জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গণভোট অথবা গণপরিষদ নির্বাচনই হতে পারে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত পদ্ধতি বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)।

বৃহস্প‌তিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অভিমত জানিয়েছেন এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার যুবায়ের আহমেদ ভূইয়া।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আবদুল হক এবং জলবায়ু ও সমুদ্রবিষয়ক সম্পাদক সারোয়ার সাঈদ।

ব্যারিস্টার যোবায়ের বলেছেন, দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বিশেষজ্ঞ প্যানেল বিভিন্ন বিকল্প প্রস্তাব করেছে। এসবের মধ্যে আছে অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট এবং বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ। তবে, এবি পার্টির মতে, চারটি পথ বিবেচনা করার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে—

১.

অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নের বিষয়টি বর্তমান সংবিধান কার্যকর থাকা অবস্থায় কঠিন হবে। কারণ, সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তনে সাংবিধানিক সংঘর্ষ তৈরি করবে।

২. সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। তবে, এরও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, কারণ তা প্রকৃতিগতভাবে অ্যাডভাইজরি।

৩. গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করলে এতে জনগণের ইচ্ছা ও মতামতের প্রতিফলন ঘটবে, যা জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তির সবচেয়ে বাস্তবসম্মত উপায়।

৪. পাশাপাশি গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমেও এটি বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।

ব্যারিস্টার যোবায়ের বলেন, “পরবর্তী সাধারণ কোনো সংসদ জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি দিতে পারবে না। সংবিধানের ভিত্তিমূল পরিবর্তনে আইনি বৈধতা দিতে হলে গণভোট অথবা গণপরিষদ বা সংস্কার পরিষদ গঠনের মাধ্যমে বৈধতা দিতে হবে।”

ব্যারিস্টার সানী আবদুল হক বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হলে সংবিধানের মৌলিক কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনতে হবে। এ পরিবর্তন কেবল গণভোট অথবা সংস্কারকৃত গণপরিষদের মাধ্যমেই সম্ভব। অন্যথায়, এটি সাংবিধানিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা মনে করি, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণভোট অথবা গণপরিষদই হবে সবচেয়ে উত্তম ও গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি।”

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’

আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।

জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।

জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।

এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।

জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।

জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের সুপারিশ, একমত নয় দলগুলো
  • ‘সংবিধান আদেশ’ জারির সুপারিশ করতে পারে কমিশন: আলী রীয়াজ
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • কমিটি গঠন, প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত 
  • বর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ
  • বিএনপি নির্বাচনমুখী কর্মসূচিতে যাবে
  • দলগুলোর সঙ্গে বুধবার আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন
  • জুলাই সনদ নিয়ে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে
  • ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন হতে হবে
  • জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ ফের এক মাস বাড়ল