ঋণের দায়ে চার মৃত্যু, সেই ঋণ করেই ১২০০ মানুষকে খাওয়াল পরিবার
Published: 14th, September 2025 GMT
রাজশাহীর পবা উপজেলার বামনশিকড় গ্রাম থেকে গত ১৫ আগস্ট স্বামী-স্ত্রী ও তাদের দুই সন্তানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় মরদেহের পাশ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। যেখানে লেখা ছিল— ‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে।’
পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করে, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন মিনারুল। উদ্ধার হওয়া চিরকুটেও লেখা ছিল তেমন কথা। যে ঋণের দায়ে আত্মহত্যা করেছেন মিনারুল। সেই ঋণ করেই মিনারুল ও তার স্ত্রী-সন্তানদের জন্য চল্লিশার আয়োজন করেছেন মিনারুলের বাবা রুস্তম আলী।
আরো পড়ুন:
বরিশালে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পথচারীর মৃত্যু
বাসাইলে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে কিশোরীর মৃত্যু
লাখ টাকা ধার করে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এমন আয়োজন করেন তিনি। চল্লিশা অনুষ্ঠানে খাওয়ানো হয়েছে প্রায় ১২০০ মানুষকে।
সরেজমিন বামনশিকড় গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ভ্যানে চড়ে দূরের গ্রাম থেকে আত্মীয় স্বজনেরা আসছেন। উপস্থিত ছিল গ্রামের মানুষ। রুস্তম আলীর বাড়ির সামনে ও পেছনে দুটি প্যান্ডেল করা হয়েছে। প্যান্ডেলে বসে খাচ্ছেন সবাই। ভাতের সঙ্গে ছিল ডাল ও মুড়িঘণ্ট। রুস্তম আলী ঘুরে ঘুরে সবকিছু দেখছিলেন। এর এক ফাঁকে কথা হয় তার সঙ্গে।
রুস্তম আলী বলেন, ‘‘এই অনুষ্ঠানকে কেউ চল্লিশা বলে। কেউ বলে ফয়তা। সমাজের মানুষকে নিয়ে এটা করতে হয়। বাপ-দাদার আমল থেকেই দেখে আসছি। আমিও মনের আবেগে করলাম। যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী করে। আমি গরিব মানুষ, মাংস করতে পারিনি। মাছ দিয়ে মুড়িঘণ্ট আর ডাল করেছি।’’
তিনি বলেন, ‘‘আশপাশের মানুষজন বলছিল, চারজন মরার কারণে বাড়ি ভারি ভারি লাগছিল। ছোট বাচ্চারা ভয় পাচ্ছিল। অনুষ্ঠানটা করলাম যাতে ভয় ভাঙে। বাড়ি যেন পাতলা হয়। এ কারণে দুপুরে দোয়া হয়েছে। তারপর খাওয়া-দাওয়া। প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হলো। আত্মীয় স্বজন ও সমাজের মিলিয়ে ১২০০ মানুষের আয়োজন করা হয়েছে।’’
টাকা জোগাড় হলো কীভাবে জানতে চাইলে রুস্তম আলী বললেন, ‘‘সবই ধারদেনা। আমার তো জমানো টাকা নাই।’ শোধ করবেন কীভাবে, এ প্রশ্নে বলেন, ‘‘১৫-১৬ কাঠা জমি আছে। এক কাঠা বেচব, বেচে ধার শোধ করব। এছাড়া তো আর কোনো উপায় নেই।’’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাঈদ আলী মুর্শেদ বলেন, ‘‘ইসলামের দৃষ্টিতে এটা নাই। কিন্তু, কেউ মারা গেলে এটা করতে হয়। এটা আমাদের এলাকার একটা প্রথা।’’
আরো পড়ুন: একই ঘরে স্বামী-স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ের লাশ, চিরকুটে অভাবের কথা
ঢাকা/কেয়া/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নীল সমুদ্রে দক্ষিণ আফ্রিকার নীল বেদনা, ভারত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন
অনুমিত চিত্রনাট্যই যেন অনুসরণ করল মুম্বাইয়ের ফাইনাল ম্যাচ। ভারতের জার্সি গায়ে দর্শকে ঠাসা গ্যালারি রূপ নিল নীল সমুদ্রে। ২২ গজে আরও একবার ভারতের আধিপত্য, শাসন। যেন শিরোপার পায়চারি অনেক আগের থেকেই।
ব্যাটিংয়ে পর্বত ছুঁই-ছুঁই রান। এরপর স্পিনে ফুল ফোটালেন স্পিনাররা। দক্ষিণ আফ্রিকা লড়াই করল সাধ্যের সবটুকু দিয়ে। ব্যাটে-বলে সহজে হাল ছাড়ল না তারাও। হৃদয় জিতলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাত্তাই পেল না। ভারতের শক্তি-সামর্থ্যের গভীরতার কাছে হার মানতেই হলো প্রোটিয়া নারীদের।
আরো পড়ুন:
৪১১ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৯ রানে হারল জিম্বাবুয়ে
কেন বিপিএল থেকে বাদ পড়ল চিটাগং কিংস
মুম্বাইয়ের নাভি স্টেডিয়ামের নীল সমুদ্রে সব আতশবাজি আজ রাতে ফুটল ভারতের বিশ্বকাপ উদ্যাপনে। প্রথমবার ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডেতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। ৫২ রানের বিশাল জয় বুঝিয়ে দেয় হারমানপ্রীত কৌর, জেমিমা রদ্রিগেজ, দীপ্তি শর্মা কিংবা শেফালি বার্মা, স্মৃতি মান্ধানা, রিচা ঘোষরা ২২ গজকে কতটা আপন করে নিয়েছেন। শিরোপা জয়ের মঞ্চে ছাড় দেননি একটুও। ২০০৫ ও ২০১৭ বিশ্বকাপে যে ভুলগুলো হয়েছিল...সেগুলো আজ ফুল হয়ে ঝরল।
বৃষ্টি বাঁধায় বিঘ্ন ম্যাচে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ২৯৮ রানের স্কোর পায় ভারত। ৪৫.৩ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ২৪৬ রান করতে পারে প্রোটিয়া নারীরা। নাডিন ডি ক্লার্ক শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন আউট হলেন, স্টেডিয়ামের প্রায় ষাট হাজার ভারতীয় সমর্থকদের মুখে একটাই স্লোগান, চাক দে ইন্ডিয়া।
ওই জনসমুদ্রের স্লোগান, ‘ভারত মাতা কি জয়’, ‘বন্দে মাতরম’।
বিস্তারিত আসছে …
ঢাকা/ইয়াসিন