নেপালে সার্বিক নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী
Published: 10th, September 2025 GMT
নেপালের সেনাবাহিনী দেশটির সার্বিক নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে সেনারা বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাঠমান্ডু পোস্ট।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানী কাঠমান্ডুর পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর সেখানে আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। এমন পরিস্থিতি সেনাবাহিনী নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এরপর বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট, অফিস-আদালতসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে আগুন দেন। এমন পরিস্থিতিতে রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন নেপালের সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল।
বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, “বর্তমান কঠিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা ও জাতির সর্বোচ্চ স্বার্থ রক্ষা করা সবার দায়িত্ব। আমি বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিতের অনুরোধ করছি এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে সংলাপের পথে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।”
সেনাপ্রধানের ভাষণের পর দেশটির সেনাবাহিনী আলাদা এক বিবৃতিতে জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত ১০টার পর সেনাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোতায়েন করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, কিছু গোষ্ঠী এই অস্থিরতাকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন ও সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তির মারাত্মক ক্ষতি করছে। এ ধরনের কার্যকলাপ বন্ধ না হলে সেনাবাহিনী অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে মোতায়েন হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে। মোতায়েন কার্যক্রম শুরু হলে সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নতুন করে মূল্যায়ন করা হবে।
সেনাবাহিনী নাগরিকদের সংযত থাকতে এবং দেশজুড়ে আরও ধ্বংস রোধে সহযোগিতা করতে আহ্বান জানিয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।
এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।
সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫