বয়স্ক কয়েদিদের মুক্তি দিতে যাবজ্জীবন সাজা ৩০ বছর থেকে কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
লাইফ টাইম কমিয়ে বয়স নির্ধারণ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত নির্ধারণ করিনি। আলোচনার ভিত্তিতে নারীদের ক্ষেত্রে হয়তো ২০ বছর করে দিতে চাচ্ছি। ছেলেদের ক্ষেত্রে হয়তো আরো একটু বেশি হতে পারে।”
কারাগারে অনেক সমস্যা আছে, এটা সংস্কারেরও দরকার জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “কারাতে বাজেটের ক্ষেত্রে একটু সমস্যা। বন্দিদের মধ্যে যাদের অনেক বয়স হয়ে গেছে, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, তাদের ওষুধের জন্য বাজেটেরও বেশি দরকার হয়। আমরা চাচ্ছিলাম লাইফ টাইম তো ৩০ বছর, সেটাকে কমিয়ে কত করা যায়, যুক্তিযুক্ত একটা করে, যারা বয়স্ক হয়ে গেছে তাদের যাতে ছাড়ার ব্যবস্থা করা যায়।”
“আবার কতগুলো স্পেসিফিক আছে, তার বয়সটা কত। যে ১৮ বছরের অপকর্ম করেছে, ২০ বছর পর তাকে ছেড়ে দিলে তখন তো তার বয়স ৩৮ বছর হয়। সে হয়তো এসে আবার অপকর্ম করতে পারে। এ বিষয়গুলো দেখা হবে, তবে মেয়েদের ক্ষেত্রে আমরা একটু বেশি লিবারেল,” যোগ করেন উপদেষ্টা।
বৈঠকের আলোচ্য বিষয় তুলে ধরে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “আজকে কোর কমিটির মিটিংয়ে দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুএকটি নির্বাচন হয়েছে এসব নিয়ে অল্প আলোচনা হয়েছে। পুলিশের ট্রেনিং, আসন্ন সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি, ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিশেষ করে মিয়ানমার সীমান্তে মাদক ও জেলেদেরে মাছ ধরার সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। লুট হওয়া অস্ত্র কীভাবে আনা যায় এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মেইনলি আলোচনা হয়েছে পূজার আইন শৃঙ্খলা ও সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে। কারা সংস্কার ও ফরিদপুরে দুটি ইউনিয়নের সমস্যা নিয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “ফরিদপুরে দুটি ইউনিয়ন। দুই ইউনিয়নে কত মানুষ, কত ভোটার অথচ দুটি ইউনিয়নে সমস্যার জন্য লাখ লাখ মানুষকে জিম্মি করে রেখেছেন। এটা কোনোভাবে বরদাশত করা হবে না। আজকে বিকেলের মধ্যে তারা যদি সমাধান না করে তাহলে আমরা আইন প্রয়োগ করার মাধ্যামে রাস্তা ক্লিয়ার করবো। রাস্তা ব্লক করার অধিকার কারও নাই। দাবি দাওয়া থাকলে প্রপার চ্যানেলে জানানো যাবে, এজন্য রাস্তা ব্লক করে মানুষকে ভোগান্তি দিয়ে, এটা কখনও গ্রহণযোগ্য নয়।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অপকর্মে জড়িতদের ছাড় নয়: রিজভী
বিএনপির নাম ব্যবহার করে অপকর্মে জড়িতদের কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে গণমাধ্যমকে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, “সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়। যদি কেউ বিএনপির নাম ব্যবহার করে এসব অপকর্মে করে তাদের কোন ছাড় নয়। পাশাপাশি গণমাধ্যমকে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। একটি অসত্য সংবাদ রাষ্ট্র ও সমাজের মাঝে অনেক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে।”
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রিজভী।
কোনো কিছু ঘটলেই বিএনপির ওপর দায় চাপানো যেন কারো কারো অভ্যাসে পরিনণত হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “সমাজবিরোধী কাজে যেই জড়িত হবে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। সরকার কেনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং সরকারের মাঝে ঢিলেঢালা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।”
তিনি বলেন, “রাউজানে কিছু সন্ত্রাসী অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছে। অথচ, কয়েকটি গণমাধ্যমে বলা হলো এই অস্ত্রধারীরা বিএনপির লোক! কোনো প্রমাণ ছাড়া এগুলো লেখা দুঃখজনক। এই রাউজানে নানান অভিযোগে অনেক সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
বিএনপি ১৫ বছরের অত্যাচার-অবিচার থেকে মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছে। জুলাই-আগস্টে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। মানুষ হয়ত কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছে। কিন্তু এখনও আত আতঙ্কমুক্ত নয় বলেও জানান রিজভী।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি দেখা যাচ্ছে না মন্তব্য করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যে কৃত্রিমভাবে সংকট সৃষ্টি করছে যারা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ববাজারে যখন গমের দাম কমেছে তখন বাংলাদেশে এর দাম বেড়েছে। জনগণকে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব সরকারের। রাষ্ট্র এতে ব্যর্থ হলে যেকোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সৃষ্টি হতে পারে সামাজিক অস্থিরতা।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা