ম্যানচেস্টারের আকাশে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে যেন ক্রিকেটের আতশবাজিই ফেটে পড়েছিল। যে খেলাটিকে আমরা ‘টি-টোয়েন্টি’ বলে জানি, সেটির সীমা যে এখনও কতদূর বাড়তে পারে তারই প্রমাণ দিল ইংল্যান্ড। মাত্র ২০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে তারা জমা করল অবিশ্বাস্য ৩০৪ রান!

এমন রান তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা যেন শুরু থেকেই স্রোতের বিপরীতে দাঁড়ানো এক নৌকা। শেষ পর্যন্ত ১৫৮ রানে গুটিয়ে গিয়ে ১৪৬ রানের বিশাল হারে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় তারা। সিরিজ এখন সমতায় (১-১)। তাতে রোববারের লড়াই হয়ে উঠেছে অঘোষিত ফাইনাল।

আরো পড়ুন:

ইতিহাস গড়ে এসএ২০ তে সবচেয়ে দামী ক্রিকেটার ব্রেভিস

শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের ইতিহাস গড়া জয়

দিনটা যে ফিল সল্টের, তা শুরু থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। মাত্র ৩৯ বলে শতক পূর্ণ করে ইংলিশ ওপেনার ভেঙে দিলেন লিয়াম লিভিংস্টোনের রেকর্ড। শেষ পর্যন্ত ৬০ বলে অপরাজিত ১৪১ রান করেন তিনি। যা টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের ইতিহাসে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ। এই ইনিংস খেলে নিজেকেই ছাড়িয়ে গেলেন তিনি। পেছনে ফেলেন ২০২৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করা ১১৯ রানকেও। যা ছিল এতোদিন সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ ইংলিশ ক্রিকেটার হিসেবে। তার ব্যাটে ১৫টি চার আর ৮টি ছক্কার ঝলকানি যেন দর্শকদের চোখে আগুন ধরিয়ে দিল। আরেক প্রান্তে ক্যাপ্টেন জস বাটলারও ছিলেন সমান আগ্রাসী। মাত্র ৩০ বলে করেন ৮৩ রান। ৮টি চার আর ৭টি ছক্কার তাণ্ডবে সাজানো ছিল ইনিংসটি।

সল্ট-বাটলারের পর জ্যাকব বেথেলের ব্যাট থেকে এল ১৪ বলে ২৬। শেষ দিকে হ্যারি ব্রুকের ২১ বলে অপরাজিত ৪১ রানের ইনিংস ইংল্যান্ডকে নিয়ে যায় রানের পাহাড়ে। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই ইংল্যান্ড তোলে ১০০ রান। এটি ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

এই ৩০৪ রান শুধু ইংল্যান্ডের ইতিহাসই নয়, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিরও এক মাইলফলক। তৃতীয় দল হিসেবে ৩০০ পার করল তারা। আগেই ৩৪৪ রান করেছে জিম্বাবুয়ে (গাম্বিয়ার বিপক্ষে), আর ৩১৪ রান করেছে নেপাল (মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে)। ৩০৪ রান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।

৩০৫ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা শুরুতে কিছুটা লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিলেও দ্রুত ধসে পড়ে। ওপেনার রায়ান রিকেলটন ঝড় তুললেও (১০ বলে ২০) খুব বেশি সময় টিকতে পারেননি। অধিনায়ক এইডেন মার্করাম ২০ বলে ৪১ আর জন ফরচুইন ১৬ বলে ৩২ রান করেন। স্টাবস (২৫) ও ফেরেইরা (২৩) কিছুটা চেষ্টা করলেও তা ছিল ব্যর্থ সংগ্রাম। শেষ পর্যন্ত ১৫৮ রানে থেমে যায় প্রোটিয়াদের ইনিংস।

ইংল্যান্ডের হয়ে জোফরা আরচার নিয়েছেন ৩ উইকেট, স্যাম কারেন ও লিয়াম ডোউসন নিয়েছেন ২টি করে।

টি-টোয়েন্টি মানেই আগ্রাসী ক্রিকেট। তবে ম্যানচেস্টারের এই ম্যাচ ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে করিয়ে দিল এটি শুধু খেলা নয়, এ যেন এক মহোৎসব। ব্যাট-বলের লড়াইকে রূপকথার মতো রঙিন করে দিল ইংল্যান্ড। আর দর্শকেরা পেল এক অবিস্মরণীয় সন্ধ্যা। 

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ক ট র কর ড র ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

আবার ‘লাস্ট মিনিট শো’, জন্মদিনের রাতে স্লটকে জয় উপহার ফন ডাইকের

লিভারপুল ৩–২ আতলেতিকো মাদ্রিদ

জন্মদিনের রাতে এর চেয়ে ভালো উপহার আর কী হতে পারে!

রেফারি শেষ বাঁশি বাজাতেই মাঠে ঢুকে পড়লেন আর্নে স্লট। লিভারপুলের সমর্থকেরা তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে থাকলেন, দল জেতায় অভিনন্দনও জানালেন। মুখে চওড়া হাসি নিয়ে হাত নেড়ে স্লট সেই অভিবাদনের জবাব দিলেন।   

ভার্জিল ফন ডাইকের সঙ্গে আলিঙ্গনের সময় স্লটকে একটু বেশিই খুশি মনে হলো। কারণ, লিভারপুল অধিনায়ক ফন ডাইক ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত না হলে তাঁর বিশেষ রাতটা যে অনেকটাই পানসে হয়ে যেত!

২০২৫–২৬ মৌসুমে শেষ মুহূর্তে জয়সূচক গোল করাকে অভ্যাস বানিয়ে ফেলেছে লিভারপুল। যেটিকে বলা হচ্ছে লাস্ট মিনিট শো, কয়েকটি সংবাদমাধ্যম নাম দিয়েছে স্লট টাইম।

এবার সেই শো–এর নায়ক ফন ডাইক। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে তাঁর হেডারেই আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ড্রয়ের পথে থাকা ম্যাচটা ৩–২ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়নস লিগে শুভসূচনা করল লিভারপুল।

এ নিয়ে এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতল লিভারপুল। সবকটি ম্যাচে অলরেডরা জয়সূচক গোল করল ৮০ মিনিটের পর; এর তিনটিই যোগ করা সময়ে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ