ফতুল্লায় প্রতারণা করে ১৫ লাখ টাকার রড নিলো প্রতারক চক্র, কুমিল্লায় গ্রেপ্তার ৩
Published: 15th, September 2025 GMT
ফতুল্লায় প্রতারণা করে ১৫ লাখ মূল্যমানের ৯ টন রড নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে কুমিল্লা থেকে অভিযুক্ত প্রতারক চক্রের তিন সদস্য কে গ্রেপ্তার করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। এ সময় প্রতারনা করে নিয়ে যাওয়া ৯ টন রড উদ্ধার করে পুলিশ।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কুমিল্লা জেলার হোমনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারনা করে নিয়ে যাওয়া রডসহ প্রতারক চক্রের তিন সদস্য কে গ্রেপ্তার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন নবী হোসেন মাসুম(২৫), শফিকুল ওরফে বেল্লাল (৪৭) এবং শেখ ফরিদ (৩৫)।
এর আগে প্রতারনা করে রড আত্মসাৎ করার অভিায়োগ এনে পাগলাস্থ চাকদা স্টীল এন্ড রি-রোলিং মিলস প্রাঃ লিঃ নামীয় প্রতিষ্ঠানে এজিএম কো-অর্ডিনেটর (সেলস্ এন্ড একাউন্স) মোঃ রাশেদ হোসেন বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় উল্লেখ্য করা হয়,মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাদীর প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি আল আমিনের সাথে পরিচয় হয় প্রতারক চক্রের মূল হোতা হোসেন তালুকদারের।
এক পর্যায়ে প্রতারক হোসেন তালুকদার ঢাকা বনানীর রহমান এন্টারপ্রাইজ নামের প্রতিষ্ঠানের মালিক বলে নিজেকে পরিচয় দিয়ে বাদীর প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধির সাথে রড ক্রয় করার আলোচনা করে।
পরবর্তীতে চলতি মাসের ৮ তারিখ বিকেলে হোসেন তালুকদার তার মোবাইল ফোন ০১৩১৩১৫১৫১২ হতে বাদীর প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি মো: আলআমিন আরমানের মোবাইলে ফোন করে ১৫ লাখ টাকার মালামাল অর্ডার করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত আসামি হোসেন তালুকদার অপর আসামী সাহিদের মাধ্যমে সিটি ব্যাংক নিকুঞ্জ উপ শাখা হইতে মিজানুর রহমান নামের প্রাইম ব্যাংকের একাউন্ট নং-২১৬৫২১৫০১৪৩৮৮ এর চেকের পাতা ৪২৬৯৬১৮ এর মাধ্যমে ১টি ক্লিয়ারেন্স চেক ও ডিপোজিট স্লিপ প্রদানের প্রেক্ষিতে বাদীর প্রতিষ্ঠানের একাউন্টে ১৫ লাখ টাকা এসেছে বলে জানিয়ে রাত ১১ টার দিকে তার প্রতিষ্ঠান থেকে একটি ট্রাকে করে ১৫ লাখ টাকা মূল্যমানের (১৯,৪১০ কেজি রড) রড নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্ট ব্যালেন্স যাচাই-ছাইয়ের পর টাকা না পাওয়ায় একদিন পর ৯ সেপ্টেম্বর হতে একাধিকবার বার বার ফোন করলে সে নানা তালবাহানা করে। আজ দিব, কাল দিব বলিয়া টাকা না দিয়া প্রতারণার আশ্রয় নিয়া কালক্ষেপন করে ঘুরাইতে থাকে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নন্দন সরকার এ বিষয়ে জানান, প্রতারণামূলক আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়েরর পর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারকচক্রের অবস্থান নিশ্চিত জয়ে সোমবার সকালে কুমিল্লার হোমনায় অভিযান চালিয়ে রড সহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেফতারের পর গ্রেপ্তারকৃতদের একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ১৫ ল খ
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।
জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।
দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।