বিদেশি চলচ্চিত্র ও টিভি নাটক দেখার জন্য উত্তর কোরিয়ায় মৃত্যুদণ্ডের হার বাড়ছে
Published: 13th, September 2025 GMT
উত্তর কোরিয়ার সরকার ক্রমবর্ধমানভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করছে। এই দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে বিদেশি চলচ্চিত্র ও টিভি নাটক দেখার এবং শেয়ার করার সময় ধরা পড়া ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে শনিবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা একনায়কতান্ত্রিক দেশ উত্তর কোরিয়া তার জনগণকে আরো জোরপূর্বক শ্রমের শিকার করছে। দেশটি তার নাগরিকদের স্বাধীনতা আরো সীমিত করছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস দেখেছে, গত দশকে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র ‘নাগরিকদের জীবনের সকল দিকের’ উপর নিয়ন্ত্রণ কঠোর করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “আজকের বিশ্বে অন্য কোনো জনসংখ্যা এই ধরনের বিধিনিষেধের আওতায় নেই।”
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক জানিয়েছেন, যদি এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে, তাহলে উত্তর কোরিয়ার মানুষ ‘এতো দিন ধরে যে দুর্ভোগ, নিষ্ঠুর নিপীড়ন এবং ভয় সহ্য করেছে তার আরো বেশি শিকার হবে।’
গত ১০ বছরে উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে আসা তিন শতাধিক লোকের সাক্ষাৎকারের উপর ভিত্তি করে তৈরি এই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, শান্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড আরো বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে।
২০১৫ সাল থেকে উত্তর কোরিয়ায় কমপক্ষে ছয়টি নতুন আইন চালু করা হয়েছে যা কঠোর শাস্তি প্রদানের অনুমতি দেয়। এখন মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি হতে পারে চলচ্চিত্র ও টিভি নাটকের মতো বিদেশি মিডিয়া কন্টেন্ট দেখা এবং শেয়ার করা।
পলাতকরা জাতিসংঘের গবেষকদের জানিয়েছেন, ২০২০ সাল থেকে বিদেশি কন্টেন্ট শেয়ার করার জন্য আরো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তারা বর্ণনা করেছেন, কীভাবে জনসমক্ষে ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় যাতে মানুষের মধ্যে ভয় জাগ্রত হয় এবং আইন ভঙ্গ করা থেকে তাদের নিরুৎসাহিত করা হয়।
২০২৩ সালে পালিয়ে আসা কাং গিউরি বিবিসিকে জানিয়েছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার কন্টেন্ট সহ ধরা পড়ার পর তার তিন বন্ধুকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পরিকল্পিতভাবে প্রচারণা চলছে যে বিএনপি সংস্কারের বিরোধী: মির্জা ফখরুল
বিএনপি দল হিসেবে ‘সবচেয়ে আগে সংস্কারের কথা বলেছে’ উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে একটা অত্যন্ত পরিকল্পিত প্রচারণা চলছে যে বিএনপি সংস্কার চায় না। বিএনপি সংস্কারের বিরোধী।’
প্রবাসে বিএনপির সদস্য পদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।
বিএনপিই প্রথম সংস্কারের কথা বলেছে, কাজ শুরু করেছে এবং আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আজকে যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, সেই সংস্কারের শুরুটা কিন্তু শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের (বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা) হাত দিয়েই। তিনি একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসনব্যবস্থায় গিয়েছিলেন, গণতান্ত্রিক একটা ব্যবস্থায় গিয়েছিলেন। তিনি গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলেন।...তার সময় কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও সম্পূর্ণ নতুন সংস্কার নিয়ে নতুন কাজ শুরু হয়। একটা বদ্ধ অর্থনীতি থেকে আমরা একটা উন্মুক্ত অর্থনীতিতে, একটা ফ্রি মার্কেট ইকোনমিতে গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলাম তার নেতৃত্বে।’
এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া (বিএনপি চেয়ারপারসন) প্রেসিডেন্ট ফর্ম অব গভর্নমেন্ট (রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থা) থেকে পার্লামেন্ট ফর্ম অব গভর্নমেন্ট (সংসদীয় ব্যবস্থা) নিয়ে এসেছিলেন।’
বর্তমান সময়কে প্রযুক্তির সময় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির নেতা–কর্মীদের আরও বেশি প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অনলাইনে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদ গ্রহণ এবং তার ফি পরিশোধের প্রক্রিয়া নিয়ে একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। তাতে বলা হয়, এখন থেকে বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে অনলাইনে বিএনপির দলীয় ওয়েবসাইটে গিয়ে সদস্য পদ গ্রহণ করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ ছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এ জেড এম জাহিদ হাসান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।