মেট্টোরেলের MR-2 এবং MRT-4 এ নারায়ণগঞ্জকে যুক্ত করার দাবিতে গণসাক্ষর
Published: 10th, September 2025 GMT
মেট্টোরেলের MR-2 এবং MRT-4 এ নারায়ণগঞ্জকে যুক্ত করার দাবিতে NGB আয়োজিত নারায়ণগঞ্জবাসী এবং ছাত্র প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গণসাক্ষর কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়ায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গনে কর্মসূচির প্রথম দিনে ১ হাজার ৫০০ জনের অধিক মানুষ গণসাক্ষর করেছে। বৃহস্পতিবারও একই স্থানে এই কর্মসূচি চলবে।
গণসাক্ষর কর্মসূচি আয়োজনে প্রতিনিধিত্ব করেন, আলিফ দেওয়ান, মেহেরাব হোসেন প্রভাত, এইচ এম তাওহিদ, মোয়াজ্জেম হোসেন সাগর এবং ফাহিম খন্দকার অনিক সহ NGB এর সদস্যবৃন্দ।
আয়োজকরা বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ নাগরিক।
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ হতে রাজধানী ঢাকায় যাতায়াতের প্রধান ভরসা সড়কপথ ও আংশিকভাবে রেলপথ । নারায়ণগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, কোচিং, চিকিৎসা, ব্যবসা ও চাকুরির জন্য সিটি কর্পোরেশনের জরিপ অনুযায়ী আপ ডাউন করে ৪/৫ লক্ষের অধিক মানুষ ঢাকা-নারায়নগঞ্জ যাতায়াত করে।
যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া ও মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের জ্যামের কারনে রাস্তায় আমাদের মুল্যবান কর্মঘন্টা নষ্ট হচ্ছে। এতে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ দিনদিন বেড়েই চলছে। এই কষ্ট থেকে মুক্তির জন্য আশার আলো দেখাচ্ছিল স্বপ্নের মেট্রোরেল ( MRT LINE-2 ) প্রকল্প। সেই প্রকল্পের আওতায় পূর্বের নির্ধারিত রুট অনুসারে নারায়ণগঞ্জ সদর পর্যন্ত ( চাষাড়া ) মেট্রোরেল স্টেশন হওয়ার কথা ছিল।
সেই রুট অনুসারে ( MRT LINE-2) হতো মেট্রোরেল এর সবচেয়ে লাভবান রুট। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে নারায়ণগঞ্জবাসী দীর্ঘদিনের অভিশপ্ত জানযট থেকে মুক্তি পেত। সাশ্রয় হতো সময় ও অর্থ, গতি পেতো অর্থনীতি। যানযটের কারনে অনেকে ২০-৩০ হাজার টাকা খরচ করে ঢাকায় বসবাস করছে।
এতে ঢাকার উপর চাপ যেমন বাড়ছে, মধ্যবিত্তদের সঞ্চয় তেমন কমছে। ঢাকাকে কেন্দ্রীকরণ করতে নারায়ণগঞ্জ জেলাকে মেট্রোরেলের আওতার আনার বিকল্প নেই।কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, কিছুদিন আগে মিডিয়ার সুবাদে আমরা জানতে পারি, “বিশ্বব্যাংকের ঋনে হচ্ছে মেট্রোরেল-২,বাদ যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ, লাইনের দৈর্ঘ্য ৩৫ কিমি থেকে কমিয়ে করা হচ্ছে ২৫ কিমি। এই খবরটি আমাদের সমগ্র নারায়ণগঞ্জবাসীকে চরমভাবে আশাহত করে।
( MRT LINE- 2) যদি নারায়নগঞ্জ সদর (চাষাড়া) পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয় তাহলে নারায়ণগঞ্জবাসী দীর্ঘদিনের যানযটের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে। কোনরকম জনমত জরিপ না করে কি কারনে এই রুট এলাইনমেন্ট বাতিল করা হলো সেটা নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে অজানা।
এতে জনগনের মনে নানারকমের প্রশ্ন ও গুঞ্জন তৈরী হচ্ছে। কোনো বিশেষ মহলকে সুবিধা দেয়ার জন্য এই রুট এলাইনমেন্ট বাতিল করা হল কিনা সেই প্রশ্ন জাগছে নারায়ণগঞ্জবাসীর মনে।
DMTCL এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আমরা জানতে পারি,নারায়নগঞ্জকে যুক্ত করা হবে ( MRT LINE-7) এর মাধ্যমে। কিন্তু ( MRT LINE-7 ) এখনও DMTCL এর পরিকল্পনায় নেই এবং এর রুট এলাইনমেন্ট এখনও ঠিক হয়নি।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। এ যানজটের কারণে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পেরুতে সময় লেগে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে।
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ কিংবা সিটি কর্পোরেশন এ যানজট থেকে জেলাবাসীকে পরিত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দিন যতই বড়ছে ততই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ।
নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সড়ক নাই সেই সড়কে যানজট নাই। মূল সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সব জায়গায়ই যানজট আর যানজট। তবে এ যানজটের পেছনে মূল সড়কের যানজটকেই দায়ি করছেন অনেকে।
তারা বলছেন, মূল সড়ক যদি যানজট মুক্ত থাকতো তাহলে এর আশেপাশের সড়কগুলো যানজটের সুষ্টি হতো না। মূল সড়কে তীব্র যানজটের কারণেই এর প্রভাব পড়ছে অন্য সড়কগুলোতেও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরের চাইতে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণে করেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচলের কথা শুনলেই মানুষ আতকে উঠে। কারণ, যানজটের মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা পাড় হতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা।
এ রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীকেও যানজটে আটতে থাকতে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার যানজটে আটকা পড়লেই দিন শেষ। কখন বাড়ী কিংবা অফিসে যাবেন তার কোন ঠিক নেই।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। ফ্লাইওভারের কর্মযজ্ঞের ফলে যানবাহনগুলোকে একটু ধীর গতিতে যেতে হয়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।
তবে এ যানজটের আরও একটি বড় কারণ চোঁখে পড়ে, আর তা হলো পঞ্চবটি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের দু’পাশে ট্রাক ও কভার্ডভ্যানগুলো অবৈধভাবে পাকিং করে রাখা।
এসব যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখার কারণে মূল সড়ক অনেকটাই সরো হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে অন্যসব যানবাহনগুলো ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
অথচ, পঞ্চবটির খুব কাছেই রয়েছে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান স্ট্যান্ড। যানবাহনের চালকরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ী না রেখে সড়কের পাশে অবৈধভাবে বাঁকাত্যাঁড়া গাড়ীগুলো রাখছেন। এর ফলে যে, ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজটের কবলে পড়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, এ বিষয়ে যেন তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই।
তাদের ভাব-নমুনা দেখা মনে হয় যে, তারাই যেন এ সড়কটির মূল মালিক। না পুলিশে তাদের কিছু বলে, না তারা জনগণের কোন কথা শোনে। তারা তাদের ইচ্ছেমত গাড়ীগুলো রেখে যানজটের সৃষ্টি করছেন।
চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চলাচল করা ভুক্তভোগী পথচারিরা বলছেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এত ভয়াবহ যানজট আমরা কখনোই চোঁখে দেখিনি। পঞ্চবটি ফ্লাইওভারের নিচে যেভাবে ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো রাখা হয় পুরো সড়কটা তারা কিনে নিয়েছে। পুলিশও কিছু বলে না।
এছাড়া চাষাঢ়া থকে পঞ্চবটি পর্যন্ত পুরো সড়কে দু’পাশেই তারা গাড়ীগুলো রাখছেন। রাস্তাটি পাশে এমনিতেই জায়গা কম, আবার যদি তারা এভাবে গাড়ী রাখেন তাহলে যানজটের সৃষ্টিতো হবেই। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল বলেন, আসলে নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে পঞ্চবটি এলাকাতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলেন এবং সেখানে এ স্ট্যান্ডকে স্থানান্তর করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
এখন তারা কিছু গাড়ী ওই স্ট্যান্ডে রাখে বাকি গাড়ীগুলো সড়ক দখল করে এলোপাথারিভাবে রাখে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও যেন কারো কোন কিছু বলার নেই। কারণ, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার ডিসি-এসপির সাথে বসা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয় নাই।
তবে, ৫ আগস্টে দেশে একটি বড় পরিবর্তনের পর আশা করছিলাম এবার হয়তো এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু না। সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়েই যানজটের মত দুর্ভোগ দুর্দশাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।
তারা বলেন, আসলে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সেদিন ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এতবড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ যদি সেই শান্তি শৃঙ্খলা ভোগই করতে না পারে, তাহলে এত প্রাণ দিয়ে কি লাভ হলো?
আমরা জানিন না, প্রশাসন আসলে কাদেরকে খুশি করাতে চাচ্ছেন? মুষ্টিম কিছু চালকদের জন্য হাজার হাজার মানুষের এ কষ্ট কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, তারা যেন খুব শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। নারায়ণগঞ্জবাসীকে যেন কিছুটা স্বস্তি দেয়।
এ বিষয়ে টিআই করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে যানজটের যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিলো বর্তমানে তা কমে আসছে। আশাকরছি, আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। পঞ্চবটি সড়কে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য এ রুটে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এমতাবস্তায় যদি কোন চালক রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।