পুঁজিবাজারে এসএমই প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইউসুফ ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেডের আর্থিক প্রতিবেদনে অসঙ্গতি ও নিরীক্ষকের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এজন্য কোম্পানিটির ৩০ জুন ২০২৩ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে অসঙ্গতি খতিয়ে দেখতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে সময়ের অজুহাত দেখিয়ে ইউসুফ ফ্লাওয়ার মিলসের আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লিখিত মজুদ পণ্য এবং হাতে থাকা নগদ অর্থ শারীরিকভাবে যাচাই না করার ব্যর্থতার জন্য নিরীক্ষক ফেমস অ্যান্ড আর.

চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাইতে ডিএসইকে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।

আরো পড়ুন:

কারণ ছাড়াই বাড়ছে দুই কোম্পানির শেয়ার দর

পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন

সম্প্রতি ডিএসইকে এ সংক্রান্ত বিষয়ে বিএসইসির চিফ অ্যাকাউন্টেন্ট ডিভিশন থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

তথ্য মতে, কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। সেই সঙ্গে আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথ্য নিরীক্ষক কেন সশরীরে যাচাই করে দেখেনি সে বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

ইউসুফ ফ্লাওয়ার মিলসের ৩০ জুন ২০২৩ সমাপ্ত অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে অডিটর্স রিপোর্টের কোয়ালিফাইড অপিনিয়নে ইনভেন্টরি প্রসঙ্গে উল্লেখ রয়েছে, আর্থিক বিবৃতির নোট– ৫ অনুযায়ী, কোম্পানি ৩০ জুন ২০২৩ তারিখে ৪৭২,৬৫৩,৩৩০ টাকা মজুদ (ইনভেন্টরি) দেখিয়েছে। নিরীক্ষার সময়কালজনিত কারণে আমরা এ মজুদ শারীরিকভাবে যাচাই করতে সক্ষম হইনি। তবে, নির্দিষ্ট তারিখে তাদের কাছে উল্লিখিত মজুদের পরিমাণ বিদ্যমান আছে বলে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা কর্তৃক প্রদত্ত সনদ আমরা পেয়েছি।

এদিকে কোয়ালিফাইড অপিনিয়নের ক্যাশ ইন হ্যান্ড প্রসঙ্গে উল্লেখ রয়েছে, আর্থিক বিবৃতির নোট–৭ অনুযায়ী, কোম্পানি ৩০ জুন ২০২৩ তারিখে হাতে নগদ (ক্যাশ ইন হ্যান্ড) ২৮,৮৬৩,৭৬২ টাকা দেখিয়েছে। নিরীক্ষা পরবর্তীকালে অনুষ্ঠিত হওয়ায় আমরা এ নগদ অর্থ শারীরিকভাবে যাচাই করতে পারিনি। তদুপরি, উল্লিখিত নগদ অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে যথেষ্ট ও উপযুক্ত নিরীক্ষা প্রমাণ আমরা সংগ্রহ করতে সক্ষম হইনি। ফলে, আর্থিক বিবৃতিতে উল্লিখিত হাতে নগদ অর্থ (ক্যাশ ইন হ্যান্ড) প্রকৃত অর্থের তুলনায় বেশি বা কম হতে পারে।

বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউসুফ ফ্লাওয়ার মিলস তাদের ৪৫তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য নিরীক্ষক নিয়োগ এবং তাদের সম্মানী নির্ধারণের এজেন্ডা উপস্থাপন করেছিল। এজিএমটি অনুষ্ঠিত হয় ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে, যেখানে অর্থবছরের সমাপ্তি ছিল ৩০ জুন ২০২৩। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, নিরীক্ষক সময়গত কারণে কোম্পানিটির মজুদ পণ্য (ইনভেনটরি) এবং হাতে থাকা নগদ অর্থ (ক্যাশ ইন হ্যান্ড) শারীরিকভাবে যাচাই করতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছে, যা সন্তোষজনক ব্যাখ্যা হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়।

চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, তাই ইউসুফ ফ্লাওয়ার মিলসের ৩০ জুন ২০২৩ সমাপ্ত হিসাববছরের মজুদ পণ্য ও হাতে থাকা নগদ অর্থ শারীরিকভাবে যাচাই করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণ সম্পর্কে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান ফেমস অ্যান্ড আর. চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের থেকে ব্যাখ্যা সংগ্রহ করার জন্য ডিএসইকে নির্দেশ দেওয়া হলো। একইসঙ্গে, নিরীক্ষকের ব্যাখ্যা সংযুক্ত করে ডিএসইর মন্তব্য বা পর্যবেক্ষণ কমিশনে পুনরায় জমা দেওয়ার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হলো।

ইউসুফ ফ্লাওয়ার মিলস পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০২২ সালে। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৬০ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। সেই হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৬ লাথ ৬ হাজার ৮০০। এর মধ্যে, ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৫৩.৮৮ শতাংশ, সরকারের হাতে ০.০৭ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪৬.০৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।

ঢাকা/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক য শ ইন হ য ন ড ৩০ জ ন ২০২৩ য চ ই করত য চ ই কর র ৩০ জ ন উল ল খ ত ব এসইস র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

তিন মাসে বিদেশি ঋণ এসেছে ১১৫ কোটি ডলার, শোধ ১২৮ কোটি ডলার

চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রায় ১১৫ কোটি ডলার দিয়েছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশ। অন্যদিকে একই সময়ে আগে নেওয়া ঋণের সুদ ও আসল বাবদ প্রায় ১২৮ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে।

আজ বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) জুলাই-সেপ্টেম্বর (প্রথম প্রান্তিক) মাসের বিদেশি ঋণ পরিস্থিতির হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। ইআরডির হিসাব অনুসারে, ঋণ শোধ বেড়েছে। পাশাপাশি অর্থছাড় ও প্রতিশ্রুতিও বেড়েছে।

ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে সব মিলিয়ে ১১৪ কোটি ৮৫ লাখ ডলার এসেছে। প্রায় পুরোটাই ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে। মাত্র ১ কোটি ডলারের খাদ্যসহায়তা অনুদান হিসেবে পাওয়া গেছে। গত বছর একই সময়ে এসেছিল প্রায় ৮৫ কোটি ডলার।

এদিকে ঋণ পরিশোধের পাল্লা ভারী হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে জুলাই-সেপ্টেম্বরে পরিশোধিত ঋণের মধ্যে ৮২ কোটি ডলার আসল এবং ৪৬ কোটি ডলারের বেশি সুদ বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ে বিদেশি ঋণের সুদাসল বাবদ সরকারকে প্রায় ১১২ ডলার পরিশোধ করতে হয়েছিল।

জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে মাত্র ৯১ কোটি ডলারের। আগের বার একই সময়ে এর পরিমাণ মাত্র পৌনে তিন কোটি ডলার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টানা দুই মাস আড়াই বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছে
  • তিন মাসে গৃহকর আদায় কমেছে ৩০ কোটি টাকা
  • জুলাই–সেপ্টেম্বরে ঋণছাড়ে এগিয়ে বিশ্বব্যাংক ও রাশিয়া, কোনো অর্থ দেয়নি চীন
  • সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি 
  • ২৯ দিনে প্রবাসী আয় ২৪৩ কোটি ডলার
  • সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
  • শেষে এসে ‘বিপদে’ ওয়াসা
  • তিন মাসে বিদেশি ঋণ এসেছে ১১৫ কোটি ডলার, শোধ ১২৮ কোটি ডলার