ডাকসু নির্বাচন: পৃথক ২ জরিপে ছাত্রদল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এগিয়ে
Published: 7th, September 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থীদের মধ্যে ভোটার সমর্থনের অবস্থান যাচাই করতে পৃথক দুইটি জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। ওই দুই জরিপে ভিপি পদে ছাত্রদল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এগিয়ে আছেন।
‘বাংলাদেশ পাবলিক একাডেমি’ (বিপিএ) এবং ভলান্টিয়ার সংস্থা ‘বেসরকারি’ একটি জরিপ পরিচালনা করেছে। এতে ভোট দিতে আগ্রহী মোট ২৪০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। ফলাফলে শীর্ষ চার প্রার্থী হিসেবে উঠে এসেছেন আব্দুল কাদির, আবিদুল ইসলাম খান, উমামা ফাতেমা ও মো.
আরো পড়ুন:
জকসু নির্বাচন ও বৃত্তি দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
জাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হচ্ছে: শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম
জরিপ অনুযায়ী, বাগছাসের (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদির ১৮ শতাংশ, ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান সর্বোচ্চ ৪৬ শতাংশ, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা ১২ শতাংশ এবং ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মো. আবু সাদিক কায়েম ৯ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।
বাংলাদেশ পাবলিক একাডেমি তাদের ফেসবুক পেজে এ জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেছে।
অপরদিকে, ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে ৯০০ শিক্ষার্থীর উপর একটি জরিপ পরিচালনা করেছে ঢাবি গবেষণা সংসদ।
তাদের জরিপে দেখা যায়, ভোটদানে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই সবচেয়ে বেশি সমর্থন পাচ্ছেন। জরিপে অংশগ্রহণকারী ৭৯৮ জন ভোটারদের মধ্যে ৩১০ জন অর্থাৎ ৩৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোট দিতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি মো. ফাহিম হাসান মাহদী জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, “ঐতিহ্যগতভাবে ডাকসু নির্বাচনে বড় দলগুলোর প্রভাব থাকলেও বর্তমানে শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ দলীয় রাজনীতির প্রতি আস্থা হারিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দিকে ঝুঁকছেন। এটি মূলত ছাত্র রাজনীতির প্রতি হতাশা, দলীয় নেতৃত্বে অনাস্থা এবং ব্যক্তিকেন্দ্রিক নেতৃত্বের প্রতি আস্থার বহিঃপ্রকাশ।”
জরিপে দেখা যায়, দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে শিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল, যাদের প্রতি ভোটদানে আগ্রহ দেখিয়েছেন ১৬৭ জন শিক্ষার্থী। যা মোট ভোটারদের ২০ দশমিক ৯২ শতাংশ। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ছাত্রদল প্যানেল, যাদের প্রতি ১৩১ জন বা ১৬ দশমিক ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থী সমর্থন জানিয়েছেন। চতুর্থ স্থানে রয়েছে উমামা ফাতেমার নেতৃত্বাধীন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল, যাদের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন ৪৭ জন বা ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ ভোটার।
এরপর গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ পেয়েছে ৩৮ জনের সমর্থন, যা শতকরা ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এছাড়া ছাত্র অধিকার পরিষদ ২ দশমিক ২০ শতাংশ, সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ ১ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং অন্যান্য প্যানেল অবশিষ্ট ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাভ করেছে।
এসময় সংগঠনের সভাপতি জানান, জরিপে অংশ নেওয়া ৯০০ জনের মধ্যে ১০২ জন শিক্ষার্থী ভোটদানে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাদের মধ্যে ৩৯ দশমিক ৭ শতাংশ রাজনৈতিক হতাশা, ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ রাজনৈতিক অনাস্থা, ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ ভয় বা চাপ এবং বাকি ১০ শতাংশ অন্যান্য কারণে ভোটদানে আগ্রহ দেখাননি।
তিনি বলেন, “এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতা এখনো অনেক শিক্ষার্থীর মধ্যে গভীরভাবে প্রভাব ফেলছে, যা অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।”
জরিপে অংশগ্রহণকারী ৯০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫০৪ জন নারী (৫৬ শতাংশ) এবং ৩৯৬ জন পুরুষ (৪৪ শতাংশ) ছিলেন। নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ পুরুষদের তুলনায় সামান্য বেশি হলেও উভয় পক্ষের দৃষ্টিভঙ্গিই জরিপে প্রতিফলিত হয়েছে।
সংগঠনের মতে, পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে—নারী ভোটাররা নির্বাচনের ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ফলে এই প্রবণতা ভবিষ্যৎ বিশ্লেষণে তাৎপর্যপূর্ণ হবে।
জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ আবাসিক এবং ৪৫ শতাংশ অনাবাসিক শিক্ষার্থী। এই অংশগ্রহণের অনুপাত ক্যাম্পাস জুড়ে শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক অভিজ্ঞতা ও মতামতের একটি ভারসাম্যপূর্ণ প্রতিফলন তুলে ধরবে বলে মত দেন গবেষণা সংসদের সভাপতি।
ফাহিম হাসান বলেন, “এই জরিপের মাধ্যমে আবাসিক ও অনাবাসিক উভয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিভঙ্গি সংযুক্ত করা হয়েছে, যা ডাকসু নির্বাচন ২০২৫ এর ছাত্র রাজনীতির প্রেক্ষাপটে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ প্রদান করতে সক্ষম হবে।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বতন ত র প র র থ র সমর থ ছ ত রদল র জন ত ফল ফল দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
মার্কস অলরাউন্ডার: ময়মনসিংহ ও দিনাজপুরসহ ৯ জেলায় কবে কোথায় প্রতিযোগিতা
বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তে এখন চলছে প্রতিভার উচ্ছ্বাস ‘মার্কস অলরাউন্ডার’। ‘দেখাও যত প্রতিভা তোমার’ স্লোগানে আয়োজিত দেশের অন্যতম বড় প্ল্যাটফর্মটি শিশু-কিশোরদের নিজেদের সম্ভাবনা প্রকাশের মঞ্চ হয়ে উঠেছে। বরাবরের মতো এবারের আয়োজনটিও পাচ্ছে দর্শক ও অংশগ্রহণকারীদের দারুণ সাড়া। প্রতিযোগিতাটি তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হবে—আঞ্চলিক, বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে। এরই মধ্যে অনেক স্থানে প্রতিযোগিতার আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্র ও শনিবার (৭ ও ৮ নভেম্বর) ময়মনসিংহ, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ঠাকুরগাঁও, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, নীলফামারী ও পঞ্চগড় অঞ্চলের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। নিম্নলিখিত প্রতিটি ভেন্যুতে সকাল আটটা থেকে শুরু হবে প্রতিযোগিতা।
তারিখ: ৭ নভেম্বর, শুক্রবার
ভেন্যু: কলকাকলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কুষ্টিয়া সদর, কুষ্টিয়া।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলা।
ভেন্যু: কলেজিয়েট গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, হাসপাতাল রোড, দিনাজপুর সদর, দিনাজপুর।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলা।
ভেন্যু: ময়মনসিংহ সরকারি কলেজ, আকুয়া, ময়মনসিংহ।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: ময়মনসিংহ সদরের একাংশ (আকুয়া, সানকিপাড়া, কলেজ রোড, কাচিঝুলি, পুলিশ লাইনস, নয়াপাড়া, মাসকান্দা, দিগারকান্দা ও সুতিয়াখালী), মুক্তাগাছা, ফুলবাড়িয়া, ত্রিশাল, ভালুকা ও গফরগাঁও থানা।
তারিখ: ৮ নভেম্বর, শনিবার
ভেন্যু: ঝিনাইদহ নিউ একাডেমি স্কুল, ঝিনাইদহ সদর, ঝিনাইদহ।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা।
ভেন্যু: ময়মনসিংহ জিলা স্কুল, ময়মনসিংহ।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: ময়মনসিংহ সদরের একাংশ (টাউন হল, কাচারি, চরপাড়া, ব্রিজ মোড়, গাঙ্গিনাপাড়, পণ্ডিতপাড়া, মেছোয়া বাজার, ছোট বাজার ও বড় বাজার), গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, নান্দাইল, তারাকান্দা, ফুলপুর, হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া থানা।
ভেন্যু: নীলফামারী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, পিটিআই রোড, নীলফামারী সদর, নীলফামারী।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: নীলফামারী ও পঞ্চগড় জেলা।
প্রতিযোগিতার গ্রুপ ও বিষয়—প্লে থেকে চতুর্থ শ্রেণি—জুনিয়র স্কুল (গান, নাচ, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, গল্প বলা); পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি—মিডল স্কুল (গান, নাচ, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা) এবং নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি—হাইস্কুল ও কলেজ (গান, নাচ, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা।)
ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, যশোর, মাগুরা, নোয়াখালী, ফেনী, সিলেট, নাটোর, পাবনা, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, খুলনা, বাগেরহাট, রাজশাহী, ঠাকুরগাঁও, টাঙ্গাইল, লালমনিরহাট, সাতক্ষীরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পঞ্চগড়, জামালপুর, শেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের ১০০টি স্থানে আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের সব স্কুল-কলেজ (প্লে গ্রুপ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) এবং সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে।
পুরস্কারমার্কস অলরাউন্ডারে তিনটি গ্রুপ থেকে সেরা তিন অলরাউন্ডারের প্রত্যেকে পাবে ১৫ লাখ টাকার শিক্ষাবৃত্তি। আর বিভিন্ন পর্যায়ের বিজয়ীরা পাবে মোট এক কোটি টাকার বেশি উপহার ও শিক্ষাবৃত্তি।
গ্র্যান্ড ফিনালেতে তিনটি গ্রুপের ফার্স্ট রানার্সআপ এবং সেকেন্ড রানার্সআপের প্রত্যেকে পাবে পাঁচ লাখ এবং তিন লাখ টাকার শিক্ষাবৃত্তি। তিনটি গ্রুপের ছয়টি বিষয়ের প্রতিটিতে সেরা ৩ জন করে মোট ৫৪ জন সেরা পারফরমারের প্রত্যেকে পাবে যথাক্রমে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জপদক। জাতীয় পর্যায়ে তিনটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়নদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাবে একটি করে কম্পিউটার।
আয়োজকদের মতে, মার্কস অলরাউন্ডার শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়। এটি বাংলাদেশের শিশু-কিশোরদের প্রতিভা, মেধা, সংস্কৃতি ও আত্মবিশ্বাস বিকাশের একটি অন্যতম বড় প্ল্যাটফর্ম। আঞ্চলিক থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত এই আয়োজন অংশগ্রহণকারীদের জন্য হয়ে উঠেছে শেখার, নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করার এবং ভবিষ্যতের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ।
বিস্তারিত জানতে এবং রেজিস্ট্রেশন করতে ভিজিট করতে হবে। ফোন করা যাবে (সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা) ০৯৬১৪৫১৬১৭১ নম্বরে।