হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত শাবানার স্বামী প্রযোজক ওয়াহিদ সাদিক
Published: 10th, September 2025 GMT
ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেত্রী শাবানার স্বামী ও প্রযোজক ওয়াহিদ সাদিক হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসকরা তার হৃদযন্ত্রে দুটি ব্লক শনাক্ত করেছেন। পরে জরুরি ভিত্তিতে দুটি স্টেন্ট পরানো হয়। বর্তমানে তিনি চিকিৎসকের পরামর্শে বিশ্রামে আছেন।
শাবানা দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। বর্তমানে এই দম্পতি অবস্থান করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে। সম্প্রতি খবর চাউর হয়েছিল, শাবানা ঢাকায় ফিরেছেন। তবে, বিষয়টি গুজব বলে জানিয়েছেন ওয়াহিদ সাদিক নিজেই।
তিনি বলেন, “তিন সপ্তাহ আগে আমার হার্ট অ্যাটাক হয়। হাসপাতালে গেলে দুটি ব্লক ধরা পড়ে। এরপর দুটি স্টেন্ট পরানো হয়। চিকিৎসক আমাকে মাসখানেকের বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। আমি এখন পুরোপুরি চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনে চলছি। এই সময় দেশে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।”
দেশে ফেরার পরিকল্পনা থাকলেও তা আপাতত পিছিয়ে দিতে হয়েছে বলে জানান এই প্রযোজক। “মাস দুয়েক আগে আমার বাংলাদেশে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখানে আরো কিছু জরুরি কাজ পড়ে যাওয়ায় যাওয়া হয়নি। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়ি। তাই আপাতত যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না,”- বলেন ওয়াহিদ সাদিক।
শেষবার পাঁচ বছর আগে স্বামী ওয়াহিদ সাদিকের সঙ্গে ঢাকায় এসেছিলেন শাবানা। প্রয়োজনীয় কাজ শেষে দু’জনই ফিরে যান যুক্তরাষ্ট্রে। পরে ওয়াহিদ সাদিক কয়েকবার এলেও শাবানা আর আসেননি।
বাংলাদেশি সিনেমায় যখন অভিনয়ে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন, হঠাৎ করেই কাউকে কিছু না জানিয়ে দেশ ছাড়েন শাবানা। তার এই সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছিলেন ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীরা। বর্তমানে তিনি স্বামী, সন্তান, নাতি-নাতনিসহ স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন নিউজার্সিতে। যদিও প্রবাস জীবনেও দেশকে ভুলে যাননি এই কিংবদন্তি নায়িকা। মাঝে মধ্যে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে স্বল্প সময়ের জন্য বাংলাদেশে আসেন তিনি।
ঢাকা/রাহাত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।