জামায়াত আমিরের সঙ্গে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
Published: 7th, September 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদানের সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ডা. শফিকুর রহমানের বসুন্ধরা কার্যালয়ে আসলে ইউসুফ এস ওয়াই রামাদাকে স্বাগত জানান জামায়াত নেতারা।
আরো পড়ুন:
চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় হামলার অভিযোগ, জামায়াতের উদ্বেগ
নুরের চিকিৎসা ও বিচারে বিলম্ব কাম্য নয়: জামায়াত
রাষ্ট্রদূত ডা.
পরে মতবিনিময় সভায় জামায়াত আমির ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, “বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর মতো ফিলিস্তিনের সঙ্গে আমাদের আন্তরিক সম্পর্ক বিদ্যমান এবং এ সম্পর্ক চিরদিন অটুট থাকবে ইনশাআল্লাহ। অতীতে বহুবার ফিলিস্তিনের মজলুম মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতনের স্টিমরোলার চালানো হয়েছে। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি বোমা বর্ষণে নারী-শিশুসহ প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন এবং প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার ফিলিস্তিনি গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। টিআরটি ওয়ার্ল্ড-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গাজার ২ হাজার ৭০০ পরিবারের কেউ বেঁচে নেই; সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ইসরাইলি বোমাবর্ষণে গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার আট শত কোটি ডলারে। ধ্বংস হয়েছে ৩৮টি হাসপাতাল, ৮৩৩টি মসজিদ এবং দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।”
তিনি আরো বলেন, “মানবতার দুশমন ইসরাইল গাজায় খাবার প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। ফলে সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। শিশুসহ হাজার হাজার ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা যাচ্ছে।”
তিনি বলেন, “সম্প্রতি ইসরাইল প্রকাশ্যে গাজা দখলের ঘোষণা দিয়েছে এবং সেই লক্ষ্যে গাজা থেকে জোরপূর্বক প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করার ভয়াবহ পরিকল্পনা করেছে। গাজা দখলের এ নীলনকশা ইসরাইলি আগ্রাসনের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ, যা আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার ও ন্যায়নীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থি। ইসরাইলের এ হিংস্র দখলদারিত্ব শুধু ফিলিস্তিনের জন্য নয়, বরং গোটা বিশ্বশান্তি, স্থিতিশীলতা ও মানবতার জন্য গুরুতর হুমকি। গাজা সিটি দখল ও ফিলিস্তিনি জনগণকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার এ ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা অবিলম্বে বন্ধ করতে দখলদার ইসরাইলকে বাধ্য করার জন্য আমি জাতিসঙ্ঘ, ওআইসিসহ শান্তিকামী বিশ্বের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”
জামায়াত আমির বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের দলমত নির্বিশেষে সব মানুষের সমর্থন রয়েছে। ফিলিস্তিনের জন্য আমাদের দোয়া, ভালোবাসা, সহযোগিতা, সমর্থন রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। আমরা চাই ফিলিস্তিন একটি জাতি রাষ্ট্র হিসেবে পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে বিশ্বের বুকে দাঁড়াক। কারণ এই জায়গাটা হচ্ছে অসংখ্য নবী-পয়গাম্বরদের স্মৃতি-বিজড়িত স্থান। মুসলমানদের প্রথম কিবলা বায়তুল মুকাদ্দাস এই মাটিতেই রয়েছে। ফিলিস্তিনের বঞ্চিত, ক্ষতিগ্রস্ত ভাই-বোনদের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। ফিলিস্তিনে যারা নিহত হয়েছেন আল্লাহ তাদের শহীদ হিসেবে কবুল করুন এবং আহতদের মহান রব সুস্থতার নিয়ামাত দান করুন।”
এ সময় ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ সালেহ রামাদান বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ হওয়ায় আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। ফিলিস্তিন বিশেষ করে গাজা উপত্যকার প্রতি বাংলাদেশের জনগণের অর্থবহ ভালোবাসা, সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য আমি ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। সেই সঙ্গে আমি ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে আশা প্রকাশ করছি যে, ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশ বিশেষ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অর্থবহ সমর্থন, সাহায্য, সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং আমিরে জামায়াতের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ ল স ত ন র জন র জন য আল ল হ
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব