ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থীদের মধ্যে ভোটার সমর্থনের অবস্থান যাচাই করতে পৃথক দুইটি জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। ওই দুই জরিপে ভিপি পদে ছাত্রদল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এগিয়ে আছেন।

‘বাংলাদেশ পাবলিক একাডেমি’ (বিপিএ) এবং ভলান্টিয়ার সংস্থা ‘বেসরকারি’ একটি জরিপ পরিচালনা করেছে। এতে ভোট দিতে আগ্রহী মোট ২৪০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। ফলাফলে শীর্ষ চার প্রার্থী হিসেবে উঠে এসেছেন আব্দুল কাদির, আবিদুল ইসলাম খান, উমামা ফাতেমা ও মো.

আবু সাদিক কায়েমের নাম। 

আরো পড়ুন:

জকসু নির্বাচন ও বৃত্তি দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হচ্ছে: শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম

জরিপ অনুযায়ী, বাগছাসের (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদির ১৮ শতাংশ, ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান সর্বোচ্চ ৪৬ শতাংশ, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা ১২ শতাংশ এবং ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মো. আবু সাদিক কায়েম ৯ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।

বাংলাদেশ পাবলিক একাডেমি তাদের ফেসবুক পেজে এ জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেছে।

অপরদিকে, ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে ৯০০ শিক্ষার্থীর উপর একটি জরিপ পরিচালনা করেছে ঢাবি গবেষণা সংসদ।

তাদের জরিপে দেখা যায়, ভোটদানে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই সবচেয়ে বেশি সমর্থন পাচ্ছেন। জরিপে অংশগ্রহণকারী ৭৯৮ জন ভোটারদের মধ্যে ৩১০ জন অর্থাৎ ৩৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোট দিতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন।

রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি মো. ফাহিম হাসান মাহদী জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, “ঐতিহ্যগতভাবে ডাকসু নির্বাচনে বড় দলগুলোর প্রভাব থাকলেও বর্তমানে শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ দলীয় রাজনীতির প্রতি আস্থা হারিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দিকে ঝুঁকছেন। এটি মূলত ছাত্র রাজনীতির প্রতি হতাশা, দলীয় নেতৃত্বে অনাস্থা এবং ব্যক্তিকেন্দ্রিক নেতৃত্বের প্রতি আস্থার বহিঃপ্রকাশ।”

জরিপে দেখা যায়, দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে শিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল, যাদের প্রতি ভোটদানে আগ্রহ দেখিয়েছেন ১৬৭ জন শিক্ষার্থী। যা মোট ভোটারদের ২০ দশমিক ৯২ শতাংশ। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ছাত্রদল প্যানেল, যাদের প্রতি ১৩১ জন বা ১৬ দশমিক ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থী সমর্থন জানিয়েছেন। চতুর্থ স্থানে রয়েছে উমামা ফাতেমার নেতৃত্বাধীন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল, যাদের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন ৪৭ জন বা ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ ভোটার।

এরপর গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ পেয়েছে ৩৮ জনের সমর্থন, যা শতকরা ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এছাড়া ছাত্র অধিকার পরিষদ ২ দশমিক ২০ শতাংশ, সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ ১ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং অন্যান্য প্যানেল অবশিষ্ট ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাভ করেছে।

এসময় সংগঠনের সভাপতি জানান, জরিপে অংশ নেওয়া ৯০০ জনের মধ্যে ১০২ জন শিক্ষার্থী ভোটদানে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাদের মধ্যে ৩৯ দশমিক ৭ শতাংশ রাজনৈতিক হতাশা, ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ রাজনৈতিক অনাস্থা, ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ ভয় বা চাপ এবং বাকি ১০ শতাংশ অন্যান্য কারণে ভোটদানে আগ্রহ দেখাননি।

তিনি বলেন, “এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতা এখনো অনেক শিক্ষার্থীর মধ্যে গভীরভাবে প্রভাব ফেলছে, যা অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।”

জরিপে অংশগ্রহণকারী ৯০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫০৪ জন নারী (৫৬ শতাংশ) এবং ৩৯৬ জন পুরুষ (৪৪ শতাংশ) ছিলেন। নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ পুরুষদের তুলনায় সামান্য বেশি হলেও উভয় পক্ষের দৃষ্টিভঙ্গিই জরিপে প্রতিফলিত হয়েছে।

সংগঠনের মতে, পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে—নারী ভোটাররা নির্বাচনের ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ফলে এই প্রবণতা ভবিষ্যৎ বিশ্লেষণে তাৎপর্যপূর্ণ হবে।

জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ আবাসিক এবং ৪৫ শতাংশ অনাবাসিক শিক্ষার্থী। এই অংশগ্রহণের অনুপাত ক্যাম্পাস জুড়ে শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক অভিজ্ঞতা ও মতামতের একটি ভারসাম্যপূর্ণ প্রতিফলন তুলে ধরবে বলে মত দেন গবেষণা সংসদের সভাপতি।

ফাহিম হাসান বলেন, “এই জরিপের মাধ্যমে আবাসিক ও অনাবাসিক উভয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিভঙ্গি সংযুক্ত করা হয়েছে, যা ডাকসু নির্বাচন ২০২৫ এর ছাত্র রাজনীতির প্রেক্ষাপটে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ প্রদান করতে সক্ষম হবে।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বতন ত র প র র থ র সমর থ ছ ত রদল র জন ত ফল ফল দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

মাইক্রোসফটের ফ্রি অনলাইন কোর্স : ডেটা সায়েন্স–এআইসহ নানা বিষয়ে শেখার সুযোগ

ঘরে বসেই দক্ষতা বাড়াতে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ নিয়ে এসেছে মাইক্রোসফট। এই অনলাইন কোর্সগুলো edX প্ল্যাটফর্মে উন্মুক্ত করা হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের শিক্ষার্থী বা পেশাজীবীরা কোর্সগুলোতে অংশ নিতে পারবেন।

২০২৫ সালের এই প্রোগ্রামে ৬০টির বেশি অনলাইন কোর্স রয়েছে, যা বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ দেবে। দ্রুত পরিবর্তনশীল চাকরির বাজারে নিজেকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে সাহায্য করবে এসব কোর্স। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা Microsoft AI Skills Fest-এ অংশ নিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) সম্পর্কিত বিশেষায়িত কোর্সও করতে পারবেন।

মাইক্রোসফটের লক্ষ্য হলো আজকের চাকরির বাজারে চাহিদাসম্পন্ন প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত দক্ষতা গড়ে তুলতে সহায়তা করা। এই কোর্সগুলো শিক্ষার্থীরা নিজের সুবিধামতো সময়ে শিখতে পারবেন। এখানে থাকছে ক্লাউড কম্পিউটিং, মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ডেটা সায়েন্স, মেশিন লার্নিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং সাইবার সিকিউরিটিসহ নানা বিষয়ে হাতে–কলমে শেখার সুযোগ।

বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ

মাইক্রোসফটের অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞরা এই কোর্সগুলো তৈরি ও পরিচালনা করেন। ফলে অংশগ্রহণকারীরা বাস্তব জীবনের জ্ঞান এবং দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। যাঁরা প্রযুক্তির জগতে নতুন, তাঁরা বিগিনার লেভেলের কোর্স দিয়ে শুরু করতে পারবেন। আর যাঁরা অভিজ্ঞ, তাঁদের জন্য রয়েছে ইন্টারমিডিয়েট লেভেলের কোর্স। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের নতুন অ্যাপ্লিকেশন, ডিজিটাল সেবা এবং উদ্ভাবনী সমাধান ডিজাইন করার দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।

কোর্স কাঠামো ও সার্টিফিকেট

মাইক্রোসফটের এই অনলাইন কোর্সগুলো ফ্রি অডিট ট্র্যাকের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনা খরচে করা যাবে। তবে যাঁরা শিখে একটি অফিশিয়াল ভেরিফায়েড সার্টিফিকেট পেতে চান, তাঁরা নামমাত্র ফি দিয়ে সার্টিফিকেট নিতে পারবেন, যা চাকরি বা ক্যারিয়ারে বাড়তি গুরুত্ব দেবে।

এটি একটি MOOC (Massive Open Online Course) উদ্যোগ, যা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্রি অনলাইন কোর্স ২০২৫-এর মতো বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।

মাইক্রোসফটের কোর্স এখন করা যায় ঘরে বসেই

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনবে চোখের নতুন ড্রপ
  • মাইক্রোসফটের ফ্রি অনলাইন কোর্স : ডেটা সায়েন্স–এআইসহ নানা বিষয়ে শেখার সুযোগ