নেপালের রাজনৈতি উত্থান-পতনের ইতিহাস
Published: 11th, September 2025 GMT
চীন ও ভারতের মাঝখানে অবস্থিত নেপালে ২০০৮ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৪ বার সরকার গঠন হয়েছে। এর মধ্যে কোনো সরকারই পাঁচ বছর ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেননি। কিন্তু কেন?
১৯৫১ সালে আগে নেপাল বিভিন্ন বংশের রাজাদের দ্বারা শাসিত হতো। এর মধ্যে রানা শাসকেরা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ব্যবস্থা চালু করে দেশ পরিচালনা করতেন। ১৯৫১ সালে গনতন্ত্রপন্থি আন্দোলনের জোয়ারে রানা শাসন উৎখাত হয় এবং নেপালে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়।
আরো পড়ুন:
বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে ঐকমত্য কমিশন
নৌ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প থেকে ২৪৮০ কোটি টাকা সাশ্রয়: উপদেষ্টা
১৯৬১ সালে রাজা মহেন্দ্র রাজনৈতিন দলগুলো নিষিদ্ধ করে দেন। এবং নিজের ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করে পঞ্চায়েত নামের একটা পরিচিত শাসন ব্যবস্থা চালু করেন। কিন্তু এই ব্যবস্থার প্রতিও মানুষের ক্ষোভ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।
১৯৯০ সালে নেপালের মানুষের ক্ষোভ চূড়ান্ত রূপ নেয়। কিছু কিছু রাজনৈতিক দল আন্দোলন এবং বিক্ষোভ শুরু করে। তারা বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি করে।
পিপলস মুভমেন্ট নামে পরিচিত এই আন্দোলনের মুখে রাজা বীরেন্দ্র রাজনৈতিক দলের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হন। এবং পঞ্চায়েত ব্যবস্থা তখন বিলুপ্ত হয়।
১৯৯৬ সালে নেপালের বামপন্থী মাওবাদীরা রাজতান্ত্রিক সংসদীয় ব্যবস্থা উচ্ছেদ করে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে স্বসস্ত্র আন্দোলন শুরু করে। এই সংঘাত টানা এক দশক ধরে চলে। এবং সতেরো হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
২০২৬ সালে সাধারণ মানুষ রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। অবশেষে ২০০৮ সালে রাজতন্ত্র পুরোপুরি বিলুপ্ত হয় এবং নেপাল একটি ফেডারেল গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
২০১৫ সালে নেপাল একটি সংবিধান প্রণয়ন করে, এই সংবিধান অনুযায়ী গণতন্ত্রকে আরও দৃঢ় করার কথা থাকলেও সংবিধানের নানা ধারা এবং ক্ষমতা ভাগাভাগির নিয়ম মেনে দলগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব বেঁধে যায়। অনেক সময় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন, আস্থা ভোট কিংবা সাংবিধানিক ব্যাখ্যা নিয়েই তৈরি হয়েছে নানা সংকট, যা সরকার ভেঙে আবার গড়ার পথে ঠেলে দিয়েছে। কেপি শর্মা অলি প্রথমবার নেপালের প্রধানমন্ত্রী হন ২০১৫ সালে। তবে তার সরকার টিকেছিলো মাত্র ১ বছর। পরে তিনি টানা দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। যথাক্রমে ২০২৮ এবং ২০২১ সালে।
চতুর্থবার নির্বাচিত হন ২০২৪ সালে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘‘দলীয় স্বার্থ, ক্ষমতার লড়াই, সাংবিধানিত অস্পষ্টতা ও আঞ্চলিক প্রভাব এগুলো মিলে নেপালের রাজনৈতি অস্থিরতাকে দীর্ঘায়িত করেছে।’’
তথ্যসূত্র: বিবিসি
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র র র জন ত ব যবস থ ক ষমত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন: আকবর খান
ঢাকা-৮ আসনে দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান। তিনি বলেন, “ভোটের অধিকার জনগণের পবিত্র আমানত, এটি সচেতনভাবে প্রয়োগ করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা জননেতা সাইফুল হক-এর ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচনী গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি একথা বলেন।
গণসংযোগের শুরুতে ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাকের সভাপতিত্বে এক সংক্ষিপ্ত পথসভা হয়।
সেখানে আকবর খান বলেন, “নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে অবিলম্বে ভোটের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। গত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে—২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে—ঢাকা-৮ আসনের বহু নাগরিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। যে তরুণের এখন বয়স ২৫ বা ২৬, তারা কখনো ভোট দিতে পারেনি, ভোট কী তা জানে না- এটি গণতন্ত্রের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।”
তিনি আরো বলেন, “গত ১৬-১৭ বছর ধরে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং আমাদের নেতা সাইফুল হক জনগণের ভোটাধিকারের আন্দোলনে রাজপথে সংগ্রাম করে আসছেন। এর জন্য জেল-জুলুম, নির্যাতন সহ্য করেও তিনি থেমে থাকেননি। ভোটাধিকার গণমানুষের দীর্ঘ লড়াই ও ত্যাগের ফসল। এই অধিকার ভুল ব্যক্তিকে নির্বাচিত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।”
আকবর খান বলেন, “জননেতা সাইফুল হক গণমানুষের পরীক্ষিত নেতা। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের জনগণ যেন তাকে ভোট দিয়ে নিজেদের সুখ-দুঃখ, চাওয়া-পাওয়ার কথা ও দীর্ঘ বঞ্চনার ইতিহাস সংসদে তুলে ধরার সুযোগ করে দেন- এটাই আমাদের আহ্বান।”
গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকা থেকে শুরু হয়ে মতিঝিল, কমলাপুর, ফকিরাপুল, কালভার্ট রোড হয়ে বিজয়নগরে এসে শেষ হয়। এতে শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সিকদার হারুন মাহমুদ, মীর রেজাউল আলম, কবি জামাল সিকদার, ফাইজুর রহমান মুনির, বাবর চৌধুরী, মহানগর নেতা যুবরান আলী জুয়েল, সালাউদ্দিন, রিয়েল মাতবর, আরিফুল ইসলাম, মুজিবুল হক চুন্নু, গোলাম রাজিব, মাহমুদুল হাসান খান, ফয়েজ ইবনে জাফর, নান্টু দাস, শিবু মহন্ত ও হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
ঢাকা/এএএম/এস