সিদ্ধিরগঞ্জে যুবককে ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা : আটক ১০
Published: 7th, September 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জে সাজ্জাদ হোসেন (২৪) নামের এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের আইলপাড়া কাটপট্টি এলাকার ক্রাউন সিমেন্ট ফ্যাক্টিরির সামনে এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহত সাজ্জাদ ক্রাউন সিমেন্ট ফ্যাক্টিরির একটি গাড়িতে ঢিল ছুড়লে তাকে আটকে বেধড়ক মারধর করে ফ্যাক্টরির কর্মকর্তারা। পরবর্তীতে অতিরিক্ত মারধরের ফলে সাজ্জাদ মৃত্যুবরণ করে। সে ওই এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে।
এদিকে অমানবিকভাবে সাজ্জাদকে হত্যা করায় স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে ক্রাউন সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে ভাংচুর চালায়। পরবর্তীতে পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের উপরও হামলা চালায়।
একপর্যায়ে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) হাসানুজ্জামান উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হয়। পুলিশ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। তবে তাৎক্ষনিক তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে ক্রাউন সিমেন্টের একটি মালবাহী গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-শ-১৩-০৪৪৫) আইলপাড়ার ফ্যাক্টরি থেকে বের হয়ে এসও রোডের ঈদগাহের সামনে এলে প্রতিবন্ধি যুবক সাজ্জাদ গাড়িটিতে ঢিল মারে। এতে গাড়ির সামনের কাঁচটি ভেঙ্গে যায়। পরে চালক-হেলপারসহ অন্যরা যুবককে ছিনতাইকারী ভেবে আটক করে বেদম মারধর করে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সাজ্জাদ।
হাবিব নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রাতে ওই রাস্তা দিয়ে যাবার সময় গাড়িচালক ও হেলপার মিলে সাজ্জাদকে টেনে হিচঁড়ে নিয়ে যায়। এসময় কয়েকজন নিষেধ করলেও কেউ শুনেনি। সকালে শুনলাম ছেলেটি মারা গেছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনূর আলম জানান, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার দায়ের প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) হাসানুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আটকদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তদন্ত করে বিস্তারিত জানানো যাবে।
পুলিশের উপর হামলা চালানো প্রশ্নে তিনি বলে, হৃদয়বিদারক ঘটনা ক্ষুদ্ধ হয়ে স্থানীয়রা সিমেন্ট কারখানাটি ভাংচুর চালালে আমাদের পুলিশ সদস্যরা তাদের থামানোর সময় একটু ঝামেলা হয়। পরবর্তীতে স্থানীয়দের বুঝিয়ে শান্ত করা হয়েছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হত য স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ক র উন স ম ন ট এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করবে রিয়াল মাদ্রিদ
ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থা উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করতে যাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ। দাবিকৃত ক্ষতিপূরণের অঙ্ক হতে পারে ৪৫০ কোটি ইউরো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। ইউরোপিয়ান সুপার লিগ নিয়ে স্পেনের একটি আদালতের সর্বশেষ রায়ের পর এমন অবস্থান নিয়েছে রিয়াল।
সুপার লিগের পরিকল্পনা আটকে দিয়ে উয়েফা ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা আইন ভঙ্গ করেছে বলে এর আগে যে রায় দেওয়া হয়েছিল, সেই রায়ের বিরুদ্ধে করা উয়েফার আপিল বুধবার মাদ্রিদের প্রাদেশিক আদালত খারিজ করে দেন। একই আদালত স্প্যানিশ লিগ লা লিগা এবং স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের আপিলও খারিজ করেন।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদালত সিজেইউ রায় দিয়েছিল, ২০২১ সালে উয়েফা ও ফিফা যে নিয়মগুলো প্রস্তাবিত সুপার লিগ ঠেকাতে ব্যবহার করেছিল, তা ইউরোপীয় আইনের পরিপন্থী। সেই রায় আপিলের পরও বহাল থাকায় রিয়াল মাদ্রিদ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা এই রায়ে ‘আনন্দিত’, কারণ এটি ‘ক্লাবের উল্লেখযোগ্য ক্ষতির ক্ষতিপূরণ দাবি করার পথ খুলে দিয়েছে।’
আপিল খারিজের পর বিবৃতি দিয়েছে উয়েফাও। ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থাটি বলেছে, সর্বশেষ এই রায় ‘২০২১ সালে ঘোষিত এবং ইতিমধ্যে পরিত্যক্ত ‘সুপার লিগ’ প্রকল্পকে বৈধতা দেয় না। একই সঙ্গে এটি উয়েফার ২০২২ সালে গৃহীত ও ২০২৪ সালে হালনাগাদ করা বর্তমান অনুমোদন-নিয়মকেও খর্ব করে না, যেগুলো এখনো কার্যকর রয়েছে।’
আদালতের রায় বিস্তারিত পর্যালোচনার পর পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানিয়েছে উয়েফা। আর লা লিগা জানিয়েছে, তারা আদালতের নতুন রায়কে সম্মান জানালেও এর গুরুত্বকে খাটো করে দেখছে। লিগ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘এই সিদ্ধান্ত কোনো নির্দিষ্ট প্রতিযোগিতা কাঠামো অনুমোদন বা সমর্থন করে না, আর ২০২১ সালে ঘোষিত প্রাথমিক প্রকল্প সম্পর্কেও কিছু বলে না, যা পরবর্তীতে আয়োজকেরা পরিবর্তন করেছে।’
২০২১ সালের এপ্রিলে স্পেন, ইতালি ও ইংল্যান্ডের ১২টি ক্লাবের অংশগ্রহণে চালু হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সুপার লিগ প্রকল্প ভেস্তে যায়। প্রথমে ইংলিশ ক্লাবগুলো, পরে ধীরে ধীরে ইতালি ও স্পেনের ক্লাবগুলো সুপার লিগ থেকে সরে আসে। তবে রিয়াল মাদ্রিদ এবং আয়োজক কর্তৃপক্ষ এ২২ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট এ নিয়ে উয়েফার সঙ্গে আলোচনা ও আইনি লড়াই চালিয়ে যায়।
মাদ্রিদভিত্তিক দৈনিক এএস জানিয়েছে, রিয়াল মাদ্রিদ ও সুপার লিগের আয়োজক সংস্থা এ২২-এর আইনজীবীরা ইতিমধ্যেই উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের দাবি প্রস্তুত করছেন। এই পত্রিকার সূত্রমতে, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় ৪,৫০০ মিলিয়ন ইউরো, যা আর্থিক ক্ষতি, সম্ভাব্য লাভ হারানো এবং ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব হিসেবে যোগ করা হচ্ছে।