সোনারগাঁয়ে মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করায় যুবককে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা
Published: 13th, September 2025 GMT
সোনারগাঁয়ে মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করায় ইমরান হোসেন নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী মাদক কারবারি ও তার সহযোগীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় ইমরান বর্তমানে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ইমরানের পিতা হাবিবুর রহমান শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সোনারগাঁও থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের পাঁচআনী এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে ইমরান হোসেন (৩৫) এলাকায় মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করে আসছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ইসলামপুর সাকিনস্থ গুদারঘাট এলাকায় সাবেক ইউপি সদস্য মনির মেম্বারসহ তার সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ইমরানের ওপর হামলা চালায়।
এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে গুরুতর জখম করার পাশাপাশি তার কাছে থাকা মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী গুরুতর আহত ইমরানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীর পিতা মো.
এদিকে স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকায় ইমরানের ওপর এ হামলা হয়েছে। তারা দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে। ইমরানের ওপর হামলার ঘটনায় নতুন করে আলোচনায় এসেছে সাবেক ইউপি সদস্য মনির মেম্বারের নাম।
স্থানীয়দের অভিযোগ, একজন সাবেক জনপ্রতিনিধি হয়েও তিনি গড়ে তুলেছেন একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত ও সন্ত্রাসী চক্র। গত ১০ আগস্ট র্যাব-১১ এর হাতে মনির মেম্বারসহ ৬ জন সহযোগীকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, ছুরি, সুইচ গিয়ার, দা ও ১০০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে তখনই একাধিক অপহরণ, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার অভিযোগ উঠে আসে।
তবে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই আবারও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। এলাকাবাসীর দাবি, রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ের কারণে তিনি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন। এর ফলে এলাকায় চরম ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর পিরোজপুর ইউনিয়নের পাচআনী এলাকায় সোলাইমান নামে এক যুবকের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে তাকে অপহরণ করে আটকে রেখে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে।
মনির মেম্বার উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের পাচকান্দি এলাকার খাসেরগাঁও গ্রামের মৃত শামসুদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মামলা রয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, তার নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও আশপাশের এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে আসছে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁও থানা ওসি (তদন্ত) রাশেদ হাসান খান বলেন, মনির মেম্বার দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
সাম্প্রতিক হামলার ঘটনাও একটি অভিযোগ পেয়েছি আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হত য স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ মন র ম ম ব র ইমর ন র এল ক য় স ন রগ ব যবস উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার
চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার একটি দোকান থেকে নুরুল আবছার (২৭) নামের এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায় একদল মুখোশধারী ব্যক্তি। আজ বুধবার সকাল সাতটায় তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পুলিশের তৎপরতায় সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি ছাড়া পান।
উদ্ধারের পর পটিয়া থানা প্রাঙ্গণে অপহরণের শিকার নুরুল আবছার প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ব্যাংকে চাকরি করতেন। সম্প্রতি তাঁর চাকরি চলে যায়। এরপর পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার সাহিত্য বিশারদ সড়কে মুরগির দোকান দেন। প্রতিদিনের মতো আজ সকালে দোকান খোলেন তিনি। এ সময় তিন থেকে চারজন মুখোশধারী লোক ধারালো অস্ত্রের মুখে তাঁকে ধরে অটোরিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যায়। তারা তাঁর পকেটে থাকা ৪০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে আরও ৪ লাখ টাকা দাবি করে, পরে ১৭ লাখ এনে দিতে বলেন। তাঁকে চন্দ্র কালারপোল নামের নির্জন এলাকায় নিয়ে অপহরণকারীরা তাঁকে মারধরের পাশাপাশি ছুরিকাঘাতও করেন।
পটিয়া থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ চন্দ্র দে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত তাঁকে উদ্ধারের তৎপরতায় নামে। পরে চন্দ্র কালারপোল এলাকায় পুলিশ গেলে উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান জানান, ব্যবসায়ীকে অপহরণ করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরে তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।