জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর মামলায় সাক্ষ্য দিলেন দুজন
Published: 15th, September 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশ পোড়ানোর ঘটনায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দুজন সাক্ষী জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ শহীদ আস সাবুরের বড় ভাই মো. রিজওয়ানুল ইসলাম ও শহীদ সাজ্জাদ হোসেনের (সজল) বাবা মো. খলিলুর রহমান এই জবানবন্দি দেন।
শহীদ আস সাবুরের বড় ভাইয়ের জবানবন্দি
রিজওয়ানুল ইসলাম জবানবন্দিতে বলেন, তাঁর ছোট ভাই আস সাবুর দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। গত বছরের ৫ আগস্ট আস সাবুর সকালে প্রাইভেট পড়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। তাঁকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আস সাবুর ফোন করে জানায়, বাইপাইল মোড়ের কাছে গোলাগুলি চলছে। তার সামনে একজনের মাথায় গুলি লেগেছে, একজনের কোমরে গুলি লেগেছে, একজনের পেটে গুলি লেগেছে। তিনি আস সাবুরকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু আস সাবুর বলে, সব রাস্তা বন্ধ, অনেক মানুষ জমায়েত হয়ে আছে। তারপরও সে চেষ্টা করবে বাড়ি ফিরে যাওয়ার। কিন্তু দুপুরের পর থেকে তাকে ফোন দিলেও ধরেনি এবং বিকেলের পর থেকে নম্বরটি বন্ধ দেখায়। পরদিন ৬ আগস্ট বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সমন্বয়ক ইমরান তাঁকে ফোনে জানান আস সাবুরকে পাওয়া গেছে। তিনি জিজ্ঞেস করেন, আস সাবুর কি বেঁচে আছে? তখন জানান, তাকে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
শহীদ সাজ্জাদের বাবার জবানবন্দি
শহীদ সাজ্জাদের বাবা খলিলুর রহমান জবানবন্দিতে বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট তিনি ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর স্ত্রী আশুলিয়ার একটি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। তাঁর স্ত্রী সেদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁকে ফোন দিয়ে জানান, তাঁদের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন মিছিলে গেছে। তিনি ডিউটি (দায়িত্ব পালন) শেষে সেদিন বিকেল ৫টায় ছেলের নম্বরে ফোন দিয়ে বন্ধ পান। তিনি তাঁর স্ত্রীকে ফোন দিয়ে খোঁজ নিতে বলেন। তবে সেদিন আর ছেলের সন্ধান পাননি।
পরের দিন (৬ আগস্ট) বেলা ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার দিকে একজন ছেলে খলিলুর রহমানকে ফোন দেন। সেই ফোন পেয়ে তিনিসহ পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য আশুলিয়া থানাসংলগ্ন মসজিদের সামনে যান। তখন আগুনে পোড়া লাশগুলো বের করে পলিথিনে মোড়ানো হচ্ছিল এবং লাশের সঙ্গে থাকা মালামাল চেক করছিল। তাঁর ছেলের সঙ্গে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ড (পরিচয়পত্র) ছিল। সেই দুটি কার্ড দেখে তাঁর ছেলের লাশ শনাক্ত করা হয়।
সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে গতকাল রোববার এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। আজ প্রথম দিনে দুজন সাক্ষী জবানবন্দি দিলেন। মামলায় মোট আসামি ১৬ জন। তাঁদের মধ্যে ৮ আসামি গ্রেপ্তার আছেন। তাঁরা হলেন সাভার সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আস স ব র ল ইসল ম আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
চবি ছাত্রদলের ৪২০ জনের কমিটিতে নারী মাত্র ১১
আংশিক কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রদলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ৪২০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে নারী সদস্য রয়েছেন মাত্র ১১ জন। যা শতকরা হিসেবে তাদের অংশগ্রহণের হার মাত্র ২.৬২ শতাংশ।
এর মধ্যে, সহ-সভাপতি পদে একজন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে একজন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একজন, মানবাধিকার সম্পাদক পদে একজন, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে একজন, ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক পদে একজন এবং সহ-ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক পদে দুইজন।
আরো পড়ুন:
বগুড়ায় স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী আটক
কুমিল্লায় প্রবাসীর স্ত্রীকে মারধর-তালাক, অন্যজনের সঙ্গে বিয়ে
বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে ৬০ জন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ৯২ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক ৬৩ জন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ৬৪ জন এবং সদস্য রয়েছেন ৬২ জন।
এর আগে, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে মো. আলাউদ্দিন মহসিনকে সভাপতি ও আবদুল্লাহ আল নোমানকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি পায় চবি ছাত্রদল। এরপর নানা জটিলতা ও সাংগঠনিক স্থবিরতায় ২ বছর পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি সংগঠনটি। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে ৪২০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, একটি কমিটির মেয়াদ থাকে সর্বোচ্চ ২ বছর। সেখানে চবি ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস পর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করেছে কেন্দ্রীয় সংসদ।
এদিকে, গত ১২ অক্টোবর চাকসু নির্বাচনের আগে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে চবি ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে মোহাম্মদ মামুন উর রশিদ মামুনকে সংগঠনের সদস্য পদসহ স্থায়ী বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় সংসদ। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতির পদটি শূন্য রয়েছে।
পূর্বের আংশিক কমিটিতে সভাপতি ছিলেন মো. আলাউদ্দিন মহসিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও তারা একই পদে বহাল আছেন।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী