমা বলেন, “৩১ আগস্টের প্রোগ্রামটি এমআরএসের উদ্যোগে আয়োজিত হয়। সেখানে আমরা কেবল সাহায্য করেছি। আমাদের মূল প্রোগ্রাম ছিল গত মে মাসে, যা ছিল একটি বিজ্ঞান মেলা। সেখান থেকে কিছু টাকা থেকে যায়। জুলাইয়ের শেষ দিকে এমআরএস আমাদেরকে রিচ করে। ফলে আমরা সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিই।”

নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তিনি বলেন, “এটি একটি পূর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রাম। ডাকসুর তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই এটি ঠিক করা ছিল।”
 
গত ১ সেপ্টেম্বর আয়োজিত ‘আর’ প্রোগ্রামিং কোর্সের ব্যাপারে উমামা বলেন, “আর প্রোগ্রামিং এর প্রোগ্রামটির ব্যাপারে আমি অবগত নই। এটি আয়োজন করেছে সিয়াম ফেরদৌস ইমন (গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক)। এ বিষয়ে তাকে একটু জিজ্ঞেস করতে হবে।”

অন্যদিকে, ডাকসুর আচরণবিধি অনুযায়ী প্রার্থীরা রাত ১১টার পর কোনো ধরনের প্রচারণা চালাতে পারবে না। এ আচরণবিধি লঙ্ঘন করে রাত ১২টায় নিজ হলে প্রচারণা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে উমামা ফাতেমার বিরুদ্ধে। 

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা ৪৯ মিনিটের একটি ফুটেজ এবং কিছু ছবি প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। সেখানে দেখা যায় তিনি নারী শিক্ষার্থীদের কক্ষে কক্ষে গিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

এর আগে, রাত ১টার পর রোকেয়া হলে অবস্থান এবং প্রচারণার অভিযোগ উঠে এ ভিপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে। তীব্র সমালোচনা শুরু হলে এক ফেসবুক স্টাটাসের মাধ্যমে ক্ষমা চান তিনি।

এ অভিযোগের ব্যাপারে উমামা ফাতেমা বলেন, “আমরা মেয়েদের কারো কোনো আপত্তি আছে কিনা জিজ্ঞেস কিরে নিয়েছি। রুমের বাইরে থেকে এটি জিজ্ঞেস করে তারপর প্রবেশ করেছি। যেহেতু আর মাত্র একদিন বাকি। সুতরাং এক্ষেত্রে আমি কোনো অনধিকার চর্চা করিনি।”

এ বিষয়ে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, “আমাদের কাছে এ নিয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প ট ম বর আচরণব ধ ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

মনোনয়নপত্র নিতে এসে স্লোগান, আচরণবিধি ভাঙলেন এক শিক্ষার্থী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) মনোনয়নপত্র নিতে এসে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। তাঁর নাম সালমান রহমান। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে চাকসুর কার্যনির্বাহী সদস্যপদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তিনি।

নির্বাচনী আচরণবিধি–২ এর ক অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না।

সরেজমিনে দেখা যায়, সালমান রহমান ৮ থেকে ১০ জন সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে আসেন। মনোনয়নপত্র নেওয়ার পর চাকসু ভবনের ভেতরেই সালমানের নাম ধরে স্লোগান দেন সমর্থকেরা। স্লোগান দিতে দিতে চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে নিচে নামেন তাঁরা। এ সময় সালমান রহমান সবার মাঝখানেই ছিলেন। তাঁকে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা যায়।

আচরণবিধি ভাঙার বিষয়টি স্বীকার করে সালমান রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে লড়বেন। তাঁর সমর্থকেরা না বুঝে স্লোগান দিয়েছেন। এ ধরনের ভুল আর হবে না।

জানতে চাইলে চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এসব বিষয় দেখভালের জন্য চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামী ১২ অক্টোবর চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার মোট ভোটার ২৭ হাজার ৬৩৭ জন। গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়নপত্র বিতরণ। আজ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার শেষ দিন।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মনোনয়নপত্র বুধবার পর্যন্ত জমা দেওয়া যাবে। যাচাই-বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশিত হবে ২১ সেপ্টেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রশিবিরের ভরসা ওএমআর মেশিনে, ছাত্রদল চায় হাতে ভোট গণনা
  • গকসু নির্বাচন: জিএস প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
  • মনোনয়নপত্র নিতে এসে স্লোগান, আচরণবিধি ভাঙলেন এক শিক্ষার্থী
  • রাকসুর নির্বাচনি প্রচার শুরু, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা