শাপলা-গণহত্যায় শহীদদের রাষ্ট্রীয় ভাতা দিতে হবে: মামুনুল হক
Published: 12th, September 2025 GMT
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির ও শাপলা স্মৃতি সংসদের চেয়ারম্যান মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, “যেভাবে একাত্তরের এবং চব্বিশের শহীদদের পরিবারের জন্য সরকারিভাবে ভাতা দেওয়া হয়, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের ভিত্তি গড়ে তোলা শাপলার শহীদদের জন্যও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় নিয়মিত ভাতা দিতে হবে।”
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মুহাম্মদপুরে হলি উম্মাহ মিলনায়তনে এই ফোরামের নিয়মিত মাসিক সহায়তা কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, “শাপলার এই অবিনাশী চেতনাকে যথাযোগ্য মর্যাদায় আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা এবং জাতিকে স্বাধীন ধর্মীয় চিন্তার সুযোগ করে দিতে ও অরক্ষিত দেশকে সুরক্ষিত করার আন্দোলনে জীবন দিয়ে ত্যাগ স্বীকার করা শহীদদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে শাপলা স্মৃতি সংসদ ধারাবাহিক কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছে।”
তিনি বলেন, “২০১৩ সালের শাপলা গণহত্যায় নিহত শহীদ পরিবারকে নিয়মিত মাসিক সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে শাপলা স্মৃতি সংসদের তত্ত্বাবধানে ‘শাপলা শহীদ গার্ডিয়ান্স ফোরাম’ ইতোমধ্যেই গঠিত হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন শহীদ পরিবারের হাতে সহায়তা তুলে দেওয়া হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ কার্যক্রম ধাপে ধাপে অন্যান্য শহীদ পরিবারগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করবে এবং ইনশাআল্লাহ নিয়মিত মাসিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে।”
বিশেষ অতিথি ছিলেন শাপলা স্মৃতি সংসদের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, নির্বাহী সভাপতি মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, সহ-সভাপতি মাওলানা ইলিয়াস হামিদী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা সালাহুদ্দীন মাসউদ এবং মিডিয়া সম্পাদক মাওলানা আরিফুর রহমান প্রমুখ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সহ য ত পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)