যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের মালিকানা সংক্রান্ত চুক্তি নিয়ে ওয়াশিংটন–বেইজিং সমঝোতা
Published: 16th, September 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকের কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয়ে ওয়াশিংটন ও বেইজিং একটি ‘রূপরেখা চুক্তিতে’ সম্মত হয়েছে। গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্কট বেসেন্ট বলেন, স্পেনের মাদ্রিদে বাণিজ্য আলোচনার সময় টিকটকের মার্কিন কার্যক্রমবিষয়ক চুক্তির রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। এ চুক্তির মধ্য দিয়ে টিকটকের মার্কিন অংশের মালিকানা বিক্রির পথ সুগম হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এ চুক্তি ‘সম্পন্ন’ করবেন।
টিকটকের মূল চীনা মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হয়ে আসছে। নির্দিষ্ট সময়ে যদি তারা তাদের মার্কিন কার্যক্রমের জন্য কোনো ক্রেতা খুঁজে না পায়, তবে অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং নিষিদ্ধও হতে পারে।ট্রাম্প তাঁর মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, আলোচনাটি ‘খুব ভালোভাবে শেষ হয়েছে।’
চীনও এ রূপরেখা চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে তারা স্পষ্ট করে বলেছে, চীনা কোম্পানিগুলোর স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে কোনো সমঝোতা হবে না।
টিকটকের মূল চীনা মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হয়ে আসছে। নির্দিষ্ট সময়ে যদি তারা মার্কিন কার্যক্রমের জন্য কোনো ক্রেতা খুঁজে না পায়, তবে অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং নিষিদ্ধও হতে পারে।
গত জানুয়ারি মাসে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট একটি আইন বহাল রাখেন, যা ২০২৪ সালের এপ্রিলে পাস হয়। আইনে বলা হয়েছে, বাইটড্যান্স যদি তাদের মালিকানাধীন টিকটকের মার্কিন অংশ বিক্রি না করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপটি নিষিদ্ধ থাকবে।যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ শেষ করার উদ্দেশ্যে শুরু হওয়া আলোচনার দ্বিতীয় দিন সোমবার বেসেন্ট রূপরেখা চুক্তির ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক বন্ধের হুমকি চীনা আলোচকদের চাপের মুখে ফেলে। এতে তাঁরা টিকটকের মার্কিন অংশ বিক্রির শর্তে চীনা পণ্যে শুল্ক কমানোর দাবি থেকে সরে আসতে রাজি হয়েছেন।
বেসেন্ট আরও বলেন, চুক্তিতে নির্ধারিত বাণিজ্যিক শর্তগুলো যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষা করবে।
মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার মাদ্রিদে যাওয়া মার্কিন প্রতিনিধি দলটিতে আছেন। তিনি বলেন, চুক্তিটি শীর্ষনেতাদের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
চীনের প্রধান বাণিজ্য আলোচক লি চেংগাং বলেন, তাঁর দেশ নিজস্ব নীতিমালা ও চীনা কোম্পানিগুলোর স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো চুক্তি করবে না। যেকোনো চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার আগে তা পর্যালোচনা করবে চীনের নেতৃত্ব।
গত জানুয়ারি মাসে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট একটি আইন বহাল রাখেন, যা ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে পাস হয়েছিল। আইনে বলা হয়েছে, প্যারেন্ট কোম্পানি বাইটড্যান্স যদি তাদের মালিকানাধীন টিকটকের মার্কিন অংশ বিক্রি না করে, তবে যুক্তরাষ্ট্রে ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপটি নিষিদ্ধ থাকবে।
আরও পড়ুনট্রাম্প বললেন, টিকটক কেনার লোক খুঁজে পেয়েছেন৩০ জুন ২০২৫যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ বলেছে, টিকটক মার্কিন ব্যবহারকারীদের তথ্য পেয়ে যাচ্ছে, আর তা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করছে।
তবে বাইটড্যান্স কর্তৃপক্ষ বারবারই বলেছে, তাদের মার্কিন কার্যক্রম সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র এবং কোনো ব্যবহারকারীর তথ্য চীনা সরকারের সঙ্গে শেয়ার করা হয়নি। কোম্পানিটি যুক্তি দিয়েছে যে এ নিষেধাজ্ঞা তাদের ১ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ব্যবহারকারীর স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার লঙ্ঘন করবে।
গত জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রে আইনটি কার্যকর হওয়ার পর টিকটক এক দিনের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে ৭৫ দিনের জন্য সময়সীমা বাড়ানো হয়। এর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপটি বিক্রির সময়সীমা তিনবার বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ বেঁধে দেওয়া সময় ১৭ সেপ্টেম্বর।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের সম্ভাব্য ক্রেতা হিসেবে কয়েক ব্যক্তির নাম শোনা গেছে। তাঁরা হলেন, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওরাকলের সহ–প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন, ইউটিউবার মিস্টারবিস্ট ও ধনকুবের ফ্রাঙ্ক ম্যাককোর্ট।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপল ও গুগলের অ্যাপ স্টোরে ফিরেছে টিকটক১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট কটক র ম র ক ন অ শ য ক তর ষ ট র র ব ইটড য ন স সময়স ম র জন য র পর খ
এছাড়াও পড়ুন:
অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের একটি ধারা প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। ধারাটিতে অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা উল্লেখ রয়েছে। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন।
২০১৭ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়। আইনের ১৮ ধারায় অপরাধ আমলে নেওয়ার সময়সীমা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ধারাটি বলছে, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার দুই বছরের মধ্যে অভিযোগ করা না হলে আদালত ওই অপরাধ আমলে গ্রহণ করবে না।
ওই ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান গত মাসের শেষ দিকে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।
রুলে অপরাধের অভিযোগ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা আরোপ–সংক্রান্ত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১৮ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রুলের বিষয়টি জানিয়ে আবেদনকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষে বলে ইউনিসেফের প্রতিবেদনে এসেছে। আইনের ১৮ ধারায় সময়সীমা উল্লেখ করে দুই বছরের মধ্যে মামলা না করতে পারলে কোনো আদালত অপরাধ আমলে গ্রহণ করতে পারবে না বলা হয়েছে। অর্থাৎ বিচার করতে পারবে না। যে মেয়েটির ১১–১২ বছরে বিয়ে হয় তারপক্ষে দুই বছরের মধ্যে মামলা করা সব সময় সম্ভব না–ও হতে পারে। তখন সে নিজেই শিশু। দুই বছর পর আদালত বিচার করতে পারবে না এবং সময়সীমা আইনে বেঁধে দেওয়া সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী—এমন সব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।