সাজা শেষে ৬ বছর জেলে, দেশের পাঠালেন ‘বজরঙ্গি ভাইজান’
Published: 15th, September 2025 GMT
অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে গ্রেপ্তার হন ভারতীয় নাগরিক রামদেব মাহাতো (৬০)। পরে আদালতে সাজা হয় ৬ মাস। সাজা শেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারা কর্তৃপক্ষ তাকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়। কিন্তু মামলার নথিপত্রে রামদেবের ভারতের যে ঠিকানা লেখা ছিল, তা খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই ৬ মাসের সাজা শেষেও ৬ বছর ৩ মাস কেটে যায়। রামদেবের বাড়ি ফেরা হচ্ছিল না।
অবশেষে বাংলাদেশি সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী শামসুল হুদার প্রচেষ্টায় দেশে ফিরেছেন রামদেব। সামাজিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে শামসুল হুদা দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি বিদেশিদের দেশে ফেরাতে কাজ করে আসছেন। এ পর্যন্ত তিনি বিদেশি ৮০ বন্দির বিষয়ে কাজ শুরু করে ৫২ জনকে দেশে ফেরাতে সক্ষম হয়েছেন। ভারতে পাচার হওয়ার পর দেশটির কারাগারে থাকা কিছু নারীকেও তিনি দেশে ফিরিয়ে এনেছেন। এমন কার্যক্রমের জন্য তিনি ইতোমধ্যে ‘বাংলাদেশের বজরঙ্গি ভাইজান’ নামে পরিচিতি পেয়েছেন।
আরো পড়ুন:
১৯ মৎস্যজীবীসহ ভারতে আটক বাংলাদেশি ট্রলার
কলকাতায় সম্মিলিত সেনা সম্মেলন উদ্বোধন নরেন্দ্র মোদির
রামদেব মাহাতো ভারতের বিহার রাজ্যের পশ্চিম চাঁমপাড়ান জেলার গুদ্রা নামক গ্রামের বাসিন্দা। বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করার কারণে ২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে গ্রেপ্তার হন। পরে আদালত তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। সাজার মেয়াদ শেষ হয় ২০১৯ সালের ২৯ মে। ৬ বছর ৩ মাস ১৬ দিন বাড়তি জেল খাটার পর সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরেছেন।
তাকে নিতে এসেছিলেন ছেলে সুনীল মাহাতো এবং গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান লাল বাচ্চা যাদব। ছিলেন বিএসএফ সদস্যরাও। এ পারে ছিলেন পুলিশ, বিজিবি ও কারারক্ষীরা। সকালে তাকে জেলা কারাগার থেকে বের করে সীমান্তে নেওয়া হয়। সকাল থেকে সঙ্গে ছিলেন ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ শামসুল হুদা। রামদেবকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে পেরে তিনি খুশি।
রামদেবের ঠিকানা খুঁজে বের করার গল্পটা শোনালেন শামসুল হুদা। জানালেন, গ্রেপ্তারের সময় রামদেব হিন্দি ভাষায় তার নাম-ঠিকানা বলেছিলেন। এ পারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্য সেটি লেখার সময় হিন্দি ঠিকঠাক বুঝতে পারেননি। তিনি লিখেছিলেন ভুল করে। ফলে সাজার মেয়াদ শেষে কারা কর্তৃপক্ষ যখন তাকে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়, তখন ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়নি। গত বছরের ২৩ অক্টোবর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার জাকির হোসেন বিষয়টি তাকে অবহিত করেন। এরপর তিনি ঠিকানা খুঁজতে থাকেন।
শামসুল হুদা জানান, নথিপত্রে যেসব স্থানের নাম ছিল, সেগুলোর কাছাকাছি জায়গার নাম তিনি তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে পৌঁছে যান বিহারের গুদ্রা গ্রামে। যোগাযোগ করেন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান লাল বাচ্চা যাদবের কাছে। তার কাছে রামদেবের ছবি পাঠান। এভাবেই গত বছরের ২০ নভেম্বর রামদেবের পরিবারকে খুঁজে পাওয়া যায়।
এরপর ২৩ নভেম্বর বিষয়টি বাংলাদেশ ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসে রামদেবের প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্টসহ ই-মেইল পাঠানো হয়। রামদেব মাহাতোর জাতীয় পরিচয় ও নাগরিকত্ব যাচাই বাছাই শেষে ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাস পরে ছাড়পত্র বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাগজ আদান-প্রদানের পর তাকে প্রত্যার্পণের অনুমতি মেলে। সব প্রক্রিয়া শেষে সোমবার রামদেবকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগার থেকে বের করে দেশে পাঠানো হয়।
শামসুল হুদা জানান, গত কয়েক মাস আগে কারা অধিদপ্তর থেকে ১৪০ জন ভারতীয় নাগরিকের একটি তালিকা তিনি পেয়েছেন। এগুলোরও অধিকাংশেরই কোনো রকম ঠিকানা দেওয়া নেই। সেটি নিয়ে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ওই তালিকা থেকে বেশ কয়েকজনের পরিবারকেও খুঁজে পেয়েছেন। তাদেরও দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
ঢাকা/কেয়া/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ইনব বগঞ জ র মদ ব র
এছাড়াও পড়ুন:
মাহিমা চৌধুরী-সঞ্জয় মিশ্রা বিয়ে করেছেন?
একটি বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাশাপাশি হেঁটে যাচ্ছেন বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় মিশ্রা ও অভিনেত্রী মাহিমা চৌধুরী। লাল রঙের শাড়িতে বধূ সেজেছেন ৫২ বছর বয়েসি মাহিমা চৌধুরী। আর ক্রিম কালারের কুর্তা-কোট পরেছেন ৬২ বছরের সঞ্জয়। হাঁটতে হাঁটতে তাদের খুনসুটি করতেও দেখা যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ক্লিপে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ভিডিওটি। এ ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়, “৫২ বছর বয়সে মাহিমা চৌধুরী বিয়ে করলেন সঞ্জয় মিশ্রাকে। এরপর তাদের বিয়ের গুঞ্জন দ্রুত ছড়াতে থাকে। এমন খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেন নেটিজেনরা। অনেকে আবার সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
আরো পড়ুন:
অভিনেতা সুধীর দালভি গুরুতর অসুস্থ, অর্থ সংকটে পরিবার
৯ দিনে রাশমিকার সিনেমার আয় কত?
এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মাহিমা চৌধুরী ও সঞ্জয় মিশ্রার বিয়ের খবরটি সত্য নয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি তাদের পরবর্তী ‘দুর্লভ প্রসাদ কি দুসরি শাদি’ সিনেমার প্রচারণার অংশ।
রোমান্টিক-কমেডি ঘরানার ‘দুর্লভ প্রসাদ কি দুসরি শাদি’ সিনেমা নির্মাণ করেছেন সিদ্ধান্ত রাজ। সিনেমাটির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সঞ্জয় মিশ্রা। ববিতা চরিত্রে দেখা যাবে মাহিমা চৌধুরীকে। তাছাড়াও অভিনয় করেছেন—শ্রীকান্ত ভার্মা, পলক লালওয়ানি, নবনী প্রমুখ।
বাস্তব জীবনে মাহিমা ও সঞ্জয় মিশ্রার জীবনের পথ আলাদা। ব্যক্তিগত জীবনে মাহিমা বিয়ে করেছেন আর্কিটেক্ট ববি মুখার্জিকে। ২০০৬ সালে বিয়ে করেন তারা। এ সংসারে তাদের আরিয়ানা নামে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ২০১৩ সালে ভেঙে গেছে মাহিমা-ববির সংসার। এরপর কন্যাকে নিয়ে জীবনযাপন করছেন এই অভিনেত্রী।
অন্যদিকে, ২০০৯ সালে কিরণ মিশ্রার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ অভিনেত্রী সঞ্জয় মিশ্রা। এই সুখী দম্পতির ঘর আলো করে জন্ম নিয়েছে পাল এবং লমহা নামে দুই সন্তান।
ঢাকা/শান্ত